নাগরিক প্ল্যাটফর্মের জরিপ : করোনায় আর্থিক সংকটে ৯০ শতাংশ এনজিও

প্রকাশিত: ২:০০ অপরাহ্ণ, জুলাই ৯, ২০২০

নাগরিক প্ল্যাটফর্মের জরিপ : করোনায় আর্থিক সংকটে ৯০ শতাংশ এনজিও

অনলাইন ডেস্ক ::
দেশে বেশিরভাগ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) অর্থের প্রধান উৎস হল বিদেশি অর্থ। কিন্তু করোনার কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে স্থবিরতা নেমে এসেছে। ফলে দেশে কাজ করছে এমন ৯০ শতাংশ এনজিওই আর্থিক সংকটে পড়েছে।

এছাড়া মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের নিরাপত্তা সামগ্রিক নেই। এ অবস্থার উত্তরণে সরকারের আর্থিক ও নীতি সহায়তা জরুরি। এসডিজি বিষয়ক এক নাগরিক প্ল্যাটফর্মের জরিপে এ তথ্য উঠে আসে।

রাজধানীতে বুধবার এক ভার্চুয়াল সংলাপে এসডিজি প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য মতামত জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন। দি হাঙ্গার প্রজেক্টের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. বদিউল আলম মজুমদার অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

এসডিজি প্ল্যাটফর্মের কোর গ্রুপের সদস্যদের মধ্যে সংলাপে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক জেমস পি গ্র্যান্ট স্কুল অব পাবলিক হেলথের অ্যাডভাইজার ড. মুশতাক রাজা চৌধুরী, সিপিডির বিশেষ ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী এবং নিউএজ গ্রুপের ভাইস-চেয়ার আসিফ ইব্রাহীম।

সংলাপে করোনা ছাড়াও ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে তৃণমূল পর্যায়ে স্থানীয় নাগরিক সমাজ ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা বিভিন্ন সেবা ও উন্নয়নমূলক কাজের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে পরিচালিত মতামত জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করা হয়।

জরিপের তথ্য অনুযায়ী, দেশের স্থানীয় পর্যায়ে কাজ করছে এমন প্রায় ৯০ শতাংশ বেসরকারি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানে সম্পদের অপ্রতুলতা রয়েছে। প্রায় ৭৭ শতাংশ এনজিও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছে।

মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে এমন ৬৮ শতাংশ এনজিও’র মাঠকর্মীদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা সামগ্রীর (যেমন, পিপিই, মাস্ক ইত্যাদি) অভাব রয়েছে। দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে নাগরিক সমাজ ও বেসরকারি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান নানাবিধ ভূমিকা রাখলেও সরকারি নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে পর্যাপ্ত স্বীকৃতির অভাব রয়েছে।

গণমাধ্যমেও তাদের অবদানের প্রচারণা বাড়ানো দরকার। অতিমারীর বিভিন্ন ঝুঁকি মোকাবেলায় সঠিক ও বিজ্ঞানসম্মত তথ্য প্রচারে ধর্মীয় নেতাদের যুক্ত করা প্রয়োজন। চলমান অতিমারীর নানামুখী চ্যালেঞ্জ থেকে উত্তরণে জাতীয় নীতি কাঠামো প্রণয়ন করে সেখানে স্থানীয় নাগরিক সমাজ ও বেসরকারি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করতে হবে।

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, অতিমারীর সময়কালে স্থানীয় পর্যায়ে তৎপর বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোকে সরকারি নীতি-কৌশল ও কর্মপন্থার সঙ্গে যুক্ত করা হয়নি। এ অবস্থায় জাতীয় পর্যায়ে একটি নীতি-কৌশল গ্রহণ করে স্থানীয় পর্যায়ে তা দ্রুত বাস্তবায়ন করা দরকার।

তিনি বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ও স্থানীয় প্রশাসনকে এ বিষয়ে সচেতন ও কার্যকরভাবে যুক্ত করতে হবে। তৃণমূল পর্যায়ে তৎপর বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলো এসডিজি বাস্তবায়ন বিশেষ করে পিছিয়ে থাকা মানুষদের উন্নতিকল্পে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তাই এদের এই দুর্যোগকালীন সময়ে টিকে থাকতে সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক প্রণোদনা ও নীতি সহায়তা জরুরি।

সংলাপে খুলনার রূপান্তরের নির্বাহী পরিচালক স্বপন কুমার গুহ, বরিশালের আভাসের নির্বাহী পরিচালক রহিমা সুলতানা কাজল, গাইবান্ধার এসকেএফ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রাসেল আহমেদ লিটন, চট্টগ্রামের ইপসার নির্বাহী পরিচালক আরিফুর রাহমান, সিলেটের এফআইভিডিবি নির্বাহী পরিচালক বজলে মুস্তফা রাজি, কুষ্টিয়ার মুক্তি নারী ও শিশু উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মমতাজ আরা বেগম এবং রাজশাহীর এসিডির নির্বাহী পরিচালক সালিমা সারোয়ার বক্তব্য রাখেন।