ঋণমুক্তির তিন আমল

প্রকাশিত: ১১:২১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৩, ২০২১

ঋণমুক্তির তিন আমল

যুবায়ের আহমাদ

 

পারস্পরিক সাহায্যে পূর্ণ হয়ে ওঠে মানুষের সামাজিক জীবন। সুখে-দুঃখে একে অন্যের পাশে দাঁড়ায় বন্ধু হয়ে। অভাবে ঋণ আদান-প্রদান করে একে অন্যের সঙ্গে। ঋণ করার পর তা দ্রুত পরিশোধ করা জরুরি। ঋণগ্রস্ত নামাজ, রোজা, হজ, জাকাতের মতো হাজারো ভালো কাজ করে থাকলেও মৃত্যুর পর ঋণ পরিশোধ না করা পর্যন্ত তার আত্মা জান্নাতের দিকে ঝুলে থাকবে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘অন্য সব দিকে ভালো মানুষ হওয়া সত্ত্বেও ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির মৃত্যুর পর ঋণের কারণে তার আত্মা বেহেশতের পথে লটকে থাকবে। যতক্ষণ না তার পক্ষ থেকে কেউ সেই ঋণ পরিশোধ করে দেয়।’ ইবনে মাজাহ। যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে তার জীবন কোরবানি করে দিয়ে শহীদ হলো তারও ঋণ মাফ করা হবে না। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘ঋণ ছাড়া শহীদের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।’ মুসলিম। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমন ঋণখেলাপির জানাজা পড়তেন না। ঋণ পরিশোধে আমাদের সবারই আন্তরিক চেষ্টা থাকা উচিত। যেভাবে আমরা ঋণ পরিশোধের চেষ্টা করতে পারি : ১. ঋণ পরিশোধের নিয়ত করা : অনেকে পরিশোধ না করার ইচ্ছা নিয়েই ঋণ করেন। পাওনাদারকে ঠকানোই যাদের ইচ্ছা। ‘ভবিষ্যতে একান্তই দিতে হলে দিয়ে দেব; আর না দিয়ে পারলে তো বাঁচা গেল’- এই তাদের মনোবৃত্তি। এ ধরনের খেলাপির ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি এসেছে হাদিসে। যখন কেউ একান্ত প্রয়োজনে ঋণ করে এবং পরিশোধ করার দৃঢ় সংকল্প রাখে আল্লাহ তাকে ঋণ পরিশোধের তৌফিক দান করবেন। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি পরিশোধ করার নিয়তে মানুষের সম্পদ গ্রহণ করে আল্লাহ তাকে পরিশোধের ব্যবস্থা করে দেন। আর যে মানুষের সম্পদ ধ্বংসের জন্য গ্রহণ করে আল্লাহ তাকে ধ্বংস করবেন।’ বুখারি। ২. ঋণ পরিশোধের চেষ্টা করা : ঋণ পরিশোধের জন্য কেবল নিয়ত করে বসে থাকলেই হবে না বরং চেষ্টা করতে হবে। ঋণ পরিশোধ আমার বড় একটি প্রয়োজন এটি মাথায় রেখে অপেক্ষাকৃত কম প্রয়োজনের খরচগুলো কমানো এবং অপ্রয়োজনের খরচগুলো একদম বাদ দেওয়ার মাধ্যমে খরচ নিয়ন্ত্রণ করে ঋণ পরিশোধের জন্য অর্থ জমাতে হবে এবং কিছু কিছু করে ঋণ পরিশোধের চেষ্টা করতে হবে। ৩. দোয়া করা : ঋণ পরিশোধের প্রাণান্ত চেষ্টার পাশাপাশি ঋণ পরিশোধের সামর্থ্য চেয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করা ইসলামের শিক্ষা। হজরত আবু ওয়ায়েল (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত আলী (রা.)-এর কাছে এক ক্রীতদাস এসে বলল, আমাকে সাহায্য করুন, আমি চুক্তির টাকা আদায় করতে পারছি না। তখন হজরত আলী (রা.) তাকে বললেন, আমি কি তোমাকে এমন কয়েকটি শব্দ শিখিয়ে দেব না যা আমাকে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শিখিয়েছেন? যদি তোমার ওপর সায়ির পাহাড় পরিমাণও ঋণ থাকে তবু আল্লাহ তা আদায়ের ব্যবস্থা করে দেবেন। এ ছাড়া হাদিসে আরও দোয়া রয়েছে সেগুলো বেশি বেশি পড়লে এবং ঋণ পরিশোধের নিয়ত করে সর্বোচ্চ চেষ্টা করলে আল্লাহ ঋণমুক্ত করে দেবেন!

লেখক : খতিব, বাইতুশ শফিক মসজিদ।
সুত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ