সুনামগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাইয়ে দেয়ার নামে অর্থ আত্মসাৎ!

প্রকাশিত: ১১:৩৮ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৪, ২০২১

সুনামগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাইয়ে দেয়ার নামে অর্থ আত্মসাৎ!

সুনামগঞ্জ

মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাইয়ে দেয়ার নামে প্রতারণার মাধ্যমে এক পরিবারের কাছ থেকে তিন দফায় অর্ধলক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে সুনামগঞ্জের এক প্রবীণ আইনজীবীর বিরুদ্ধে।

বুধবার প্রতারণার শিকার হওয়া ওই পরিবারের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক ও জেলা আইনজীবী সমিতি বরাবরে আইনজীবী আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করা হয়।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়- সদর উপজেলার ধারারগাঁও এলাকার মরহুম মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফের পরিবার নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পেয়ে আসলেও হঠাৎ করেই পরপর ২ মাস তাদের এই ভাতা পাওয়া বন্ধ ছিলো। এসময় সুনামগঞ্জ আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট আবুল কাশেমের সঙ্গে পরামর্শ করতে যান মুক্তিযোদ্ধার পরিবার জাহেদা বেগম। এ অবস্থায় মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাইয়ে দেয়ার নামে প্রথম দফায় ১৫ হাজার টাকা নেন ওই আইনজীবী। এরপর কোন সুরাহা না হওয়ায় আবারও ১৫ হাজার টাকা লাগবে বলে জানান অ্যাডভোকেট আবুল কাশেম। কথা অনুযায়ি ২য় দফায় আরও ১৫ হাজার টাকা আইনজীবীর হাতে তোলে দেন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী জাহেদা। ২বার টাকা দিয়েও পরবর্তি মাসের ভাতা না পাওয়ায় ওই আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করেন জাহেদা। এসময় আরও ২০ হাজার টাকা দিতে হবে বলে জানান অ্যাডভোকেট আবুল কাশেম।

মুক্তিযোদ্ধা ভাতা নিয়মিত করতে ধার-দেনা করে আরও ২০ হাজার টাকা জোগাড় করে আইনজীবী আবুল কাশেমের হাতে তোলে দেয়ার পরেও কোন লাভ হয়নি বলে জানান মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী জাহেদা।

তিনি বলেন- ‘উকিল সাহেব তিনবার টাকা নেয়ার পর জানালেন তিনি ভাতা পাইয়ে দিতে পারবেন না। তারপরে আমরা টাকা ফেরত চাইলাম, তিনি টাকাও ফেরত দেননি। এখনও দিচ্ছেন না। বার বার উনার বাসায় গেলাম। একদিন খারাপ আচরণ করে ধাক্কা দিয়ে ঘর থেকে বের করে দিলেন। আমার মেয়ের গায়ে হাত তুললেন, এখন আমরা ডিসি স্যারের কাছে বিচার চেয়ে অভিযোগ করেছি।’

তিনি আরও বলেন- ‘আমি গরিব মানুষ, ভাতা বন্ধ থাকায় অভাবের মাঝেও মানুষের কাছ থেকে ধার দেনা করে উকিল সাহেবকে টাকা এনে দিয়েছিলাম, এখন এই টাকা তিনি দিচ্ছেন দিবেন বলে আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করছেন, আমরা এর বিচার দাবি করি’।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত আইনজীবী আবুল কাশেমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন- ‘এই অভিযোগ মিথ্যা, আমি উল্টো এই পরিবারকে টাকা পয়সা দিয়ে চালাচ্ছি। তাদের যখনই টাকা দরকার হয় ২০ হাজার ৩০ হাজার টাকা আমি তাদেরকে দেই। শুনলাম এরা আইনজীবী সমিতিতেও লিখিত অভিযোগ করেছে, এরা মিথ্যা অভিযোগ করেছে।’

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন- ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের কাছ থেকে অর্ধলক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টির ব্যাপারে আমি খোঁজ খবর নিচ্ছি। ঘটনা সঠিক হলে অবশ্যই আইন অনুযায়ি যথাযথ ব্যাবস্থা আমরা গ্রহণের কাজ শুরু করবো।’

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ