সিলেট ১৭ই এপ্রিল, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা বৈশাখ, ১৪২৮ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৯:১৬ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২১
এনামুল কবির মুন্না, দোয়ারাবাজার প্রতিনিধি
‘দিনে আনি দিনে খাই। সন্তানদের মুখে তিনবেলা খাবার জুটাতে পারিনা। ছেলে-মেয়েরা খাবারের জন্য সারাক্ষণ বিরক্ত করে। এক বেলা খাবার জুটলে তিনবেলা উপোস থাকতে হয়।’ সাংবাদিকদের পেয়ে এভাবেই নিজের অসহায়ত্বের কথা বর্ণনা করছিলেন হতদরিদ্র প্রতিবন্ধী আব্দুল কাদিরের স্ত্রী ঝর্ণা বেগম। তিনি সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষীপুর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের কালাইউড়া গ্রামের বাসিন্দা। তার ৪ ছেলে ও ১ মেয়ে সন্তানের মধ্যে সবার বড় আনোয়ারা বেগম পার্শ্ববর্তী এলাকার চামতলা দাখিল মাদ্রাসায় অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে৷ সবার ছোট্ট সন্তান কাহার মিয়ার বয়স এখন ছয়মাস চলছে। কর্মক্ষম ৫ শিশু সন্তান ও শারিরীক প্রতিবন্ধী স্বামীকে নিয়ে ভাঙ্গা ঘরে মানবেতর দিন পার করছেন ঝর্ণা বেগম। পরিবারে কর্মক্ষম কেউ না থাকায় সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। স্বামীর চিকিৎসা, সন্তানদের পড়াশোনা ও সাংসারিক ব্যয় নির্বাহ করা তার একার পক্ষে এখন দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে।সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি।মাথাগোঁজার ঠাঁই একমাত্র ঘরটিও ভেঙ্গে পরেছে। জোড়াতালি দিয়ে ভাঙ্গাঘরে স্বামী-সন্তানদের নিয়ে কোনোরকমে দিন পার করছেন ঝর্ণা বেগম। ভাঙ্গা ঘরের বেড়ার ফাক ফোকর দিয়ে ঘরের ভেতরে আলো বাতাস আসা যাওয়া করে। এখন মেরামত না করলে সামনে বর্ষাকালে চালের ফুটো দিয়ে পানি ডুকবে ঘরের মেঝেতে। অভাব অনটনের কারণে ঘর মেরামত করতে পারছেন না তিনি। ঝর্ণা বেগম জানান, ‘যেখানে সন্তানদের মুখে তিনবেলা খাবার জুটাতে পারিনা সেখানে ঘর মেরামতের টাকা পাব কোথায়? থাকার একটা ভালো ঘর পেলে বাকি জীবনটুকু খেয়ে না খেয়ে অন্তত স্বামী সন্তানদের নিয়ে কাটিয়ে দিতে পারতাম। এলাকায় আত্মীয় স্বজন বলতে কেউ নেই। কারো কাছে হাত পাতার জায়গাও নেই আমার! স্বামী-সন্তানদের নিয়ে খুব কষ্টে আছি।’ তার স্বামী আব্দুল কাদির জানান, আমি জন্মগতভাবে শারীরিক প্রতিবন্ধী। হাঁটাচলা করতে পারিনা। স্ত্রী-সন্তানদের কষ্ট দেখে চোখে পানি আসে। কিছুই করতে পারছিনা তাদের জন্য। আল্লাহ ছাড়া আমার আর কেউ নেই। ৬ মাস পরপর প্রতিবন্ধী ভাতা হিসেবে সামান্য যে কয় টাকা পাই তা দিয়ে চিকিৎসার খরচ জুটেনা। টাকার অভাবে ঘরটাও মেরামত করতে পারছিনা। সবসময় আতঙ্কে থাকি কখন জানি মাথার ওপর ঘরটা ভেঙ্গে পড়ে! প্রতিবেশী আবুল হোসেন ও আব্দুল আওয়াল জানান, ঝর্ণা বেগম ও তার স্বামী-সন্তানরা খুব কষ্টে আছেন। তাদের আর্থিক অবস্থা শোচনীয়। সরকারি ভাবে এই পরিবারটিকে একটি থাকার ঘরের ব্যবস্থা করে দিতে পারলে তারা অন্তত নিশ্চিন্তে থাকতে পারতো। পরিবারটির পাশে প্রশাসনসহ সমাজের সকল সুহৃদয়বান ব্যক্তিদের এগিয়ে আসার অনুরোধ জানাই।
সম্পাদক ও প্রকাশক : এড. আফছর আহমদ
নির্বাহী সম্পাদক : নাজমুল কবীর পাভেল
ইমেইল: sylnewsbd@gmail.com, pavel.syl@gmail.com
ফেইসবুক পেইজ : Syl News BD
মোবাইলঃ 01712-540420
শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান।
Design and developed by ওয়েব নেষ্ট বিডি