করোনায় মৃত স্বামীর লাশ সৎকারে ১৬ ঘণ্টা অপেক্ষা স্ত্রীর

প্রকাশিত: ৩:৫৪ অপরাহ্ণ, জুলাই ১২, ২০২০

করোনায় মৃত স্বামীর লাশ সৎকারে ১৬ ঘণ্টা অপেক্ষা স্ত্রীর

অনলাইন ডেস্ক :;

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে করোনায় আক্রান্ত হয়ে স্বামীর মৃত্যু হয়েছিল শুক্রবার রাত ১১টায়। স্বাস্থ্য দফতর ও পুলিশের টানাপোড়েনে সৎকার না হওয়ায় প্রায় ১৬ ঘণ্টা স্বামীর মরদেহ আগলে বসে থাকতে হলো স্ত্রীকে।

অবশেষে শনিবার বিকাল ৩টার দিকে পৌরসভার শববাহী গাড়ি দেয়ায় মৃতদেহ সৎকারের ব্যবস্থা হয়েছে। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

হাওরার নেতাজি সুভাষ চন্দ্র রোডসংলগ্ন হালদারপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। এলাকার বাসিন্দা ও মৃতের আত্মীয়দের অভিযোগ, রাত থেকে পুলিশ ও জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে বারবার ফোন করা হলেও মরদেহ নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়নি।

হাসপাতালের চিকিৎসকের কাছ থেকে ডেথ সার্টিফিকেট পেতেও হিমশিম খেতে হয়েছে। এমনকি স্থানীয় বিধায়ক ও রাজ্যের সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায় বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করারও প্রায় চার ঘণ্টা পর শববাহী গাড়ি নিয়ে এসে স্বাস্থ্য দফতরের পাঠানো ডোম শিবপুর শ্মশানে দেহ নিয়ে যান।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ দিন ধরেই কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন ৬৫ বছর বয়সী ওই বৃদ্ধ। চার মেয়ের বিয়ে হয়ে যাওয়ায় স্ত্রীকে নিয়ে একাই থাকতেন তিনি।

মৃতের এক জামাই জানান, স্টেন্ট লাগানোর জন্য দুই সপ্তাহ আগে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরেই তার শ্বশুরের কোভিড পরীক্ষা করানো হয়। সেই রিপোর্ট পজিটিভ আসে।

যেহেতু তার করোনার কোনো উপসর্গ ছিল না, তাই তাকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ১৪ দিন বাড়িতে রাখার পর ফের হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন।

মৃতের জামাই বলেন, এর পর আমরা তাকে বাড়িতে নিয়ে আসি। তার পাঁচ দিনের মাথায় শুক্রবার রাত ১১টায় তিনি মারা যান। এর পর হাসপাতাল, পুলিশ- সব জায়গায় ফোন করেছি। কিন্তু কেউ মৃতদেহ নিতে আসেনি। চরম হয়রানি পোহাতে হয়েছে আমাদের।

হাওরা সিটি পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, রাতে ডোম পাওয়া যায়নি। তাই স্বাস্থ্য দফতরকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু স্বাস্থ্য দফতরও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

আমাদের প্রশ্ন– বাড়িতে থাকা কোভিড রোগী মারা গেলেও কি পুলিশকে নিয়ে যেতে হবে? স্বাস্থ্য দফতরের কি কোনো দায়িত্বই নেই?’

জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক পদস্থ কর্মকর্তা বলেন, অত রাতে কর্মী পাওয়া যায়নি বলে পুলিশকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু তারাও ব্যবস্থা নেয়নি। পুলিশকে আমরা সব ধরনের সুরক্ষা-সরঞ্জাম ও পোশাক দিতে চেয়েছিলাম। পুলিশ তাও নিতে চায়নি।