ভিডিওতে দগ্ধ ছেলেকে দেখে মায়ের আহাজারী, টাকা নেই সীতাকুন্ড যাওয়ার

প্রকাশিত: ১০:৪৭ পূর্বাহ্ণ, জুন ৬, ২০২২

ভিডিওতে দগ্ধ ছেলেকে দেখে মায়ের আহাজারী, টাকা নেই সীতাকুন্ড যাওয়ার

সিলনিউজ বিডি ডেস্ক :: অগ্নিদগ্ধ এক তরুণকে স্ট্রেচারে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ভিডিও দেখে তাঁকে চিনতে পেরেছেন ছেলেটির মা। কিন্তু সন্তানকে দেখতে সীতাকুন্ড যাওয়ার গাড়ি ভাড়া নেই তাঁর কাছে। মা জানেনও না কোন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ছেলেকে। ভিডিওটি দেখে শুধু আহাজারী করছেন তিনি।

ছেলেটির নাম আল-আমিন (২২)। তিনি হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার পুটিজুরী ইউনিয়নের বাগেরখাল গ্রামের বাসিন্দা। আল-আমিন তাঁর অন্য দুই বন্ধুর সঙ্গে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে কাজ করতেন। স্থানীয়রা জানান, ডিপোতে বিস্ফোরণ-অগ্নিকান্ডের পর থেকেই আল-আমিন নিখোঁজ ছিলেন। রোববার রাতে স্থানীয় এক যুবক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিওতে দগ্ধ অবস্থায় আল আমিনকে দেখতে পান। ভিডিওটি আল আমিনের মা সুজেনা বেগমের কাছে নিয়ে গেলে তিনিও তাঁকে নিজের ছেলে বলে সনাক্ত করেছেন।

পুটিজুরী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ছয় নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জসিম উদ্দিন বলেন, ভিডিওটি দেখার পর থেকে সুজেনা বেগম তার ছেলের জন্য কান্না করতে থাকেন। ছেলেকে দেখার জন্য বার বার মুর্ছা যাচ্ছিলেন। কিন্তু ভাড়ার টাকা না থাকায় যেতে পারেননি। সোমবার তিনি ভাড়ার টাকা যোগাড় করে দিয়ে সুজেনা বেগমকে সেখানে পাঠাবেন বলে ঠিক করেছি।

দগ্ধ আল আমিনের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে সে দুই নম্বর। সম্প্রতি ফাহিম ও রাজিব নামে দুই বন্ধুর সঙ্গে কনটেইনার ডিপোতে গিয়ে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। ঘটনারদিন রাতে শুধু আল অমিনের ডিউটি ছিল। দুই বন্ধু দিনের ডিউটি করে বাসায় চলে গিয়েছিলেন।

আল আমিনের বাবা সেফু মিয়া জানান, আগুন লাগার পরপরই আল আমিন তাঁর চাচা ফজলু মিয়ার মুঠোফোনে কল দিয়েছিলেন। তবে আগুন লেগে যাওয়ার খবর জানানোর পরক্ষণেই মুঠোফোনটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে আর যোগাযোগ হয়নি। পুটিজুরী ইউপি চেয়ারম্যান মুদ্দত আলী বলেন, খবর পেয়ে দগ্ধ আল আমিনের পরিবারের সদস্যরা টাকার অভাবে চট্টগ্রামে যেতে পারছেন না। আমি ব্যক্তিগতভাবে তাঁদেরকে সহযোগিতা করব।

শনিবার রাত ৯টার দিকে সীতাকুন্ডের সোনাইছড়ি এলাকায় বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করার সময় রাসায়নিক থাকা একটি কনটেইনার বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। এতে দুই শতাধিক মানুষ আহত হন। ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে ইউনিট আরও বাড়ানো হয়। কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫ জনে। আগুন লাগার ২০ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিটের ১৮৩ কর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ