বঙ্গবন্ধুর পরিবারই দেশের ক্রীড়াঙ্গনের বাতিঘর: ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশিত: ৭:১৪ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৪, ২০২০

বঙ্গবন্ধুর পরিবারই দেশের ক্রীড়াঙ্গনের বাতিঘর: ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী

স্পোর্টস ডেস্ক :

যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল বলেছেন, বাংলা ও বাঙালির আপনজন বঙ্গবন্ধু এ দেশের মানুষের জন্য লড়াই করতে গিয়ে জীবনের অধিকাংশ সময় কাটিয়েছেন নির্জন কারাগারে। বঙ্গবন্ধু ছিলেন নিপীড়িত, শোষিত, বঞ্চিত শ্রমজীবী মেহনতী মানুষের মহান নেতা।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের সব মুক্তিকামী মানুষের অনুপ্রেরণার অনিঃশেষ উৎস ছিলেন বঙ্গবন্ধু। বাংলার মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য, শোষণ-বঞ্চনা-নির্যাতন মুক্ত করার জন্য যিনি ‘রাজনীতি’ বেছে নিয়েছিলেন সেই মহৎ মানুষটি ও তার পরিবারের সদস্যদের রয়েছে ক্রীড়াঙ্গনে বর্ণাঢ্য পদচারণা; রয়েছে স্বর্ণোজ্জ্বল অতীত, রয়েছে ক্রীড়ার প্রতি অনুরাগ আর অবদানের অসংখ্য স্বাক্ষর।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্র অর্জনে যে পরিবারটির সংগ্রাম-ত্যাগ-অবদানের কথা জাতির সামনে সুস্পষ্ট, সেই পরিবারটিই বাংলাদেশের একটি বৃহৎ ‘ক্রীড়া-পরিবার’। বিস্মিত হওয়ারই বিষয়, এক পরিবারে এতজন ক্রীড়াবিদ-ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব! যারা কিনা এ দেশের ক্রীড়াঙ্গনে একেকটি বাতিঘর! স্বাধীনতার আগে ও স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারের অবদান অনস্বীকার্য।

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সোমবার জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর বাবা শেখ লুৎফর রহমানও ছিলেন একজন সুপরিচিত ফুটবলার। বঙ্গবন্ধু নিজেও ছিলেন কৃতী ফুটবলার; খেলতেন হকি, ভলিবলও।

খেলাধুলার অনুরাগের পাশাপাশি ক্রীড়া-উন্নয়নে ছিল তার বিশেষ নজর। আপাদমস্তক ক্রীড়াপ্রাণ বঙ্গবন্ধুর বড় ছেলে শেখ কামাল এ আঙিনায় যেন পিতাকেও ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন। মেজো ছেলে শেখ জামাল ছিলেন ফুটবল ও ক্রিকেট খেলোয়াড়।

তিনি বলেন, শেখ কামালের সহধর্মিণী মেধাবী ক্রীড়াবিদ সুলতানা কামালের নাম যেন ক্রীড়াঙ্গনের সবুজ মাঠের প্রতিটি ঘাসের সঙ্গে মিশে রয়েছে। তারা সবাই আজ ফ্রেমবন্দি। কিন্তু জীবনের বাঁকে বাঁকে তারা এ দেশের ক্রীড়াঙ্গন করেছেন সমৃদ্ধ।

গাজীপুর-২ আসন থেকে নির্বাচিত এই সংসদ সদস্য আরও বলেন, ক্রীড়াপ্রাণ বঙ্গবন্ধু-কন্যা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করতে হয়। যিনি ক্রীড়াবিদ না হয়েও ক্রীড়াঙ্গনের সবচেয়ে আপনজন, দায়িত্বশীল অভিভাবক, নিবেদিতপ্রাণ দর্শক, ক্রীড়াঙ্গনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক। ক্রীড়াবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাষ্ট্র পরিচালনাকালেই বাংলাদেশ ক্রীড়াঙ্গনের সবচেয়ে বড় অর্জনগুলো স্পর্শ করেছে।

তিনি আরও বলেন, জাতির পিতার ছোট মেয়ে শেখ রেহানারও ক্রীড়ার প্রতি রয়েছে বিশেষ উৎসুক্য। তাকেও বড় আয়োজনে দর্শকসারিতে সরব দেখা গেছে। কখনও ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়, কখনও সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুল কিংবা মুজিব ববিকেও স্টেডিয়ামে মাঝে মধ্যে দেখা যায়।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেই ক্রীড়ার উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর নেয়া নানা পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের ক্রীড়াক্ষেত্রের উন্নয়নে রেখেছিলেন অনন্য ভূমিকা। খেলাধুলা একটি জাতির মন ও মানস গঠনে এবং বিশ্বের বুকে পরিচয় এনে দিতে যে দারুণ ভূমিকা রাখে, সবসময় এ ব্যাপারটি স্মরণে রেখেছিলেন তিনি। ক্রীড়াবিশ্বে বাংলাদেশ আজ আপন দ্যুতিতে ভাস্বর। এর যাত্রাটি বঙ্গবন্ধুর আমলে শুরু হয়েছিল বললে অত্যুক্তি হবে না।

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুপ্রেরণায় স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠিত হয়েছিল। মহান মুক্তিযুদ্ধে তাদের ভূমিকা আজও চিরভাস্বর। তার ইচ্ছায় ১৯৭২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি দেশের প্রথম ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। যে ম্যাচের উদ্বোধন তিনি নিজে করেছিলেন। ১৯৭২ সালে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ সংস্থা), বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড গঠন করেছিলেন। তিনি ক্রীড়াঙ্গনকে আইনি ভিত্তি দিতে ১৯৭৪ সালে জাতীয় সংসদে পাস করেন বাংলাদেশ স্পোর্টস কাউন্সিল অ্যাক্ট। আজকের যে বিকেএসপি সেটিও তিনি প্রতিষ্ঠা করছেন। মৃত্যুর মাত্র ৯ দিন আগে অসহায় দুস্থ ক্রীড়াবিদদের জন্য বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশন গঠন করেছিলেন।

দেশের ক্রীড়াঙ্গন নিয়ে জাতির পিতার যে স্বপ্ন ছিল তা বাস্তবায়িত হবে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ক্রীড়াক্ষেত্রে আরও এগিয়ে যাবে। ইতোমধ্যে আমরা যুব বিশ্বকাপ ক্রিকেট বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছি। আশা করি আমরা একদিন সব খেলাতেই বিশ্বসেরা হব। আর এর মধ্য দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে।

আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব মো. মাসুদ করিম, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান সিরাজ, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ফজলুল হক মন্টু ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ