তাহিরপুরে গৃহবধূকে হত্যা চেষ্টা: ঘটনায় মামলা দায়ের, আসামিরা লাপাত্তা

প্রকাশিত: ৪:৩৬ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১, ২০২১

তাহিরপুরে গৃহবধূকে হত্যা চেষ্টা: ঘটনায় মামলা দায়ের, আসামিরা লাপাত্তা

তাহিরপুর প্রতিনিধি :: সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে হাত পা ও মুখ বেঁধে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় স্বামী দেবর ও শুশুরসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে ২৮ ঘন্টার পর থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।

শনিবার (৩১ জুলাই) রাতে মামলাটি দায়ের করেন নির্যাতনের শিকার মাইফুল নেছা। তবে ২৮ ঘন্টা পার হলেও ঘটনার সাথে জড়িত কোন আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এই নিয়ে নির্যাতিত গৃহবধূ আতংকিত।

মামলায় আসামিরা হলেন, স্বামী আবু তাহের জান্নাত (২৮), শ্বশুর সাজিদ মিয়া (৬০), দেবর জাকির হোসেন (২২), বাবুল মিয়া (২৫), এবং ননাই টেন্টারপাড়া গ্রামের জান্নাতের মামা আলী হোসেন (৪০)।

মামলায় যৌতুকের জন্য নির্যাতন এবং হাত, পা ও মুখ বেঁধে নদীতে ডুবিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে।।

তাহিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুল লতিফ তরফদার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, ভুক্তভোগী গৃহবধূ বাদী হয়ে তার স্বামী, শ্বশুর, দুই দেবর ও মামা শ্বশুরের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। ঘটনার পরপরই অভিযুক্তরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। তাদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে।

জানা গেছে, তাহিরপুর উপজেলার বাদলারপাড় গ্রামের কারী নিজাম উদ্দিনের ছোট মেয়ে মাইফুল নেছার (২০) সঙ্গে জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার চৌধুরীপাড়া গ্রামের সাজিদ মিয়ার ছেলে আবু তাহের জান্নাতের (২৩) প্রেমের সম্পর্ক ছিল। আট মাস আগে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর আবু তাহের যৌতুক দাবি করলে স্ত্রী তার পিতার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা এনে দেন। কিন্তু মাস খানেক ধরে স্ত্রীর কাছে আবার মোটরসাইকেল কেনার জন্য টাকা চেয়ে চাপ দেন। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে শারীরিক নির্যাতন শুরু করেন আবু তাহের। নির্যাতন সইতে না পেরে স্ত্রী মাইফুল নেছা একমাস পূর্বে বাবার বাড়ি চলে আসেন। এনিয়ে স্বামী-স্ত্রীর পরিবারের লোকজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। গণ্যমান্যদের নিয়ে পারিবারিক সালিশও হয়।

নির্যাতিক গৃহবধূর বড় ভাই মো. এবায়দুল্লাহ বলেন, প্রেম করে আমার বোনকে বিয়ে করেছিল আবু তাহের জান্নাত। বিয়ের পর থেকেই তার স্বামী টাকার জন্য আমার বোনকে নির্যাতন শুরু করে। তার দাবির প্রেক্ষিতে ৫০ হাজার টাকা দিলেও নির্যাতন বন্ধ হয়নি। মোটরসাইকেল কেনার জন্য আরও টাকা চায় সে। কিন্তু আমরা দিতে পারিনি। আমার বোনের হাত, পা ও মুখ বেঁধে নদীতে ভাসিয়ে দিতে চেয়েছিল সে। কিন্তু মানুষ বিষয়টি দেখতে পাওয়ায় নদীতে নিক্ষেপ করতে পারেনি। ঘটনার পর পরই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় তারা।