পাঠ্যবই নিয়ে গুজব রটানো হচ্ছে : শিক্ষামন্ত্রী

প্রকাশিত: ৬:২৬ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৩০, ২০২৩

পাঠ্যবই নিয়ে গুজব রটানো হচ্ছে : শিক্ষামন্ত্রী

পাঠ্যবই নিয়ে গুজব রটানো হচ্ছে : শিক্ষামন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাঠ্য বইয়ে ভুল নিয়ে গুজব রটানো হচ্ছে। যার প্রায় কথাই মিথ্যা। তবে বইয়ে কিছুটা ভুল আছে। সেটা সংশোধনে কাজ করছি।

সোমবার দুপুরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে স্বর্ণপদক প্রদান অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা যখনই ভুলগুলো সম্পর্কে অবগত হচ্ছি, তখনই সেটা সংশোধনে কাজ করছি। তবে যা বইয়ে নেই, সেটা নিয়েও বিভিন্নভাবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। সেখানে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত কিংবা সম্প্রতিকতাকে উস্কে দেয়ার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তাই গুজবে কান না দেয়ার আহ্বান জানান মন্ত্রী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম ও অধ্যাপক হুমায়ুন কবির এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক অবায়দুর রহমান প্রামানিক।

এই সরকারের আমলে পঠনপাঠন পদ্ধতি প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শুধুমাত্র জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা এই যুগে অচল। যুগের সাথে চলতে হলে তাকে দক্ষ হয়েও গড়ে উঠতে হবে। আমরা এমন একটি শিক্ষাপদ্ধিত নিয়ে কাজ করছি, যেখানে একজন শিক্ষার্থী হবে সৃজনশীল, যোগাযোগে দক্ষ, প্রযুক্তির জ্ঞানে দক্ষ, সহমর্মিতাশীল, মানবিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী, সহিষ্ণু ও অসাম্প্রদায়িক চিন্তায় বিশ্বাসী। তাছাড়া এই যুগে তারা অচল প্রমাণিত হবে। আমরা সোনার বাংলা গড়তে চাই। কিন্তু এই জনশক্তি দিয়ে সেটা সম্ভব নয়। আমরা চাই, শিক্ষার্থীরা যা পড়ছে, সেটা তারা জেনে পড়ুক। সেই অনুযায়ী তারা কাজ করুক এবং হাতে-কলমে দক্ষ হয়ে উঠুক। এই শিক্ষা কর্মসূচি নিয়ে আমরা কাজ করছি। কেননা সোনার মানুষ মানে অচল মানুষ নয়। সোনার মানুষ হবে মানবিক মানুষ।

সমালোচকদের জবাবে তিনি বলেন, আমরা উন্নত শিক্ষা কার্যক্রমে প্রায় ষোলআনা এগিয়ে গেছি। কিন্তু সমালোচকেরা সেটা বাদ দিয়ে ছোট ছোট ভুলগুলো নিয়ে প্রতিনিয়ত বিভ্রান্তি ছড়ায়। আমাদের পঠনপাঠন ও মূল্যায়ন পদ্ধতিতে যে বিশাল পরিবর্তন হয়েছে, সেটা নিয়ে তাদের কোন কথা নেই। তাই জাতিকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানান শিক্ষামন্ত্রী।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক মাস্টারপ্ল্যান থাকবে। সেখানে শিক্ষার্থীরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা মান ও সুযোগ-সুবিধাসহ বিভিন্ন দিক জানতে পারবে। তবে সেই দিক দিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে। কেননা তারা সেটা সবার আগেই করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় ভোগান্তি কমানোর বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ভর্তি ক্ষেত্রে অযথা ভোগান্তি দূর করতে গুচ্ছ পদ্ধতির কথা চালুর পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় এটাতে যুক্ত হয়নি। নতুন পদ্ধতি চালু হলে শুরুতে কিছু ত্রুটি থাকে। তবে ধাপে ধাপে সেটা সমাধানযোগ্য। শুধু এটাই নয়। আমরা একমুখী শিক্ষাপদ্ধতি চালু করার চেষ্টা করছি। যেটা বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন। কিন্তু তাকে হত্যার পর সেটা বহুমুখী রূপ নেয়। ফলে সবক্ষেত্রে আমরা সেটার ভালো সুফল পাচ্ছি না।

ভর্তি প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, বিশ্বে প্রায় দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর ভাষা জ্ঞান, ভনিতার জ্ঞান ও সাধারণ জ্ঞান যাচাই করেই মূল্যায়ন করা হয়। ফলে একটি মাত্র পরীক্ষা দিয়ে সকল শিক্ষার্থীই তাদের যোগ্যতা অনুসারে ভর্তির সুযোগ পায়। তাই গুচ্ছ পদ্ধতি চালু হয়েছে। এখান থেকে ধাপে ধাপে একমুখী শিক্ষা ব্যবস্থার দিকে যেতে হবে। তাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কেও গুচ্ছ পদ্ধতির আওতায় আসার আহ্বান জানান মন্ত্রী।

উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীরাই পরবর্তীতে শিক্ষকতা পেশায় আসেন। তাই প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের মতো উচ্চপর্যায়েও খুব শিগগিরই ইউজিসির মাধ্যমে প্রশিক্ষণ পদ্ধতি চালু করতে যাচ্ছি। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি বিষয়ে পাশ করে বেরিয়ে যাওয়ার ৫ বছর পর সেটা প্রাসঙ্গিক নাও থাকতে পারে। কেননা প্রতিনিয়ত বিশ্ব বদলাচ্ছে। কিন্তু সেই অবস্থায় তারা নিজের অবস্থানে থেকে যাতে নিজেকে দক্ষ ও সময়োপযোগী করতে পারে সেই ব্যবস্থা আমরা করছি। সেই লক্ষ্যে আমরা একটি মাস্টার্সপ্লান তৈরি করেছি। সেখানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কেও যুক্ত করছি। যাতে সামগ্রিক প্রচেষ্টায় দেশে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি হয়। এমনকি প্রয়োজন অনুসারে ছোট ছোট কোর্স করে শিক্ষার্থীরা যাতে দক্ষতার বৃদ্ধি করতে পারে সেই জন্য কাজ করছি।

অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের ১০৩ জন কৃতি শিক্ষার্থীকে স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়। এদের মধ্যে অগ্রণী ব্যাংকের ৯৬ জন পাচ্ছেন ‘বঙ্গবন্ধু স্বর্ণপদক’, দর্শন বিভাগের ৫ জন ‘ড. মমতাজ উদ্দিন আহমদ স্বর্ণপদক’ এবং চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুষদের ২ জন পাচ্ছেন ‘ডা. এ কে খান স্বর্ণপদক’।

বিডি প্রতিদিন

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ