সুলতানি ওমানে বাঙালি রাজ্য

প্রকাশিত: ২:২৬ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১৮, ২০২১

সুলতানি ওমানে বাঙালি রাজ্য

অনলাইন ডেস্ক

যেদিকে চোখ যায়, কেবলই ধূসর পাথুরে পর্বত। আর পাদদেশে শুভ্র সাদা অত্যাধুনিক স্থাপনা। সুলতানি শাসনের ওমানে যেন বাড়ি-ঘরের একটাই রং সাদা! স্থাপনায় অন্য রং করতে গেলে লাগে বিশেষ অনুমতি। যা খুবই ঝামেলার। ওমানের শান্তিপ্রিয় মানুষ তাই স্থাপনার জন্য সাদাকেই বেছে নিয়েছেন। ৩ লাখ ৯ হাজার ৫০০ বর্গ কিলোমিটারের এই দেশটিতে মাত্র ৬০ লাখ লোকের বাস। যার মধ্যে ৮ লাখই বাঙালি। আর এই বাঙালির সব অংশ থাকেন রাজধানী শহর মাস্কাটের রুই ও মাতরায়। এই জায়গা দুটি হলো ওমানের ব্যবসা বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র। এখানকার বাঙালিদের অধিকাংশই শ্রমিক। তবে ব্যবসায়ীর সংখ্যাও নিছক কম নয়। একটা সময় কেবল শ্রমিকরাই ওমানে আসতেন। এখন ব্যবসায়ীরাও আসছেন। কেউ কেউ এখানে আসার পর নিজে নিজেই ব্যবসা দাঁড় করিয়ে ফেলেছেন। রুই ও মাতরার রাস্তাঘাট, শপিং মল, হোটেল, রেস্তোরাঁ -এমন কি চায়ের দোকানেও বাঙালি প্রবাসীদের আধিক্য। কিছু কিছু জায়গায় বাঙালিদের আধিক্য এতটাই বেশি যে, স্থানীয় ওমানী কিংবা অন্য কোনোর দেশের নাগরিককে চোখেই পড়ে না। এজন্য রুই ও মাতরাকে এখানকার প্রবাসীদের অনেক সুলতান শাসিত ওমানের ‘বাঙালি রাজ্য’ বলে থাকেন! সুলতানি শাসন চললেও ওমানে তা বোঝার উপায় নেই। এখানকার মানুষরা নিজেদের স্বাধীন মনে করেন। তবে এখানে নিয়ম ভাঙার কোনো উপায় নেই। সে কারণে আরব বিশ্বে ওমানই হয়তো একমাত্র দেশ যেখানে অপরাধ নেই বললেই চলে। তারপরও রয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ওমানে সবচেয়ে পাওয়ারফুল ‘রয়্যাল পুলিশ’। তারা ধূসর পোশাক পরিধান করেন এবং তাদের গাড়িও ধূসর। কোনো বিচার ব্যবস্থাও নেই। রয়্যাল পুলিশের রায়ই চূড়ান্ত বলে ধরা হয়। রুইতে বসবাস করেন বাংলাদেশি ব্যবসায়ী আবুল হাসান। যিনি নিজের চেষ্টায় ওমানে ব্যবসা দাঁড় করিয়েছেন। এখানে গঠন করেছেন বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল অব ওমান। যে সংগঠনের আহ্‌বায়কও তিনি। গতকাল মাস্কাটে দেখা হয় আবুল হাসানের সঙ্গে। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি বলেন, ‘ওমানে এক সময় কেবল শ্রমিক হিসেবেই বাঙালিরা আসতেন। কিন্তু ইনভেস্টররাও আসছেন। কেউ কেউ এখানে এসে ব্যবসায়ী হচ্ছে যাচ্ছেন। আমিও এখানে এসেই শুরু করেছি ব্যবসায়ী হয়েছি। গড়ে তুলেছি হাসান গ্রুপ।’ হাসান বলেন, ‘ওমানে যে বাঙালিরা আসতেন, তাদের বেশির ভাগই স্বল্প শিক্ষিত। পড়াশুনা কম থাকায় তারা এলসি, এক্সচেঞ্জ এবং ব্যাংকিং সিস্টেম সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। এমন অনেকে এটাও জানতেন না কিভাবে শপিং মলে কেনাকাটা করতে হয়। কিন্তু আমি সাইপ্রাস থেকে গ্রাজুয়েশন কম্পিলিট করে এখানে আসি ২০১১ সালে। এ অবস্থা দেখে চিন্তা করি যেভাবেই হোক, একটা ব্যবসা দাঁড় করাব। তারপর অনেক চেষ্টায় আজকের এই অবস্থানে। অনেকে আমাকে দেখে এখন ব্যবসায় ঝুঁকে পড়ছেন। তারা সফলও হচ্ছে। আমরা ব্যবসায়ীরা মিলেই এখানে ব্যবসায়ী কমিউনিটি গড়ে তুলেছি।’ ‘ওমানের মতো শান্তি প্রিয় দেশ বলেই দ্রুত সফল হতে পেরেছি। তা ছাড়া আমাদের বাংলাদেশ থেকে আসা শ্রমিকরাও ভীষণ কর্মঠ। তারা সুনামের সঙ্গেই ওমানে বাস করছেন। সব মিলে ওমানে আমরা ভালোই আছি।’

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ