ভোলাগঞ্জে ব্যবসায়ী শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সমাবেশে বক্তারা মানবিক বিপর্যয় এড়াতে পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার আহবান

প্রকাশিত: ৭:০৩ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১২, ২০২০

ভোলাগঞ্জে ব্যবসায়ী শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সমাবেশে বক্তারা মানবিক বিপর্যয় এড়াতে পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার আহবান

 

নিজস্ব প্রতিনিধি ::
সিলেটের পাথর কোয়ারি সমূহ খুলে দিয়ে ১০ লক্ষাধিক শ্রমিক-ব্যবসায়ী এবং তাদের পরিজনদের রক্ষার দাবিতে এক বিরাট বিক্ষোভ সমাবেশ গতকাল বৃহস্পতিবার সিলেটের ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারির সন্নিকটে পাড়–য়া এলাকায় অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা যুগ যুগ ধরে পাথর আহরণের মাধ্যমে লাখ মানুষের কর্মসংস্থান পাথর কোয়ারি বন্ধের ফলে সৃষ্ট ভয়াবহ সংকটের কথা উল্লেখ করে বলেন সিলেটের পাথর কোয়ারিতে পাথর আহরণ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বংশ পরম্পরায় জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। পাথরকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা হাজারও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং পাথর পরিবহনে সম্পৃক্ত লাখ পরিবহন শ্রমিক-মালিক তাদের জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। সিলেটের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি পাথর আহরণ এবং বিপণন হঠাৎ করে বন্ধ করে দেয়ায় এক বছর ধরে সিলেটের উত্তরাঞ্চলের বৃহৎ জনগোষ্ঠী অবর্ণনীয় দুঃখ কষ্টে নিপতিত হয়েছে। শ্রমজীবি লোকজন পাথর আহরণ করতে না পেরে অনাহারে অর্ধাহারে জীবন-যাপন করছে। ব্যাংক ঋণে জর্জরিত ব্যবসায়ীরা দেউলিয়া হয়ে ফেরারি জীবন-যাপন করছে। সিলেটের প্রান্তিক জনপদে দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি। মানবিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন লাখ মানুষ। বক্তারা বলেন, একটি প্রভাবশালী অপশক্তি কর্তৃক দেশের মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রার অপচয়ের মাধ্যমে নি¤œ মানের পাথর আমদানীর স্বার্থে সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলকে ভুল তথ্য দিয়ে সিলেটের পাথর কোয়ারি সমূহ বন্ধ করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। দেশের খনিসমূহে পর্যাপ্ত পাথর মজুদ থাকা সত্ত্বেও লাখ মানুষকে জীবিকা বঞ্চিত করে মহল বিশেষ পাথর আমদানীর মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় অর্থনীতির ক্ষতি সাধনে লিপ্ত রয়েছে। বক্তারা বলেন, পরিবেশ বিনষ্টের কথা বলে পাথর কোয়ারি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অথচ এটা সতঃসিদ্ধ সত্য যে, সনাতন পদ্ধতিতে পাথর আহরণ করলে পরিবেশের নির্মলতা অক্ষুন্ন থাকে। মিথ্যা অজুহাত দাঁড় করিয়ে সিলেটের পাথর কোয়ারি বন্ধ করে দিয়ে এ অঞ্চলের মানুষকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে।
সভায় সিলেটের ১০ লক্ষাধিক পাথর সংশ্লিষ্ট জীবিকা নির্বাহকারী ও তাদের পরিজনদের বাঁচাতে অবিলম্বে পাথর আহরণের সুযোগ প্রদানের দাবি জানানো হয়। ন্যায্য এ দাবি আদায়ের স্বার্থে প্রয়োজনে সিলেটে অবরোধ-ধর্মঘটের মত কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে সভায় হুশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়। সভায় সিলেট জেলা বাস-মিনিবাস মালিক-শ্রমিক সমিতির নেতৃবৃন্দ এবং অটোরিক্সা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ অত্রাঞ্চলের মানুষের ন্যায্য আন্দোলনে একাত্মতা পোষণ করেন।
বৃহত্তর সিলেট পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক আব্দুল জলিল। সংগঠনের সদস্য সচিব নুরুল আমিনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট বিভাগীয় ট্রাক মালিক গ্রুপের সভাপতি গোলাম হাদী ছয়ফুল। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আবু সরকার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আমির উদ্দিন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কোম্পানীগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি ও ব্যবসায়ী নেতা শাব্বির আহমদ। বক্তব্য রাখেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী আবুল হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক শওকত আলী বাবুল, কোম্পানীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবিদুর রহমান, ব্যবসায়ী নেতা মোঃ আলী, আংগুর মিয়া, আব্দুল হেকিম, আমিনুল ইসলাম, হোসেন নুর, গিয়াস উদ্দিন, বাবুল মিয়া, আব্দুল আজিদ, বিমানবন্দর থানা স্টোন ক্রাশার মালিক ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজী নাসির উদ্দিন, সিলেট জেলা অটোরিক্সা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জাকারিয়া, সাধারণ সম্পাদক আজাদুর রহমান, সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সহ সভাপতি রুনু মিয়া, যুগ্ম সম্পাদক আইনুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ শামসুদ্দিন মানিক, সুনামগঞ্জ জেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নুর উদ্দিন, বারকি শ্রমিক সমবায় সমিতি লিমিটেড এর সভাপতি মজনু মিয়া, সাধারণ সম্পাদক আউয়াল মিয়া, পাথর উত্তোলন ও বহনকারী শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, ফয়জুর রহমান, প্রমুখ।

 

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ