মাত্র ২০ টাকায় ‘শেখ হাসিনা শিশু পার্কে’ ঢুকে শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস

প্রকাশিত: ১১:১৫ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২১

মাত্র ২০ টাকায় ‘শেখ হাসিনা শিশু পার্কে’ ঢুকে শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস

নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) উদ্যোগে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা এলাকার আলমপুরে নির্মিত ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা শিশু পার্ক’ দীর্ঘ ১৫ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে।

শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর থেকে এই পার্কের দুয়ার খুলে দেয়া হয় সর্বসাধারণের জন্য। পরীক্ষামূলক চালু অবস্থায় সকল সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানের পরই পার্কটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে।

শনিবার দুপুরে পার্কটির পরীক্ষামূলক যাত্রা শুরু হয়েছে। এ ধাপে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পার্কে বসানো রাইডগুলো ‘চেক’ করে দেখবে। প্রথম দিন ২০ টাকা প্রবেশ ফিতে পার্কে ঢুকতে দেওয়া হয় জনসাধারণকে। তাদেরকে দিয়েই মূলত রাইডগুলো চালিয়ে দেখা হয়- কোনো সমস্যা হয় কি-না। যারা পার্কে ঢুকেন, তাদেরকে ‘পরীক্ষামূলক’ রাইড চালুর তথ্য জানিয়ে দেওয়া হয়।

শনিবার বেলা ২টার দিকে সরেজমিনে ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা শিশু পার্কে’ গিয়ে দেখা যায়, প্রথম দিন পার্কটিতে সব শ্রেণি-বয়সের মানুষের উপস্থিতি কম থাকলেও শিক্ষার্থীদের সমাগম ছিলো লক্ষ্যণীয়। মাত্র ২০ টাকা প্রবেশ ফিতে পার্কটিতে ঢুকতে পেরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা।

এদিকে, পার্কটিতে প্রবেশ ফি ২০ টাকা রাখা হলেও পরীক্ষামূলক চালুর জন্য কোনো রাইড ব্যবহারে টাকা নেয়া হয়নি। প্রথম দিন সম্পূর্ণ ফ্রিতে রাইডগুলো ব্যবহার করে আনন্দ উপভোগ করেন আগতরা।

শেখ হাসিনা শিশু পার্কে বসানো রাইডগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- রোলার কোস্টার, ম্যাজিক প্যারাস্যুট, মনোরেল, ভিজিটিং ট্রেন, রেলগাড়ি, পাইরেট শিপ, স্নিপার, সিসরাইড, বোট, টুইস্টার, বাম্পার কার, ফ্রুট ফ্লাইং চেয়ার, নাগরদোলা, ফ্যারসেল, জাম্পিং ফ্রগ প্রভৃতি।

শনিবার দুপুরে পরীক্ষামূলক চালুর সময় উপস্থিত ছিলেন সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

নুর আজিজুর রহমান জানান, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে।

জানা গেছে, ২০০৬ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকারের অর্থমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের সাংসদ এম সাইফুর রহমানের উদ্যোগে এই পার্ক নির্মাণের কাজ শুরু হয়। তখন মাটি ভরাট, সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন স্থাপনসহ পার্কের অবকাঠামোগত কাজ শেষ হয়। সাইফুর রহমানের নামে পার্কটির নাম রাখার সিদ্ধান্ত হয় সে সময়। কিন্তু বিএনপি সরকার বিদায় নেওয়ার পর পার্কটির কাজে স্থবিরতা নেমে আসে।

বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ আছে, সাইফুর রহমানের নাম থাকায় সিসিকের তৎকালীন আওয়ামী লীগ দলীয় মেয়র পার্কটি চালু করতে উদ্যোগ নেননি।

মধ্যখানে প্রায় ৮ বছর পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে পার্কটি। এরপর ২০১৩ সালে বিএনপি নেতা ও সাইফুর রহমানের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত আরিফুল হক চৌধুরী মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পরে পার্কটি চালুর উদ্যোগ নেন। চীন থেকে আনা হয় বিভিন্ন ধরনের রাইড। ২০১৭ সালে শুরু হয় রাইড বসানো, বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপনের কাজ।

কিন্তু নামকরণ জটিলতায় আটকে যায় পার্ক চালুর বিষয়টি। মেয়র আরিফ পার্কটি সাইফুর রহমানের নামে করতে একটি প্রস্তাবনা পাঠান স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু মন্ত্রণালয় তাতে সাড়া দেয়নি।

এরপর ‘সিলেট ন্যাচারাল পার্ক’, ‘দক্ষিণ সুরমা পার্ক’ নামে পার্কটি করতে চায় সিসিক। কিন্তু স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা এটি শেখ হাসিনার নামে করার প্রস্তাব তুলেন। সরকারের মন্ত্রণালয়ও এতে সায় দেয়।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর সিসিকের ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করা হয়। এ বাজেটে ওই পার্কটির জন্য অবকাঠামো উন্নয়ন খাতে ২ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার কথা জানান মেয়র আরিফ। সবমিলিয়ে এ পার্কটিতে প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে বলে জানা গেছে।

এদিকে, পার্কটির উন্নয়নকাজ এখনও অনেকটা বাকি রয়েছে। পরিকল্পনা করে বিভিন্ন ধরণের বৃক্ষরোপণ, রাইড বসানো ও পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ চলতে দেখা যায় শনিবার।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
22232425262728
2930     
       
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ