সিলেট ১৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১২:৩৫ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ১৭, ২০২২
মুফতি রফিকুল ইসলাম আল মাদানি ইসলামী শরিয়তের প্রধান উৎস কোরআন। হাদিস হলো রসুলুল্লাহ (সা.) -এর বাণী। ইসলামী জীবনব্যবস্থার দ্বিতীয় উৎস। হাদিস শব্দের আভিধানিক অর্থ কথা ও বাণী। ইসলামী পরিভাষায় রসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনে যা বলেছেন, যা করেছেন, যাতে সমর্থন ও সম্মতি প্রদান করেছেন তার সবই হাদিস। অনুরূপ সাহাবি ও তাবেয়িদের কথা, কাজ ও সমর্থনও হাদিস হিসেবে পরিগণিত হয়। আল কোরআন সরাসরি আল্লাহর বাণী। যা পাঠ করলে প্রতি অক্ষরে ১০টি নেকি লাভ হয়। হাদিস পরোক্ষভাবে আল্লাহরই পক্ষ থেকে প্রদত্ত বিধান। যা রসুলুল্লাহ (সা.) ব্যক্ত করেছেন মাত্র। মহানবী (সা.)-এর বাণী সম্পর্কে মহান প্রভু ঘোষণা করেন, ‘তিনি নিজে কোনো কথা বলেন না। এ তো ওহি, যা তার প্রতি প্রত্যাদেশ হয়।’ সুরা আন নাজম আয়াত ৩-৪। কোরআনে কারিমের মতো হাদিস পাঠ করার নীতি নেই। তবে তা মানব জীবনে বাস্তবায়ন ও পালন করা মুসলমানদের জন্য একান্ত জরুরি। হাদিস আমাদের ধর্মকর্মের শ্রেষ্ঠ দলিল। জীবন চলার পথ ও পাথেয়। হাদিসের সংকলন, সংরক্ষণ, যাচাই-বাছাই ও ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের জন্য সাহাবিরা ছিলেন মহান আল্লাহর মনোনীত সৌভাগ্যের প্রতীক। খোদায়ী জ্যোতির ধারক-বাহক। তারা তাদের প্রখর মেধা আর অক্লান্ত ত্যাগ সাধনার মাধ্যমে মহানবী (সা.)-এর বাণী পৌঁছে দিয়েছেন আমাদের হাতে, মানবকল্যাণে। যুগে যুগে বিজ্ঞ হাদিসবিশারদ ইমামরা অত্যন্ত দক্ষতা ও বিচক্ষণতার সঙ্গে হাদিস সংরক্ষণের গুরুদায়িত্ব যথাযথভাবে অব্যাহত রেখেছেন। তাই হাদিস মানার ক্ষেত্রে কোনো মুসলমানের সংশয়ের অবতারণা হতে পারে না। আল কোরআন মুসলমানদের জন্য নিশ্চিত ও অকাট্য দলিল। তবে কোরআনের মর্ম সঠিকভাবে বুঝতে হলে রসুলুল্লাহ (সা.) যে ব্যাখ্যা- বিশ্লেষণ করেছেন তা অবশ্যই জানতে হবে। হাদিসে বর্ণিত ব্যাখ্যা ছাড়া আল কোরআনের সব বিধিবিধান যথাযথভাবে বোঝা সম্ভব নয়। এ ছাড়া শরিয়তের অনেক বিধিবিধান হাদিস অনুসরণ ছাড়া সমাধান করারই কোনো উপায় নেই। যেমন জোহর নামাজ চার রাকাত, মাগরিব নামাজ তিন রাকাত, তা আমরা কোরআনে পাব না। হাদিসের মাধ্যমে, রসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনালোকেই সমাধান করতে হবে। কোরআন-হাদিস বিষয়ে অপরিপক্ব জ্ঞানের কারণে কিছু লোক হাদিস মানার বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ করা ও মুসলমানদের মহানবী (সা.)-এর হাদিসবিমুখ করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের দাবি হলো, শরিয়তের দলিল হিসেবে একমাত্র কোরআনই যথেষ্ট। অথচ আয়েশা (রা.)-এর উক্তিমতে ‘রসুলুল্লাহ (সা.)-এর বাণী ও জীবন কোরআনের প্রতিচ্ছবি।’ মুসলিম। আল্লাহ কোরআনেই অসংখ্যবার রসুলুল্লাহ (সা.)-এর নির্দেশনা অনুসরণ-অনুকরণের নির্দেশ প্রদান করেছেন। আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘রসুল তোমাদের যা দেন তা তোমরা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থাক।’ সুরা আল হাশর আয়াত ৭। অন্য আয়াতে তিনি বলেন, ‘আল্লাহর রসুলের জীবনে রয়েছে তোমাদের জন্য উত্তম আদর্শ।’ সুরা নিসা আয়াত ৬৪।
মোট কথা, হাদিস মুসলমানদের জন্য মহানবী (সা.) কর্তৃক প্রদত্ত জীবনবিধান। তাঁর জীবনের স্মৃতি ও প্রতিচ্ছবি। কোরআন সঠিকভাবে বোঝার জন্য হাদিসের প্রয়োজন। এ ছাড়া হাদিস ইসলামের ইতিহাসের প্রামাণ্য উৎস। এতে রয়েছে মহানবী (সা.)-এর যাবতীয় উপদেশ সংকলন, সমাজনীতি ও অর্থনীতি ইত্যাদি জ্ঞান-বিজ্ঞানের ফল্গুধারা। তাই একজন ইমানদার সত্যিকার মুসলমান হিসেবে গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে হাদিসের প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি।
লেখক : গবেষক, ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বসুন্ধরা, ঢাকা।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ নাজমুল কবীর পাভেল
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : জুমা কবীর মিম
সহ সম্পাদকঃ আরিফ মাহবুব
নির্বাহী সম্পাদকঃ ধ্রুব জ্যোতি দে
ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃ মাহমুদা আক্তার বিউটি
আইটি সম্পাদক : মাসুম আহমদ
উপদেষ্টা সম্পাদক : এ্যাডভোকেট জাহানারা বেগম
ইমেইল: sylnewsbd@gmail.com, pavel.syl@gmail.com
ফেইসবুক পেইজ : Syl News BD
মোবাইলঃ 01712-540420
শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান।
Design and developed by ওয়েব নেষ্ট বিডি