ফজরের নামাজ আদায়ের পর পদ্মায় বিলীন মসজিদ

প্রকাশিত: ৯:৫৫ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৩০, ২০২১

ফজরের নামাজ আদায়ের পর পদ্মায় বিলীন মসজিদ

অনলাইন ডেস্ক :: পদ্মা নদীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকায় সোমবার সকাল থেকে আবারো ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনে ৪নং ফেরিঘাট সংলগ্ন সিদ্দিক কাজীরপাড়া জামে মসজিদ ও সংলগ্ন ৫টি বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়ে যায়। ফজরের নামাজ আদায়ের পর মসজিদটি পদ্মায় বিলীন হয়ে যায়।

ভাঙন আতঙ্কে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিয়েছে আরও ২০টি পরিবার। হুমকিতে রয়েছে ৪টি ফেরিঘাট, ঘাটের সংযোগ সড়ক, ২ শতাধিক পরিবারসহ বহু স্থাপনা।

সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এ ভাঙন শুরু হয়। দুপুর ১টা পর্যন্ত ভাঙন এলাকায় অবস্থান করে দেখা যায় অসহায় মানুষের আর্তনাদ। তারা ভাঙনের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে দায়ী করেন।

এদিকে ভাঙন প্রতিরোধে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ জরুরিভাবে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করতে শুরু করেছে।

সিদ্দিক কাজীরপাড়া জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ জুবায়ের হোসেন বলেন, সোমবার ভোরেও আমরা মসজিদে ফজরের নামাজ আদায় করেছি। সকাল ৮টার দিকে খবর পাই মসজিদের পাশে ভাঙতে শুরু করেছে। দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে চোখের সামনের দেখলাম মসজিদের একাংশ নদীতে বিলীন হয়ে গেল। এ সময় এলাকার ধর্মপ্রাণ মানুষের মধ্যে কান্নাকাটি শুরু হয়ে যায়।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আশরাফ হোসেন বলেন, ভাঙনে সিদ্দিক কাজীরপাড়ার সিদ্দিক কাজী, হান্নান কাজী, মান্নান কাজী, আরশাদ আলী ও বাচ্চু খানের বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়ে যায়। তবে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় তারা তাদের ঘরবাড়ি গুলো দ্রুত সরিয়ে নিতে সক্ষম হয়।

এছাড়া ভাঙন আতঙ্কে সেখানকার আরও ২০টি পরিবার তাদের বসতভিটা নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়। যারা রয়েছে তাদের মধ্যেও চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।

দৌলতদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান ভাঙন পরিস্থিতি দেখতে এসে দুর্গতদের দুর্দশা দেখে নিজেই হাউমাউ করে কেঁদে ফেলেন।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমি নিজে, আমাদের উপজেলা চেয়ারম্যান সাহেব এবং প্রশাসনের পক্ষ হতে গত কয়েক দিন ধরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ও বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষকে এখানে ভাঙনের বিষয়ে আশঙ্কার কথা বলে আসছিলাম। কিন্তু তারা যথাসময়ে ভাঙন রোধের ব্যবস্থা নেয়নি। ভাঙন শুরু হওয়ার পর জিওব্যাগ ফেলা শুরু হলেও তাতে খুব একটা কাজ হচ্ছে না। বরং এতে সরকারের ব্যয় বেশি হচ্ছে।

তিনি বলেন, গত কয়েক বছরের অব্যাহত ভাঙনে দৌলতদিয়ার ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ড নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। হাজার হাজার মানুষ সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। এ সময় তিনি ঐতিহ্যবাহী দৌলতদিয়া ঘাটকে রক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

বিআইডব্লিউটিএর আরিচা অঞ্চলের উপসহকারী প্রকৌশলী মকবুল হোসেন জানান, ভাঙনের খবর পেয়ে তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে জরুরিভিত্তিতে জিওব্যাগ ডাম্পিং করতে শুরু করেছি। এটা অব্যাহত থাকবে।

তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, দ্রুত ভাঙন রোধ করতে না পারলে এখানকার ৩, ৪, ৫ ও ৬নং ফেরিঘাট, ঘাটের পাকা সড়ক, বহু ঘরবাড়ি ও স্থাপনা টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ