কক্সবাজারে লাখো পর্যটক, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ে জরিমানা

প্রকাশিত: ১০:০০ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৮, ২০২২

কক্সবাজারে লাখো পর্যটক, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ে জরিমানা

অনলাইন ডেস্ক :: পর্যটন মৌসুমের শুরু এবং টানা ছুটিতে স্বাস্থ্য শহর কক্সবাজারে ভীড় করেছেন লাখো পর্যটক। লাখো পর্যটকের উপস্থিত হওয়ার সুযোগে হোটেল-মোটেল ও রেস্টুরেন্ট গুলোতে শুরু হয়েছে গলাকাটা বাণিজ্য। যার যেমন ইচ্ছে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছে।

হোটেলে কক্ষ ভাড়ার তালিকা দৃশ্যমান থাকার নিয়ম থাকলেও তা না থাকায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। একই সঙ্গে রেস্তোরা, বার্মিজ পণ্যের দোকানসহ যানবাহনেও পর্যটকরা শিকার হচ্ছে হয়রানির। এ কারণে আগামীতে কক্সবাজার পর্যটন শিল্পে বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এ অবস্থায় হোটেল-মোটেলে পর্যটকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত কক্ষ ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠায় অভিযানে নেমেছে জেলা প্রশাসন। পর্যটকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত হোটেল ভাড়া নেয়ার অভিযোগে একটি হোটেলকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমান আদালত।

গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুম বিল্লাহর ভ্রাম্যমাণ আদালত এ জরিমানা করেন।

কক্সবাজারে চলতি পর্যটন মৌসুম শুরু হয় বিশ্ব পর্যটন দিবসকে ঘিরে। গত ৩ অক্টোবর কক্সবাজার জেলা প্রশাসন আয়োজিত ৭ দিনব্যাপী পর্যটন মেলা ও বিচ কার্নিভালের সমাপ্তি ঘটে। মেলা উপলক্ষে হোটেল-মোটেল ও রেস্টুরেন্ট সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিশেষ ছাড় ঘোষণা দিলেও তা মানেননি পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

মেলা শেষ হওয়ার সাথে সাথে পর্যটকে ভরা মৌসুমে আবাসিক হোটেল ও রেস্তোঁরাগুলোতে গলাকাটা বাণিজ্য শুরু করে। আবাসিক হোটেলগুলোতে রুম ভাড়ার তালিকা টানানোর নিয়ম থাকলেও অধিকাংশ হোটেল তা মানছে না। তারকামানের হোটেলের পাশাপাশি নিম্নমানের হোটেল গুলোও রুমের ভাড়া বাড়িয়েছে যেনতেনভাবে। হোটেল মোটেল জোনের অধিকাংশ হোটেল ৫শ’ থেকে এক হাজার টাকা মূল্যের রুমের ভাড়া বৃদ্ধি করে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা এবং ২ থেকে ৩ হাজার টাকা মূল্যের রুম ভাড়া ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠে। কক্সবাজারে পর্যটকের ভীড় বাড়লেই হোটেল-মোটেলে গলাকাটা বাণিজ্য যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে।

অতীতের ন্যায় টানা কয়েকদিনের সরকারি ছুটির সুযোগে লাখো পর্যটকের ভীড় দেখে সাগরপাড়ের বেশ কিছু হোটেল-মোটেলের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত কক্ষ ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠে। এর প্রেক্ষিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা শুরু করেছে।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম বিল্লাহ জানান, যারা হোটেল কক্ষের ভাড়া ও রেস্টুরেন্টে অতিরিক্ত দাম নিয়ে পর্যটন খাতকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে তাদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতিমধ্যে কক্ষ ভাড়ার তালিকা প্রদর্শন না করায় একটি হোটেল ম্যানেজারকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ এর সংশ্লিষ্ট ধারায় ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সেই সাথে সকল হোটেলের কক্ষ ভাড়ার তালিকা দৃশ্যমান স্থানে রাখার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। অভিযান অব্যাহত থাকবে।

পর্যটকরা জানান, পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব নিয়ে কক্সবাজারে আনন্দ করতে এসেছি। খুব মজা করছি। কিন্তু হোটেল কক্ষ থেকে শুরু করে রেস্তোরা, বার্মিজ পণ্যের দোকান ও যানবাহনে আদায় করা হচ্ছে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া। বলতে গেলে বেপরোয়া পর্যটন ব্যবসায়ীরা। এসব অনিয়ম নিয়ন্ত্রণ করা খুবই জরুরি। অন্যথায় কক্সবাজার পর্যটন খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলেও মন্তব্য করেন ভুক্তভোগী পর্যটকরা।

হোটেল মোটেল ও গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম সিকদার জানান, হোটেল কক্ষের ভাড়া অতিরিক্ত না নেয়ার জন্য আগে থেকে বলা আছে। কিছু হোটেলের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের যে অভিযোগ উঠেছে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

তিনি জানান, কক্সবাজারে ৫শত ২৬টি হোটেল মোটেল রিসোর্ট গেস্ট হাউস ও কটেজ রয়েছে। যেখানে প্রতিদিন রাত্রিযাপন করতে পারে ১ লাখ ২০ হাজারের মতো পর্যটক।

বিডি-প্রতিদিন

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ