মফস্বল সংবাদকর্মীদের কাছে নুরুল ইসলাম ছিলেন একজন প্রিয় ব্যক্তিত্ব

প্রকাশিত: ১১:৪৭ অপরাহ্ণ, জুলাই ২১, ২০২০

মফস্বল সংবাদকর্মীদের কাছে নুরুল ইসলাম ছিলেন একজন প্রিয় ব্যক্তিত্ব

আলাউদ্দিন আহমেদ :;

দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগ্রুপ এবং দৈনিক যুগান্তর ও যমুনা টিভির প্রতিষ্ঠাতা সদ্য প্রয়াত বীরমুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম ছিলেন শেকড়ে কর্মরত অনেক সাংবাদিকের কাছে শ্রদ্ধাভাজন এক ব্যক্তিত্ব। শুধু যুগান্তর-যমুনা টিভির নয় তার জনপ্রিয়তা ছিল মাঠ পর্যায়ে প্রকাশিত অনেক আঞ্চলিক ও জাতীয় পত্রিকার সংবাদকর্মীদের মধ্যেও।

যুগান্তর প্রকাশনার শুরু থেকে আমার সুযোগ হয়েছে এই পত্রিকার একজন প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করার। আমার মনে আছে প্রথমদিকে ঢাকার অফিসে প্রতিনিধি সম্মেলনে তিনি বক্তব্যে বলেছিলেন, ‘যুগান্তর তাই বলবে যা অন্যরা বলেনি’।

টিভি চ্যানেল সম্পর্কে তিনি বলেছিলেন, ‘মুখে ক্রিম মাখলেও যে ক্যান্সার হতে পারে সেইটা আমরা দেখাতে চাই।’ এটা তিনি বলেছিলেন অসততা, ভেজাল, দুর্নীতি ইত্যাদি অপকর্মের বিরুদ্ধে মানুষের মনে জাগরণ তৈরি করতে যুগান্তর আর যমুনা টিভি ভূমিকা রাখবে সেই দৃঢ়তায়।

যুগান্তর ও যমুনা টিভি সেই দায়িত্ব শুরু থেকেই পালন করে যাচ্ছে। অনেক বড় বড় আসনের দুর্নীতিবাজদের মুখোশ উন্মোচনে এ দুটি মিডিয়া সত্যিকার বিবেচনায় যথাযথ দায়িত্ব পালন করে চলেছে। প্রথমেই সারা দেশে যুগান্তরের প্রতিনিধি বাছাই ছিল দূরদৃষ্টির পরিচায়ক। অভিজ্ঞদের নেয়া হয়েছিল। বেশিজন এসেছিলেন অন্য পত্রিকা থেকে। প্রতিনিধি সমাবেশের আহ্বান ও দিকনির্দেশনা নিয়ে শেকড়ের প্রতিনিধিরা কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন যা এখনও চলমান আছে।

চলমান বৈশ্বিক সমস্যা কোভিড-১৯-এর প্রভাবে দেশের মিডিয়া সেক্টরে অনেক ওলট-পালট হলেও যুগান্তর-যমুনায় তেমন কোনো নেগেটিভ পরিবর্তন হতে দেননি স্বপ্নদ্রষ্টা শ্রদ্ধাভাজন প্রয়াত নুরুল ইসলাম। আমরা এ জন্য শুধু কৃতজ্ঞই নয়; বরঞ্চ অন্য মিডিয়া হাউজের জন্যও এটা একটি ভালো উদাহরণ।

সার্বিক ক্ষেত্রে তার গড়ে তোলা ৪১টি প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ কর্মরত রয়েছেন। দেশের অর্থনীতিতে এটা এক শক্তি হিসেবে সহযোগিতা করেছে। তিনি বিদেশে ব্যবসার চিন্তা করেননি, অর্থও পাচার করেননি। তিনি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দেশের প্রতি যে দায়িত্ববোধ তা আন্তরিকভাবেই আমৃত্যু পালন করে গেছেন। এই মূল্যায়নগুলোও মফস্বলের মিডিয়াকর্মীদের অনুপ্রাণিত করে, শ্রদ্ধা বাড়ায়।

তার স্বপ্নের যুগান্তর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ কখনোই মাঠে কাজ করা প্রতিনিধিদের মফস্বল কর্মী হিসেবে বিবেচনা করে না। তাদেরকে যুগান্তর প্রতিনিধি হিসেবে সমমর্যাদায় মূল্যায়ন করে। এটাও এই পত্রিকার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের কাজের গতি যেমন বাড়িয়েছে তেমনি সবাই মনে-প্রাণে এই পত্রিকাকে নিজের এবং বিশাল যমুনা গ্রুপের একজন হৃদয়বান মানুষের কাছের মানুষ হিসেবে আমাদের নিজেদেরও শক্তিশালী মনে হয়।

আমাদের শ্রদ্ধাভাজন এই বড় মনের মানুষটির প্রয়াণে সব সময় মনে হয় আমরা আমাদের অভিভাবককে হারিয়ে ফেললাম। তার সেই শূন্যস্থান হয়ত কখনোই পূরণ হবে না। তারপরও সারা দেশে হাজারো সংবাদকর্মীর হৃদয়ে তিনি আলোকবর্তিকা হয়ে সমুজ্জ্বল থাকবেন তার রেখে যাওয়া যুগান্তর-যমুনা টিভির মাধ্যমে। আমরা তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।

লেখক: ঈশ্বরদী প্রতিনিধি, দৈনিক যুগান্তর ও সাবেক সভাপতি-ঈশ্বরদী প্রেস ক্লাব

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ