মহররমের ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক তাৎপর্য

প্রকাশিত: ১:৩২ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ১৮, ২০২১

মহররমের ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক তাৎপর্য

আবদুর রশিদ

 

মহররমের ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক তাৎপর্য অপরিসীম। হিজরি সন গণনা করা হয় রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হিজরতের ঐতিহাসিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে। ইসলামের বিভিন্ন ইবাদত-বন্দেগি যেমন রোজা, হজ, কোরবানি, শবেকদর, শবেবরাত, আশুরা ইত্যাদি হিজরি সনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। ফলে সঠিক সময়ে ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা সম্ভব হয়। এজন্য তাফসিরে মাআরেফুল কোরআনে হিজরি সন বা চান্দ্রমাস গণনাকে ফরজে কেফায়া গণ্য করা হয়েছে। যদি উম্মতের একজনও এর ব্যবহার না করে তাহলে সমগ্র মুসলিম উম্মাহ গুনাহগার সাব্যস্ত হবে।

হিজরি সন গণনা ইসলামী সংস্কৃতির অনুসরণ। এজন্য চান্দ্রমাস হিসেবে হিজরি সন গণনা করা মুসলমানদের জন্য কর্তব্য। হিজরি সন ইসলামী ঐতিহ্যের বাস্তব নমুনা। যা নিজ ঐতিহ্যকে অনুসরণ, অনুকরণ করতে শেখায়।
মহররমের ১০ তারিখকে আশুরা বলা হয়। ইসলামে এ দিনটির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। কারণ এ দিন ইসলামের অনেক ঐতিহাসিক ও তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। আশুরার দিনটি বিশেষ তাৎপর্য লাভ করেছে ইয়াজিদ বিন মুয়াবিয়ার লেলিয়ে দেওয়া বাহিনীর হাতে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রিয় নাতি হজরত হোসাইন (রা.) ও তাঁর বিপুলসংখ্যক অনুসারীর শাহাদাতবরণের ঘটনায়। আগে থেকেও দিনটি অসামান্য মর্যাদার অধিকারী। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে এসেছে, (একদা) নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইহুদিদের কতিপয় লোকের পাশ দিয়ে অতিক্রম করেন যারা আশুরার দিনে রোজা রেখেছিল। নবী তাদের জিজ্ঞেস করলেন, এটা কীসের রোজা? উত্তরে তারা বলল, এ দিন আল্লাহ হজরত মুসা (আ.) ও বনি ইসরাইলকে ডুবে যাওয়া থেকে উদ্ধার করেছিলেন। (অন্য বর্ণনায় আছে ফিরাউনের নির্যাতন থেকে মুক্ত করেছিলেন) এবং ফিরাউনকে দলবলসহ নিমজ্জিত করেছিলেন। আর এ দিনই হজরত নুহ (আ.)-এর কিশতি জুদি পর্বতে স্থির হয়েছিল। ফলে এ দিন হজরত নুহ (আ.) ও হজরত মুসা (আ.) কৃতজ্ঞতাস্বরূপ রোজা রেখেছিলেন। তাই আমরাও এ দিন রোজা রাখি। তখন নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, মুসা (আ.)-এর অনুসরণের ব্যাপারে এবং এ দিন রোজা রাখার ব্যাপারে আমি তোমাদের চেয়ে বেশি হকদার। এরপর তিনি সেদিন (আশুরার দিন) রোজা রাখেন এবং সাহাবিদেরও রোজা রাখতে আদেশ করেন। বুখারি, মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ।

হজরত আবু কাতাদাহ (রা.) থেকে বর্ণিত। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘আমি আশাবাদী যে আশুরার দিনের রোজার অসিলায় আল্লাহতায়ালা অতীতের এক বছরের গুনাহ মাফ করে দেবেন।’ তিরমিজি।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে মহররমের ইবাদত পালনের তৌফিক দিন।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।
সুত্র ; বাংলাদেশ প্রতিদিন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ