গোয়াইনঘাটে সামাজিক নিরাপত্তায় প্রতিবছর ব্যয় ২৬ কোটি টাকা

প্রকাশিত: ৩:২২ অপরাহ্ণ, জুন ১৪, ২০২১

গোয়াইনঘাটে সামাজিক নিরাপত্তায় প্রতিবছর ব্যয় ২৬ কোটি টাকা

অনলাইন ডেস্ক :: ১৯৯৮-৯৯ অর্থ বছরে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন সমাজসেবা অধিদফতররের মাধ্যমে বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা মহিলাদের ভাতা কর্মসূচি প্রবর্তন করা হয়।

ওই অর্থ বছরে দেশের ৪ লক্ষ ৩ হাজার ১১০ জনকে এককালীন মাসিক ১০০ টাকা হারে ভাতা প্রদান করা হয়। ২০০৩-০৪ অর্থ বছরে এ কর্মসূচিটি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়।

জানা যায়, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা মহিলা ভাতা কর্মসূচি বাস্তবায়নে অধিকতর গতিশীলতা আনয়নের জন্য বর্তমান সরকার পুনরায় ২০১০-১১ অর্থ বছরে এ কর্মসূচি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করে। বর্তমান সরকারের উদ্যোগে প্রবর্তিত এ কর্মসূচি সমাজসেবা অধিদফতর সফলভাবে বাস্তবায়ন করছে। এ কর্মসূচির আওতায় ২০২০-২১ অর্থ বছরে ২০ লক্ষ ৫০ হাজার জন ভাতাভোগীর জন্য জনপ্রতি মাসিক ৫০০ টাকা হারে মোট ১২৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করার পর বিগত ৯ বছরে বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা মহিলা ভাতা বিতরণে প্রায় শতভাগ সাফল্য অর্জিত হয়েছে।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় হতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত হওয়ার পর এ কর্মসূচিতে অধিকতর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ এবং সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য বিগত ৬ বছরে যে সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে তা হলো, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রণীত বাস্তবায়ন নীতিমালা সংশোধন করে যুগোপযোগীকরণ, উপকারভোগী নির্বাচনে স্থানীয় মাননীয় সংসদ সদস্যসহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্তকরণ, ডাটাবেইজ প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ। এ ছাড়া ১০ টাকার বিনিময়ে সকল ভাতাভোগীর নিজ নামে ব্যাংক হিসাব খুলে ভাতার অর্থ পরিশোধ করা হচ্ছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছর থেকে ভাতাভোগীদের অনলাইন মাধ্যমে G2P বা গভর্মেন্ট টু পারসন পদ্ধতিতে ভাতা প্রদান চালু করা হয়েছে। অচিরেই সকল ভাতাভোগী এ পদ্ধতিতে ভাতা পাবেন।

করোনা মহামারিকালে ‘জীবন ও জীবিকা বাঁচানোর’ বাজেটে প্রথমবারের মতো সামাজিক সুরক্ষা খাতে বরাদ্দ এক লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এই অঙ্ক মোট বাজেটের প্রায় ১৮ শতাংশ। আর মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৩ দশমিক ১১ শতাংশ। নতুন এই বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর আওতায় বিভিন্ন ভাতাভোগীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। এতে সব মিলিয়ে আরও প্রায় সাড়ে ১৪ লাখ লাখ গরিব মানুষ সরকারের সহায়তা পাবে। এতদিন ৮৮ লাখ গরিব ও অসহায় মানুষ এই ভাতা পাচ্ছিলেন। নতুন করে সুবিধাভোগীর সংখ্যা যুক্ত হলে ভাতা পাওয়া গরিবের সংখ্যা ১ কোটি ছাড়িয়ে যাবে।

এতে সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর আওতায় বয়স্ক, বিধবা, স্বামী নিগৃহীতা, প্রতিবন্ধীসহ বিভিন্ন ভাতার পরিমাণ বাড়েনি, তবে সুবিধাভোগীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় ১১ হাজার ৮৫৯ জন নারী/পুরুষ প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে বয়স্ক ভাতা পেয়ে থাকেন। এতে ১২ মাসে সরকারের ব্যায় হচ্ছে ৭ কোটি ১১ লাখ ৫৪০০০ টাকা। ৬ হাজার ৭৮০ জন নারী ৫০০ টাকা করে প্রতি মাসে পাচ্ছেন বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তা ভাতা। এতে সরকারের প্রতি বছর ব্যায় হয় ৪ কোটি ৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা। গোয়াইনঘাট উপজেলায় ৪ হাজার ৭৯৭ জন প্রতিবন্ধী মাসে ৭৫০ টাকা করে প্রতিবন্ধী পাতা পাচ্ছেন।

এতে সরকারের প্রতিবছর ব্যায় হয় ৪ কোট ৩ লাখ ১৭ হাজার ৩০০ টাকা। গোয়াইনঘাট উপজেলায় ৭১৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রতি মাসে পাচ্ছেন ১২ হাজার টাকা করে সম্মানী। এছাড়াও ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহায় ১০ হাজার টাকা করে বোনাস এবং বৈশাখ মাসে ২ হাজার টাকা করে সম্মানী। এতে সরকারের প্রতি বছর ব্যায় হয় ১০ কোটি ৪২ লাখ ৪০ হাজার ৬০০টাকা।

এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আবু কাওছার বলেন, বয়স্ক,বিধবা, প্রতিবন্ধী ভাতা এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা গনের সম্মানী মিলিয়ে প্রতিবছর শুধুমাত্র গোয়াইনঘাট উপজেলায় সরকারের ব্যায় হয় ২৫ কোটি ৯২ লাখ ৪৭ হাজার ৬০০ টাকা। বিশেষ করে বয়স্ক, বিধবা, স্বামী পরিত্যক্ত এবং প্রতিবন্ধীদের তালিকা তৈরিতে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। ফলে উপজেলার প্রকৃত মানুষেরা উক্ত ভাতাভোগীর আওতায় এসেছেন।