বার্সেলোনাকে হারিয়ে রিয়াল মাদ্রিদের এল ক্লাসিকো জয়

প্রকাশিত: ১১:১০ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৪, ২০২০

বার্সেলোনাকে হারিয়ে রিয়াল মাদ্রিদের এল ক্লাসিকো জয়

স্পোর্টস ডেস্ক

বার্সেলোনার ঘরের মাঠ ন্যুক্যাম্পে হয়ে গেল বহুল প্রতীক্ষিত মৌসুমের প্রথম এল ক্ল্যাসিকো ম্যাচ।

বাংলাদেশ সময় রাত ৮ টায় শুরু হয় দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদ এবং বার্সেলোনার এই দ্বৈরথ।

সারা বিশ্বে ৬৫০ মিলিয়ন দর্শক আজকের এই এল ক্লাসিকো দেখেছেন টিভিতে, অ্যাপসে ও বার্সার ফেসবুক পেজে।

বার্সেলোনার ঘরের মাঠ ন্যুক্যাম্পে ম্যাচ শুরুর ৫ মিনিটের মাথাতেই উত্তেজনার পারদ চরমে পৌঁছে দেন রিয়াল মাদ্রিদের ভালভার্দে ।

করিম বেনজেমার পাস থেকে বল পেয়ে চমৎকার নৈপূণ্য দেখিয়ে বার্সার রক্ষণভাগ চূর্ণবিচূর্ণ করে গোল করে লিড এনে দেন তিনি। ৯৯ হাজর দর্শকের গ্যালারি করোনার অভিশাপে খাঁ খাঁ করলেও টিভিসেটের সামনে বসে থাকা রিয়ালসমথর্থকরা যে উল্লাসে ফেটে পড়ে তা সন্দেহাতীতভাবেই বলা যায়।

তবে রিয়ালসমর্থকদের এই উল্লাস টিকেছিল মাত্র ৩ মিনিট। খেলার ৮ মিনিটের সময় চমৎকার এক গোলো সমতায় ফেরান বার্সার ১৭ বছর বয়সী বিস্ময়বালক আনসু ফাতি। লেফট উইংয়ে বল ভেসে আসলে নাচোকে পেছনে ফেলে নিয়ন্ত্রণ নেন জর্দি আলবা। বক্সের মাঝ বরাবর ক্রস করে আনসু ফাতির পায়ে ঠেলে দেন । দ্রুত এগিয়ে আসা আনসু ফাতি পা ঠেকিয়ে সেটিকে রিয়ালের জালে জড়িয়ে দেন।আনসু ফাতির এই গোলে রিয়ালমাদ্রিদের বিপক্ষে ৪০০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করে বার্সেলোনা।

রিয়ালের বিপক্ষে ২৪৪টি ম্যাচে ৪০০ গোল পূরণ করল বার্সেলোনা। বার্সার এই মাইলফলক আগেই ছুঁয়েছে রিয়াল। এখন পর্যন্ত ভালভার্দের গোলসহ বার্সেলোনার জালে ৪০৬ বার বল জড়িয়ে রিয়াল।

১-১ স্কোরলাইনে উত্তেজনা নিয়ে খেলা এগিয়ে যেতে থাকে। এরইমধ্যে চলে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ। ১৫ মিনিটের মাথায় ডি-বক্সের বাইরে থেকে নেয়া মেসির একটি দুর্বল শট ধরে ফেলে রিয়ালের গোলরক্ষক।

২৩ মিনিটের সময় আবার লিড নিতে পারত রিয়াল মাদ্রিদ। বার্সা গোলাকিপারকে একা পেয়েও বল জালে জড়াতে পারেননি করিম বেনজেমা। সরাসরি গোলরক্ষকের কাছে বল পাঠিয়ে দিয়ে ব্যর্থ হন তিনি।

খেলার ২৭ মিনিটে গিয়ে বার্সা অধিনায়ক লিওনেল মেসির ছন্দময় ফুটবল দেখে বিশ্ব। সার্জিও রামোসদের কাটিয়ে রিয়ালের ডি-বক্সে ঢুকে পড়ে গোলের সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলেন মেসি। তবে এ যাত্রায় ব্যর্থ হন।

৩৫ মিনিটে বেনজেমা বার্সার ডিবক্সে ঢুকে আতঙ্ক ছড়ালেও তা ক্লিয়ার করেন বার্সার রক্ষণভাগ।

এ সময় বল দখলের লড়াই রিয়াল ৬০ শতাংশ নিয়ে এগিয়ে থাকে।

৪৫ মিনিট খেলা শেষে আরও ২ মিনিট অতিরিক্ত যোগ করলেও আর গোলের দেখা পায়নি দুই দল।

ফলে ১-১ সমতায় বিরতিতে গেছে দুই দল।

দ্বিতীয়ার্ধে নেমে পাল্টা আক্রমণে জডি আলবার ক্রস পায়ে নিতে পারেনি বার্সার ফরোয়ার্ড। ৫৩ মিনিটে মেসির পাসে ডি-বক্সে কুতিনহোর দিকে বল উড়িয়ে দেন আনসু ফাতি। তবে হেডে গোলের প্রচেষ্টা করলেও তা বারের বাইরে গিয়ে পড়ে।

৫৬ মিনিটে ডিবক্সে বল পেয়েও তা উদ্দেশ্যহীনভাবে গোলপোস্টের ওপর দিয়ে উড়িয়ে দেন করিম বেনজেমা।

ম্যাচের ৬০ মিনিটে গিয়ে বার্সেলোনার ডিবক্সে ফাউলের অভিযোগ আনে রিয়াল মাদ্রিদ। ৫৯ মিনিটে লেফট উইংয়ে সার্জিনো ডেস্ট করেন হ্যান্ডবল। টনি ক্রুস ফ্রি কিক নিলে বক্সের মধ্যে ক্লেমেন্ট লেংলেট জার্সি টেনে ধরেন সার্জিও রামোসের। যে কারণে রামোস রেফারির কাছে আবেদন জানান ভিএআরের।

ভিআরের সাহায্য নিয়ে পেনাল্টি আদায় করে নেয় রিয়াল মাদ্রিদ। সফল স্পটকিক থেকে গোল করেন সার্জিও রামোস।

২-১ এ গিয়ে যায় জিনেদিনে জিদানের শিষ্যরা।

গোল শোধে মরিয়া হয়ে ওঠে কাতালানরা। রক্ষণের ৫ খেলোয়াড় উঠে আসে উপরের দিকে। রিয়ালকে চেপে ধরে মেসির দল।

৬৯ মিনিটে প্রথম কর্ণার পায় বার্সেলোনা। প্রথম কর্ণার হেড করে মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দেন রামোস। দ্বিতীয় কর্ণারও প্রতিরোধ করে রিয়ালের ডিফেন্ডাররা।

ফের কর্ণার হলে এবার মেসির চাতুর্যে বল পান কুতিনহো। কিন্তু কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন। এ সময় দলের শক্তি বাড়াতে লুকা মদরিচকে নামান জিদান।

৭৫ মিনিটে মাদ্রিদের ডি-বক্স থেকে একটু দূর থেকে ফ্রি-কিক নেন মেসি। সেই কিকে পা ছোঁয়াতে পারেনি বার্সার কেউ। ৭৮ মিনিটে পাওয়া ফ্রি-কিকও ব্যর্থ হয় মেসির। তবে এর পর কর্ণার থেকে পাওয়া বলে ডেস্টে হেড রিয়াল ডিফেন্ডারের পিঠে লাগলে সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়।

খেলার ৯ মিনিট বাকি থাকতে আনসু ফাতিকে উঠিয়ে আতোঁয়া গ্রিজম্যানকে নামান রোনাল্ড কোম্যান।

কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। ম্যাচের ৮৩ ও ৮৫ মিনিটে নিশ্চিত দুটি গোল বাঁচান বার্সা গোলরক্ষক নেটো। লুকা মদরিচের নৈপূণ্যে টনি ক্রুসের চমৎকার দুটি শট সেভ করেন নেটে। এর দুই মিনিট পরেই রামোসের শটকে সেভ করেন নেটো।

৮৮ মিনিটে দেম্বেলের একক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। উল্টো ৮৯ মিনিটের গিয়ে বদলি হিসেবে নামা লুকা মদরিচ বার্সা গোলরক্ষককে পরাস্ত করে লক্ষ্যভেদ করেন। ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের বল ঠেকাতে গিয়ে গোলরক্ষক নেটো পড়ে যান। ফিরতি বল রদ্রিগো নিয়ে পাস দেন মদরিচকে। দু’জন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে নেটোকে কাটিয়ে বল জালে জড়ান মদরিচ।

৩-১ স্কোরলাইনে এগিয়ে যায় রিয়াল মাদ্রিদ। মদরিচের এই গোলে রিয়ালের এই মৌসুমের এল ক্লাসিকো জয় প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায়।

খেলায় বল দখলে ও শটের সংখ্যা বার্সা থেকে এগিয়েছিল রিয়াল। গোলপোস্ট বরাবর বার্সার ৪ শটের বিপরীতে রিয়ালের শট ৯টি।

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
22232425262728
2930     
       
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ