আমেরিকা-রাশিয়া-চীন, বিশ্ব রাজনীতির ‘বারমুডা ট্রায়াঙ্গলে’ দিশাহারা ভারত!

প্রকাশিত: ১০:৩৫ পূর্বাহ্ণ, জুন ১৯, ২০২১

আমেরিকা-রাশিয়া-চীন, বিশ্ব রাজনীতির ‘বারমুডা ট্রায়াঙ্গলে’ দিশাহারা ভারত!

অনলাইন ডেস্ক

 

এক ত্রিমুখী ধাঁধার মধ্যে পড়েছে ভারতের পররাষ্ট্রনীতি। যাকে কূটনৈতিক ত্রিভুজ বলেই অভিহিত করছেন বিশেষজ্ঞরা। সম্প্রতি ইউরোপ এবং আমেরিকার বেশ কয়েকটি বৈঠকের পর এই সঙ্কটের প্রাসঙ্গিকতা আরও বেশি করে টের পাচ্ছে ভারত।

আমেরিকা-রাশিয়া-চীন। এই তিন শক্তিধর রাষ্ট্রের পারস্পরিক সম্পর্কের ওঠাপড়ার সঙ্গে জড়িয়ে যাচ্ছে ভারতের স্বার্থ। কূটনৈতিক সূত্রে খবর— কৌশলগত, বাণিজ্যিক, অর্থনৈতিক এবং প্রতিরক্ষা— সব ক্ষেত্রেই এই পারস্পরিক সম্পর্কের ছায়া পড়ছে।
প্রথমত, আমেরিকা-রাশিয়া সম্পর্ক অথৈ পানিতে। সম্প্রতি সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠকেও সে বরফ গলার সম্ভাবনা দেখা যায়নি। দ্বিতীয়ত, ইউরোপ যত রাশিয়াকে জঙ্গি সামরিক রাষ্ট্র হিসেবে দাগিয়ে দিতে চাইছে, মস্কো ততোই কাছে ঘেঁষছে বেইজিংয়ের। তৃতীয়ত, ওয়াশিংটনের সঙ্গে চীন এবং রাশিয়ার সম্পর্ক ক্রমশ খারাপ হচ্ছে।

এই বিচিত্র পরিস্থিতির কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে ভারত। সাম্প্রতিক জি-৭, আমেরিকা-ইইউ এবং আমেরিকা-ন্যাটো বৈঠক থেকে একটি তথ্য সামনে আসছে। তাহল, পশ্চিমের চীনবিরোধী সমস্ত পরিকল্পনায় সঙ্গী হিসেবে ভারতকে রাখা হচ্ছে। কোয়াড যার একটা উদাহরণ। কিন্তু এটাও নয়াদিল্লিকে মাপতে হচ্ছে, আমেরিকার প্রবল চীন-বিরোধিতার জাহাজে চড়াটা কতটা বাস্তবোচিত হবে। পাঁচগুণ শক্তিধর প্রতিবেশী চীনের সঙ্গে প্রবল সঙ্কট তৈরি হলে ওয়াশিংটনের ওপর কতটা নির্ভর করা যাবে, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয়ে রয়েছে সাউথ ব্লক।

বরং আমেরিকার যুদ্ধে নিজেরা শামিল না হয়ে একটি চাঁছাছোলা চীন-নীতি যদি ভারত নিজে তৈরি করতে পারে, সেটা দ্বিপাক্ষিক এবং আঞ্চলিক স্তরে ভারতের জন্য ভাল।

আবার অস্ত্রসরঞ্জাম আমদানি এবং প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি সমন্বয়ের প্রশ্নে রাশিয়া ভারতের প্রাচীনতম মিত্র। কিন্তু ভারত-আমেরিকার ঘনিষ্ঠতা বাড়তে দেখে সেই রাশিয়াও খুশি নয়। আমেরিকার নেতৃত্বাধীন কোয়াড-এর প্রকাশ্য সমালোচনা করে মস্কো পৃথকভাবে ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের কৌশল রচনা করতে চায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, একদিকে আমেরিকার নেতৃত্বাধীন পশ্চিমি বিশ্ব এবং অন্যদিকে চীন-রাশিয়া— আসন্ন পররাষ্ট্রনীতি যদি এই স্পষ্ট দু’ভাগ হয়ে যায়, ভারতের কূটনৈতিক দর কষাকষির সম্ভাবনাও সীমিত হয়ে পড়বে। এই পরিস্থিতির ফায়দা তুলতে চাইবে চীন এবং পাকিস্তান।

ভারতের কাছে সব চেয়ে সুবিধাজনক পরিস্থিতি তৈরি হবে যদি আমেরিকা এবং রাশিয়ার মধ্যে কিছুটা বোঝাপড়া তৈরি হয়। সে ক্ষেত্রে রাশিয়ার চীন-নির্ভরতা কমবে। ওয়াশিংটনের পক্ষেও রাশিয়া-চীনের যৌথ শত্রুতা কাম্য নয়। বরং শুধুমাত্র চীনের দিকেই নিজেদের নিশানা স্থির রাখলে তা বেশি কার্যকরী হবে। কারণ রাশিয়া এখনও একা আমেরিকাকে চাপে ফেলার মতো বড় শক্তি নয়।

তবে কূটনৈতিক সূত্রের মতে, বিভিন্ন কারণে ভারত চাইলেই রাতারাতি আমেরিকা-রাশিয়ার করমর্দন ঘটছে না। ফলে এই চাপ আপাতত বহালই থাকছে ভারতের ওপর। সূত্র: আনন্দবাজার

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ