করোনার টিকা বাজারে আসার আগেই বেচাকেনা শেষ

প্রকাশিত: ১১:৪৭ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২০

করোনার টিকা বাজারে আসার আগেই বেচাকেনা শেষ

অনলাইন ডেস্ক :

দিনের পর দিন বাড়ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। লম্বা হচ্ছে মৃত্যুর সারি। মহামারীর এমন ভয়ংকর অবস্থার মধ্যেই ভ্যাকসিন বা টিকা পাওয়ার দীর্ঘ অপেক্ষার প্রহর কমে আসার সুসংবাদও অতি নিকটে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আমেরিকানদের টিকা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

কিন্তু সবচেয়ে বড় দুঃসংবাদ হয়ে আসা তথ্য হল- বিশ্বের মাত্র ১৩ শতাংশ মানুষের প্রতিনিধিত্ব করা কয়েকটি ধনী দেশ অর্ধেকের বেশি প্রতিশ্রুত টিকা কিনে রেখেছে। বাকি টিকা উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশগুলোর জন্য। এয়ারফিনিটির ডাটা বিশ্লেষণ করে দাতব্য সংস্থা অক্সফামের এক রিপোর্টে উঠে এসেছে এমন তথ্য। এএফপি।

বৃহস্পতিবার অক্সফামের তথ্য মতে, বাজারের আসার দৌড়ে এগিয়ে থাকা পাঁচটি টিকা কোম্পানি- ফাইজার, সিনোভ্যাক, মডার্না, অ্যাস্ট্রাজেঙ্কা গামালিয়া বা স্পুটনিকের উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে ৫শ’ ৯০ কোটি ডোজ। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত ৫শ’ ৫০ কোটি ডোজের উৎপাদন চুক্তি হয়েছে, যার মধ্যে ২শ’ ৭০ কোটি ডোজ বা মোট টিকার ৫১ শতাংশই কিনে রেখেছে কয়েকটি উন্নত দেশ। এই দেশগুলোর মধ্যে আছে- যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন, অস্ট্রেলিয়া, হংকং, জাপান, ম্যাকাউ, সুইজারল্যান্ড ও ইসরাইল।

বাকি ২শ’ ৬০ কোটি টিকা কিনে বা বুকিং দিয়ে রেখেছে উন্নয়নশীল দেশগুলো। এর মধ্যে আছে বাংলাদেশ, ভারত, চীন, ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া এবং মেক্সিকো।

বর্তমানে ট্রায়ালের শেষ স্তরে থাকা টিকা ও মেডিসিন উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর চুক্তি পর্যালোচনা করে অক্সফামের বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘জীবন রক্ষাকারী ভ্যাকসিনটি পাওয়ার ক্ষেত্রে আপনি কোথায় বসবাস করছেন বা আপনার কত টাকা আছে সেটির ওপর নির্ভরতা থাকা উচিত নয়। নিরাপদ ও কার্যকর একটি ভ্যাকসিন উৎপাদন ও অনুমোদন গুরুত্বপূর্ণ, একই সঙ্গে সমান গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে যেখানে কোভিড-১৯ আছে সেখানেই ভ্যাকসিনটি সহজলভ্য ও সহনীয় দামে সরবরাহ নিশ্চিত করা।

করোনাভাইরাসের টিকা বাজারে এলেও দরিদ্র দেশগুলো সহজে তা পাবে কিনা, সেটি নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ছিল আগে থেকেই। বিল গেটসসহ অনেকে সবার টিকার পাওয়ার অধিকারের ক্ষেত্রে সোচ্চার ছিলেন। কিন্তু অক্সফামের তথ্য বলছে, টিকা নিয়ে রাজনীতি হবে এবং প্রয়োজন না হলেও ধনী দেশগুলোর আগাম কিনে রাখার কারণে দরিদ্র দেশগুলোর টিকা পেতে ও আক্রান্ত মানুষকে প্রয়োজনীয় টিকা দিতে সমস্যায় পড়তে হবে।

উদ্বেগের বিষয়, মডার্না করদাতাদের অর্থ থেকে ২৬০ কোটি ডলার পেয়েছে। ধারণা করা হয়েছিল এটি সবার জন্য টিকা সহজলভ্য করে দেবে; কিন্তু সংস্থাটি লাভের জন্য ধনী দেশগুলো কাছে টিকার একটি অংশ বিক্রি করে দিয়েছে বলে জানতে পেরেছে অক্সফাম।

পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে অক্সফামসহ দাতব্য সংস্থাগুলো করোনার টিকাকে ‘পিপলস ভ্যাকসিন’ হিসেবে বিনামূল্যে বিতরণের আহ্বান জানিয়েছে। আর এটি সম্ভব হবে ভ্যাকসিন কোম্পানিগুলো যদি তাদের প্যাটেন্ট উন্মুক্ত করে দিয়ে টিকা উৎপাদনকে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়। ইউনিসেফ অবশ্য দরিদ্র দেশগুলোর দিকে এগিয়ে আসছে। নিন্ম ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে ভ্যাকসিন সরবরাহ নিশ্চিত করার কাজে সংস্থাটি নেতৃত্ব দেবে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ