মৌলভীবাজারে আগাম বৃষ্টিতে চায়ের বাম্পার ফলনে সম্ভাবনা

প্রকাশিত: ১১:১৭ অপরাহ্ণ, মার্চ ৯, ২০২১

মৌলভীবাজারে আগাম বৃষ্টিতে চায়ের বাম্পার ফলনে সম্ভাবনা

স্বপন দেব, নিজস্ব প্রতিবেদক :: মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল, কমলগঞ্জ রাজনগর, কুলাউড়া ও বড়লেখাসহ সারা জেলায় আগাম বৃষ্টিপাত হওয়ায় এবার চায়ের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। চায়ের মৌসুমের শুরুতে কাঙ্খিত বৃষ্টিপাত চা শিল্পের জন্য আশীর্বাদ বয়ে আনবে বলে আশাবাদী হয়ে ওঠেছেন বাগান মালিকরা।

বছরের শেষ জানুয়ারীতে চা গাছ প্রনিং (কলম কাটা) করার পর ধুসর চা গাছের ডালে নতুন কুঁড়ি উঁকি দিচ্ছে। বৃষ্টি¯œাত চা গাছগুলো ঘন সবুজ হয়ে উঠতে শুরু করেছে। গাছগুলো নতুন পাতায় ভরে উঠবে এই অপেক্ষায় দিন গুনছে চা সংশ্লিষ্টরা। চা উৎপাদন শুরু হলে গাছ থেকে কাঁচা পাতা তুললে দুই টাকা জুটবে তাদের ভাগ্যে।

বাংলাদেশ চা-বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে দেশের ১৬৬টি বাগানে ৮ কোটি ২১ লাখ কেজি চা উৎপাদন হয়েছে। যা দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উৎপাদন। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৭ কোটি ২৩ লাখ ৯০ হাজার কেজি। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৮৯ লাখ কেজি চা বেশি উৎপাদন হয়। এর আগে ২০১৬ সালে ১৫০ বছরের চায়ের ইতিহাসে প্রথম সর্বোচ্চ ৮ কোটি ৫০ লাখ কেজি চা উৎপাদন হয়েছিল। তখন বছরজুড়ে চা চাষের অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশ ছিল। তবে এই উৎপাদনের ধারা ধরে রাখতে না পারায় ২০১৭ সালে চা উৎপাদন কমে দাঁড়িয়েছিল ৭ কোটি ৮৯ লাখ কেজিতে। গত তিন বছর চায়ের গড় উৎপাদন ছিল আট কোটি ২০ লাখ কেজি।

২০২০ সালে চায়ের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৫.৯ মিলিয়ন কেজি। করোনার প্রতিকুলতার মাঝেও উৎপাদন দাঁড়ায় ৮৬.৩ মিলিয়ন কেজি। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ১০ মিলিয়ন কেজির বেশী। তবে এই উৎপাদন ২০১৯ সালের উৎপাদন থেকে ৯.৬৮ মিলিয়ন কেজি কম।
চলতি মৌসুম ২০২১ সালের চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৭.৭৮ মিলিয়ন কেজি।

চা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে দেশে ৫২ হাজার হেক্টর জমিতে চা চাষ হচ্ছে। ২০১২ সালে হয়েছিল ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে। বিশ্বে চা উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন নবম স্থানে অবস্থান করছে। ২০১৭ সালে ছিল দশম স্থানে। আর ২০১৫ সালে ছিল ১২তম স্থানে।

ইস্পাহানি চা কোম্পানির মালিকানাধীন জেরিন চা বাগানের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার সেলিম রেজা চৌধুরী বলেন, আমরা প্রতি বছর শুকনো মৌসুমে চা বাগানে ইরিগেশন এর মাধ্যমে সেচ দিয়ে থাকি। এতে খরচ বেড়ে যায়, তবুও চা গাছ ঠিক রাখতে এ ব্যয় বহন করতে হয়। আগাম বৃষ্টির ফলে এ বছর চায়ের উৎপাদন আরো ভাল হবে এমন আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতেও তাদের বাগানগুলোতে চায়ের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে।

বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট এর পরিচালক ড. মোহাম্মদ আলী এই আগাম বৃষ্টি চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধিতে কাজে আসবে। ৭৭.৭৮ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তবে, প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত, অনুকূল আবহাওয়া, পোকা-মাকড়ের আক্রমণ ও খরার কবলে না পড়লে চলতি বছর লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে ৮৬ মিলিয়নের অধিক চা পাতা উৎপাদন করা সম্ভব বলে তিনি জানান।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ