বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি, চরম দুর্ভোগে মানুষ

প্রকাশিত: ৩:৫৫ অপরাহ্ণ, মে ২০, ২০২২

বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি, চরম দুর্ভোগে মানুষ

শান্তিগঞ্জ প্রতিনিধি :: একের পর এক বিপদের সম্মুখীন হচ্ছেন হাওরপাড়ের মানুষেরা। বিপদ যেন আঁকড়ে ধরেছে তাদের। ফসলের ক্ষতির পর এবার ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে শান্তিগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। রাস্থাঘাট ও ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে নাকাল উপজেলার পানিবন্দি পরিবাগুলো।

পানি বৃদ্ধি চলমান থাকায় প্রতিনিয়তই পানিতে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। পাশাপাশি উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পানি বন্ধি আছে। বন্যার কারণে ঘর ছাড়া হয়ে পড়েছে অনেক পরিবার। এমন পরিস্থিতিতে দেখা দিতে পারে বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্যের চরম সংকট।

বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় অনেকে ছুটছে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে। অসহায়ত্বে কাঁটছে তাদের জীবন। পানিবন্দী মানুষেরা হাঁস-মুরগী, গরু-ছাগল নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। নলকুপ, গোচারনভুমি পানিতে প্লাবিত হওয়ায় গোখাদ্য নিয়েও দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা।

শুক্রবার (২০ মে) সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার নিম্নাঞ্চলের ঘরবাড়ি পাহাড়ি ঢলের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী পরিবারের মানুষরা কেউ কেউ ধান এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরিয়ে নেয়ার কাজে ব্যস্থ আছেন। পরিবার পরিজন নিয়ে নিরাপদ জায়গায় যাওয়ার চেষ্টাও রয়েছে প্রবল। গরু-ছাগল নিয়েও তাদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি চলমান থাকায় চারিদিকে পানি থই থই করছে। এছাড়াও রাস্তাঘাট ডুবে গিয়ে চলাচলে বিগ্ন ঘটছে মানুষের। ঢলের পানিতে উপজেলার ১৫টির মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়েছে। এমন পরিস্থিতি চরম দুর্ভোগে আছেন উপজেলার মানুষ। এভাবে বৃষ্টি চলমান থাকলে চরম বন্যা পরিস্থিতি মুখোমুখি হবেন পুরো উপজেলার মানুষ।

উপজেলার ডুংরিয়া গ্রামের সমিনুর বলেন, আমাদের গ্রামের প্রধান রাস্থাগুলো বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। আমাদের রাস্থায় হাটু পানি। চলাচলের একমাত্র বাহন এখন নৌকা। চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছি আমরা। আমরার দুর্গতির কথা কইয়া আর কিতা অইত। বাড়ি পানির তলে গেছেগি। ফুরুত্তাইনতেরে লইয়া বিপদো আছি। আল্লায় জানইন ইবার কপালো কিতা আছে। আক্ষেপ নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন কাহার মিয়া নামে আরেক জন।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সেলিম খান বলেন, এ পর্যন্ত উপজেলায় ১৫ টি বিদ্যালয় পানিবন্দি হয়েছে। আমরা সার্বক্ষণিক তদারকিতে আছি। তবে এখনো কোন বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ হয়নি। পরিস্থিতি বিবেচনায় পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। জয়কলস ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাছিত সুজন বলেন, ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর রাখছি। পানিবন্দী মানুষের তালিকা করে উপজেলায় পাঠাবো৷

উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রভাষক নূর হোসেন বলেন, সিলেট-সুনামগঞ্জের বন্যা চলাকালে মানুষ কিছুটা স্বস্তিতে থাকলেও আজ পাহাড়ি ঢলের পানি বৃদ্ধি পেয়ে শান্তিগঞ্জের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে ভয়াবহ বন্যার আশংকা আছে। আমরা ইতিমধ্যেই চাহিদা পাঠিয়েছি। যত দ্রুত সম্ভব পানিবন্দি মানুষের মধ্যে সরকারি সহায়তা প্রদান করা হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনোয়ার উজ জামান সিলেটভিউ’কে বলেন, ইতিমধ্যেই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বারদের পানি বন্দি মানুষের তালিকা পাঠানোর কথা বলা হয়েছে। উপজেলার বন্যাশ্রয় কেন্দ্রগুলোও প্রস্তুত করা হচ্ছে৷ এবং যে সকল মানুষেরা পানিবন্দী হয়েছেন তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। তারা আশ্রয়কেন্দ্রে গেলেই আমরা ত্রাণ বিতরণ শুরু করব।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ