শিশুদের ভালোবাসা প্রিয় নবীজির সুন্নত

প্রকাশিত: ১২:৩০ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২০

শিশুদের ভালোবাসা প্রিয় নবীজির সুন্নত

মুফতি মুহাম্মাদ এহছানুল হক

 

শিশুরা মহান আল্লাহর অপার নিয়ামত। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন স্থানে শিশু নির্যাতনের চিত্রগুলো

ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। আমাদের মনে রাখতে হবে, শিশুরাই জাতির ভবিষ্যৎ। শিশুদের ভালোবাসা ও তাদের প্রতি আমাদের কর্তব্য সম্পর্কে ইসলাম যে সুন্দরতম দিকনির্দেশনা দিয়েছে তা মেনে চলা আমাদের একান্ত কর্তব্য। সভ্যতার সংকট ও নৈতিক অবক্ষয় থেকে বাঁচার জন্য শিশুদের ব্যাপারে ইসলামের বক্তব্যগুলো বাস্তবায়ন ও চর্চা সময়ের দাবি। শিশু অধিকার রক্ষায় ইসলামের রয়েছে বিজ্ঞানধর্মী নীতিমালা। শিশুর সঙ্গে কেমন আচরণ করতে হবে, তার সঠিক বিকাশের জন্য কোন কোন বিষয়কে গুরুত্ব দিতে হবে এসব হাতে-কলমে শিখিয়েছেন রসুল (সা.)। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, ‘এক বেদুইন রসুলুল্লাহর কাছে এসে বলল, আপনারা শিশুদের চুমু দেন আমরা তো শিশুদের চুমু দিই না। উত্তরে রসুলুল্লাহ বললেন, আল্লাহ তোমার অন্তর থেকে দয়ামায়া উঠিয়ে নিলে আমি কী করব?’ বুখারি। কোনো এক ঈদের দিন নবী (সা.) নামাজ আদায়ের জন্য বের হলেন। তিনি দেখলেন এক শিশু মলিন বেশে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে কাঁদছে। নবী (সা.) শিশুটির মাথায় হাত বুলিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কাঁদছ কেন? শিশুটি জবাবে বলল, আমার বাবা-মা বেঁচে নেই আমি অসহায়, ঈদে আমার কোনো পোশাক নেই, তাই কাঁদছি।
নবী (সা.) শিশুটিকে কোলে তুলে নিয়ে ঘরে ফিরে এলেন, তাকে গোসল করিয়ে নতুন পোশাক দিলেন এবং বললেন আজ থেকে আমি তোমার বাবা, আয়েশা (রা.) তোমার মা, ফাতিমা (রা.) তোমার বোন। নবীজি (সা.)-এর আদর পেয়ে শিশুটি তার দুঃখ ভুলে গেল। মহানবী (সা.) শুধু শিশুদের ভালোই বাসতেন না, তিনি তাদের খোঁজখবরও নিতেন। মাঝেমধ্যে তাদের সঙ্গে রসিকতাও করতেন। অনেক সময় ঘোড়া সেজে নাতি হাসান, হোসাইন (রা.)-দের পিঠে নিয়ে আনন্দ করতেন। হজরত আনাস (রা.) বলেন, রসুল (সা.) আমাদের বাড়িতে আসতেন। আমার ছোট ভাই, তার উপনাম ছিল আবু উমায়ের। তার একটি বুলবুলি পাখি ছিল। সে তার প্রিয় পাখিটি নিয়ে খেলা করত। একদিন পাখিটি মারা গেল। এরপর কোনো একদিন রসুল (সা.) আমাদের বাড়ি এসে দেখলেন আবু উমায়েরের মন খারাপ। মহানবী (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, আবু উমায়েরের মন খারাপ কেন? সবাই বলল, তার বুলবুলিটি মারা গেছে। তখন মহানবী (সা.) বললেন, ‘হে আবু উমায়ের! তোমার বুলবুলিটির কী হয়েছিল?’ আবু দাউদ। একজন নবী ও রাষ্ট্রপ্রধান হয়েও শত ব্যস্ততার মধ্যে তিনি শিশুদের খোঁজখবর নিতেন, ভালোবাসতেন। এটি তাঁর সুমহান চরিত্রের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আল্লাহ আমাদের সবাইকে শিশুদের সঙ্গে উত্তম আচরণ করার তৌফিক দান করুন। বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের এ মহামারী দূর করে দিন।

লেখক : খতিব, মণিপুর বাইতুল আশরাফ (মাইকওয়ালা) জামে

মসজিদ, মিরপুর, ঢাকা।
সুত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ