সাহেদের প্রধান সহযোগী তরিকুল রিমান্ডে

প্রকাশিত: ৫:২৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ১০, ২০২০

সাহেদের প্রধান সহযোগী তরিকুল রিমান্ডে

সিল-নিউজ-বিডি ডেস্ক :: করোনা পরীক্ষা না করেই রিপোর্ট দেয়াসহ নানা অভিযোগে রিজেন্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে করা মামলায় প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান সাহেদের অন্যতম সহযোগী তরিকুল ইসলাম ওরফে তারেক শিবলীকে ৫ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।

শুক্রবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোর্শেদ আল মামুন ভূঁইয়া আসামির এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে তরিকুলকে আদালতে হাজির করে তার সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার পুলিশ পরিদর্শক আলমগীর গাজী। শুনানি শেষে বিচারক ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গত বুধবার দিবাগত রাতে রাজধানীর নাখালপাড়া এলাকা থেকে তরিকুলকে গ্রেফতার করা হয়।

এর আগে বুধবার করোনা পরীক্ষা না করেই সার্টিফিকেট দেয়াসহ নানা প্রতারণার অভিযোগের ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রাজধানীর উত্তরা থানা-পুলিশ হাসপাতালটির আটজনকে আদালতে হাজির করে। এদের মধ্যে একজন কিশোর হওয়ায় তাকে ছাড়া বাকি সাতজনকে সাত দিন রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করে পুলিশ। শুনানি নিয়ে প্রত্যেক আসামির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত।

রিমান্ডপ্রাপ্ত ৭ আসামি হলেন- প্রশাসনিক কর্মকর্তা আহসান হাবীব, হেলথ টেকনিশিয়ান আহসান হাবীব হাসান, হেলথ টেকনোলজিস্ট হাতিম আলী, রিজেন্ট গ্রুপের প্রকল্প প্রশাসক রাকিবুল ইসলাম, রিজেন্ট গ্রুপের মানবসম্পদ কর্মকর্তা অমিত বনিক, রিজেন্ট গ্রুপের নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুর রশীদ খান ও গাড়িচালক আবদুস সালাম।

এর আগে গত সোমবার (৬ জুলাই) রাজধানীর উত্তরা ও মিরপুরের রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান চালায় র‌্যাব। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমের নেতৃত্বে অভিযানে র‌্যাব করোনার ভুয়া রিপোর্ট দেয়ার প্রমাণ পায়। এছাড়া হাসপাতালটির লাইসেন্সের মেয়াদ ৬ বছর আগেই শেষ হয়ে যাওয়ার প্রমাণ পেয়েছে র‌্যাব। কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হওয়ায় রোগীদের কাছ থেকে টাকা না নেয়ার কথা থাকলেও হাসপাতালটির বিরুদ্ধে করোনা টেস্ট ও ভর্তি রোগীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা নেয়ারও অভিযোগ রয়েছে। অভিযানে ৮ জনকে আটক করা হয়।

পরদিন মঙ্গলবারও লাইসেন্সের মেয়াদ না থাকা, টেস্ট না করেই করোনাভাইরাস পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট দেয়াসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগে রাজধানীর উত্তরায় রিজেন্ট হাসপাতাল ও রিজেন্ট গ্রুপের প্রধান কার্যালয় সিলগালা করা হয়। পরে সন্ধ্যার দিকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে হাসপাতালের শাখা দুটির (উত্তরা ও মিরপুর) কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য অধিদফতর।

মঙ্গলবার অভিযান শেষে র‍্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম সাংবাদিকদের বলেছিলেন, রিজেন্ট গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে সেখানেও অনুমোদনহীন টেস্ট কিট ও বেশ কিছু ভুয়া রিপোর্ট পাওয়া গেছে। এজন্য রিজেন্ট হাসপাতাল ও রিজেন্ট গ্রুপের প্রধান কার্যালয় সিলগালা করা হয়েছে। এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

র‌্যাব-১-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল শফিউল্লাহ বুলবুল গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, আমরা হাসপাতালটির মিরপুর ও উত্তরা শাখায় অভিযান চালিয়েছি। উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরে হাসপাতালটির কাছের একটি ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় তাদের কার্যালয়। সেখান থেকে কিছু ডকুমেন্টস উদ্ধার করা হয়েছে। হাসপাতালটির লাইসেন্সের মেয়াদ নেই। এ ছাড়া টেস্ট না করে করোনা রোগীদের পজিটিভ ও নেগেটিভ রিপোর্ট দেয়া হতো।

এসব অনিয়মের সঙ্গে হাসপাতালটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদই জড়িত এবং চেয়ারম্যান নিজেই এসব ডিল করেছেন বলে জানান র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার (৭ জুলাই) রাতে উত্তরা পশ্চিম থানায় রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদসহ ১৭ জনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়।

মামলার আসামিরা হলেন- রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ করিম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ পারভেজ, রিজেন্ট হাসপাতালের কর্মী তরিকুল ইসলাম, আবদুর রশিদ খান জুয়েল, মো. শিমুল পারভেজ, দীপায়ন বসু, আইটি কর্মকর্তা মাহবুব, সৈকত, পলাশ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা আহসান হাবীব (১), হেলথ টেকনিশিয়ান আহসান হাবীব (২), হেলথ টেকনোলজিস্ট হাতিম আলী, অভ্যর্থনাকারী কামরুল ইসলাম, রিজেন্ট গ্রুপের প্রকল্প প্রশাসক মো. রাকিবুল ইসলাম, রিজেন্ট গ্রুপের মানবসম্পদ কর্মকর্তা অমিত বণিক, রিজেন্ট গ্রুপের নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুর রশিদ খান ও গাড়িচালক আবদুস সালাম।

মামলায় গত সোমবারের অভিযানে আটক রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা শাখার আটজনকে গ্রেফতার দেখানো হয়। এছাড়া রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাহেদ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ পারভেজসহ ৯ জনকে পলাতক আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ