আড়াই লাখ দোয়ারাবাজারবাসীর স্বপ্ন পূরণ, উদ্বোধনের অপেক্ষায়…

প্রকাশিত: ৮:১৫ অপরাহ্ণ, জুন ১৫, ২০২১

আড়াই লাখ দোয়ারাবাজারবাসীর স্বপ্ন পূরণ, উদ্বোধনের অপেক্ষায়…

এনামুল কবির মুন্না নিজস্ব প্রতিবেদক

অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটলেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বিপাকে পড়তেন দোয়ারাবাজার উপজেলাবাসী। এ উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন না থাকায় অগ্নি নির্বাপনে একমাত্র ভরসাই ছিলো পার্শ্ববর্তী ছাতক ও সুনামগঞ্জের ফায়ার সার্ভিস স্টেশন।

কিন্তু ভৌগলিক কারণে সুরমা নদীসহ ছোট্বড় বিভিন্ন পাহাড়ি নদীতে বিভক্ত হওয়ায় সময়ের দীর্ঘসূত্রিতা ও নাজুক যাতায়াত ব্যবস্থাই হাওরবেষ্টিত এ উপজেলার অসহায়ত্বের মূল কারণ। এজন্যই বাইরের ফায়ার সার্ভিসের সেবা পাওয়ার আগেই বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখিন হতো ভুক্তভোগীদের।

যে কারণে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বসতবাড়ি, আবাসিক ভবন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানসহ সকল প্রতিষ্ঠান সবসময়ই ঝুঁকিতে থাকতো।তাই কোনো ফায়ার সার্ভিস স্টেশন না থাকায় একটি নিজস্ব ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপনের দীর্ঘদিনের দাবি ছিলো উপজেলাবাসীর।

দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে দেশ স্বাধীনের ৫০ বছর পর হলেও সুনামগঞ্জ-৫ (ছাতক-দোয়ারাবাজার)আসনের চারবারের নির্বাচিত বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মুহিবুর রহমান মানিকের আন্তরিক প্রচেষ্টায় কাঙ্খিত স্বপ্ন এখন বাস্তবে পূরণ হতে যাচ্ছে। ২০১৯ সালের ২৫ মে দোয়ারাবাজার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকাজের উদ্বোধন করেন এমপি মানিক। দুই বছরের মাথায় উপজেলাবাসীর স্বপ্নের ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের নির্মাণ কাজ এখন সম্পন্ন। অধীর আগ্রহে উদ্বোধনের অপেক্ষার প্রহর গুনলেও ফায়ার সার্ভিস স্টেশন পেয়ে এখন বেজায় খুশি উপজেলার সর্বস্তরের মানুষ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবনের পশ্চিম পাশে দৃশ্যমান দৃষ্টিনন্দন ফায়ার সার্ভিস স্টেশন এখন নজর কাড়ছে পথচারীদের। এক নজর দেখতে প্রতিদিনই এখানে ভীড় জমছে কৌতূহলি উৎসুক জনতার। এটি উদ্বোধন হলে সেবা পাবে উপজেলার প্রায় আড়াই লাখ মানুষ।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগ জানায়, নবনির্মিত দোয়ারাবাজার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের নির্মাণকাজে ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা। কাজ বাস্তবায়ন করেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর ও গণপূর্ত বিভাগ কাজ। কার্যক্রম শুরু হলে অগ্নিনির্বাপণ সেবা ছাড়াও বিভিন্ন উদ্ধার কাজের সেবাও পাওয়া যাবে এখান থেকে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির সদস্য ও অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিম বীরপ্রতীক বলেন, ‘আমাদের এই দুর্গম উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন এতোদিন যাবৎ স্বপ্নই ছিলো। স্বাধীনতার পর অনেক সরকার ক্ষমতায় এসেছে, আমাদের সংসদীয় আসনে অনেকেই সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সুনামগঞ্জ-৫ আসনে বারবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিকের মতো এভাবে কেউ আমাদের উন্নয়নের কথা ভাবেনি। তাদেরকে উপজেলাবাসীর পক্ষ থেকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছি। জীবিত থাকা অবস্থায় স্বাধীন দেশে বঙ্গবন্ধু কন্যার বদৌলতে নিজের এলাকায় একটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন দেখতে পেরেছি। এটাই আমাদের পরম তৃপ্তি ও প্রাপ্তি।’

উপজেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি ও ইউপি সদস্য তাজির উদ্দিন এবং উপজেলা নদীভাঙন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি আওয়ামীলীগ নেতা তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের উপজেলায় এই প্রথম একটি নিজস্ব ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মিত হয়েছে। এটা উপজেলাবাসীর অনেক বড় প্রাপ্তি। এভাবে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকুক।’

সুনামগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, দোয়ারাবাজার ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের নির্মাণ কাজ শেষ। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হ্যান্ড ওভার করলেই কার্যক্রম শুরু হবে। ওই স্টেশনের অনুকূলে গাড়ি আছে। কিন্তু জনবল নেই, তবে সংযুক্তি জনবল নিয়ে আমরা কার্যক্রম শুরু করব। এছাড়া অন্যান্য সরঞ্জামাদি মওযুদ আছে।

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
    123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930 
       
1234567
15161718192021
293031    
       
22232425262728
2930     
       
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ