ছাতকে ফের বন্যা, বাড়ছে দুর্ভোগ বিপর্যস্ত জনজীবন

প্রকাশিত: ১২:২৭ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ১২, ২০২০

ছাতকে ফের বন্যা, বাড়ছে দুর্ভোগ বিপর্যস্ত জনজীবন
 ছাতক প্রতিনিধি : ছাতকে ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ফের বন্যা দেখা দিয়েছে। প্রায় দু’সপ্তাহর ব্যবধানে আবারও ছাতক পৌর এলাকাসহ উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ও হাট-বাজার বন্যা প্লাবিত হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় এখানে প্রায় ১৪০মি.মি. বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেয়া তথ্যানুযায়ী সুরমা নদীর পানি ছাতক পয়েন্টে বিপদসীমার প্রায় ১৭০সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া চেলা নদীর পানি বিপদসীমার প্রায় ১৮০সেন্টিমিটার এবং পিয়াইন নদীর পানি বিপদসীমার প্রায় ১৯০সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবল বেগে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন উপজেলার প্রায় দুই লক্ষাধিক মানুষ। ভারি বর্ষণে সুরমা নদীসহ সকল নদ-নদীতে পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতি আবারও ভয়াবহ আকার ধারণ করার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। শনিবার পর্যন্ত ক’দিনের টানা ভারি বর্ষণে শহরের প্রধান সড়কসহ অলি-গলিতে বানের পানি প্রবেশ করেছে। এতে মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাত্রায় দেখা দিয়েছে চরম বিপর্যয়। বন্যায় তলিয়ে গেছে উপজেলার বিভিন্ন রাস্তাঘাট ও মৎস্য খামার। সদ্য বপন করা আমন ধানের বীজতলাসহ শাক-সবজির বাগান বন্যা কবলিত হওয়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মূখীন হয়েছেন কৃষকরা। প্লাবিত হয়েছে বহু কাচা-পাকা ঘরবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, দোকান-পাঠ ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। উপজেলা পরিষদ ও পৌর কার্যালয়ের আঙ্গিনায় বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। শহরের উপর দিয়ে চলাচল করছে ছোট-ছোট নৌকা। বন্যার পানি প্রবেশ করায় শহরসহ গ্রামীণ অধিকাংশ দোকান ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। সীমান্তবর্তী ইসলামপুর ও নোয়ারাই ইউনিয়নসহ নি¤œাঞ্চলের কয়েকশতাধিক ঘরবাড়িসহ বাড়ির আঙ্গিনায় বন্যার পানি প্রবেশ করায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন অন্তত দুই লক্ষাধিক মানুষ। ছাতক-গোন্দিগঞ্জ-সিলেট, ছাতক-সুনামগঞ্জ, ছাতক-জাউয়া, ছাতক-দোয়ারা সড়কের বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে গেছে বন্যার পানিতে। শনিবার রাত থেকে উপজেলার সাথে জেলা সদরসহ দেশের সকল অঞ্চলের সড়ক ও রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। প্রবল বর্ষণে সুরমা, পিয়াইন ও চেলা নদীতে পাথর ও বালুবাহী বার্জ-কার্গো ও বাল্কহেড নৌকায় লোডিং-আনলোডিং বন্ধ থাকায় বেকার হয়ে পড়েছে কয়েকহাজার শ্রমিক। এছাড়া হাওর-বিলসহ সর্বত্র ঢলের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় গো-খাদ্যের অভাবে গবাধি পশু নিয়েও চরম বিপাকে পড়েছেন বানবাসি লোকজন। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ গোলাম কবির জানান, বন্যার্তদের জন্য সরকারীভাবে তিনটি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বন্যা দূর্গত মানুষদের নোয়ারাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তাতিকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চন্দ্রনাথ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়ার জন্য বলা হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় মেডিকেল টিম গঠনসহ সবধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে তিনি জানান। ##

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ