এত বছর ঘটেনি এখন কেন ঘটছে: আ জ ম নাছির

প্রকাশিত: ৯:০০ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ২, ২০২১

এত বছর ঘটেনি এখন কেন ঘটছে: আ জ ম নাছির

চট্টগ্রাম ব্যুরো

চট্টগ্রাম মাহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) সংঘটিত সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনাকে অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক বলে অভিহিত করেছেন। নওফেল মেডিকেল কলেজে তার কোনো অনুসারী বা গ্রুপ নেই বলে দাবি করলেও আ জ ম নাছির জানান, চমেকে ছাত্রলীগকে পুনর্গঠন করেছেন তিনি। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলেও ছাত্রলীগ পূর্ণ প্যানেলে বিজয়ী হয়েছে চমেকে। বর্তমানে ছাত্রলীগের যে কমিটি চমেকে আছে, তাও বৈধ। কিন্তু ছাত্ররাজনীতি করতে গেলেই কিংবা আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে হামলা বা সংঘাত-সংঘর্ষের পথ বেছে নিতে হবে কেন! তাছাড়া নিকট অতীতে ২০-২৫ বছর কোনো ধরনের সংঘাতের কারণে মেডিকেল কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করার ঘটনা ঘটেনি। ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার ঘটনাও ঘটেনি। এখন কেন এমন পরিস্থিতি তৈরি হলো, এ প্রশ্ন তোলেন নাছির।

সোমবার সন্ধ্যায় যুগান্তর প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে চমেকে সাম্প্রতিক পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে এ প্রশ্ন তোলেন নাছির। তিনি বলেন, শুক্রবার একটি পক্ষ ছাত্রাবাসে দুই ছাত্রের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছে। হামলা করে তারা ফেসবুকে উল্লাস করে ছবি দিয়েছে। ভবিষ্যতে আরও হামলা করা এমনকি হত্যারও হুমকি দেওয়া হয়েছে। দুই ছাত্রের ওপর হামলার মতো দুঃখজনক ঘটনার জেরে পরদিন আরও এক ছাত্রের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। অথচ এ ধরনের হামলা, সংঘাত-সংঘর্ষ কারও কাম্য নয়। মেডিকেল কলেজে ছাত্ররা পড়তে আসে। তারা মেধাবী। প্রয়োজনে তারা ছাত্ররাজনীতি করবে না। কিন্তু এভাবে একের ওপর অন্যের দখল প্রতিষ্ঠায় বাঁকা পথ বেছে নেওয়ার কোনো মানে হয় না। আ জ ম নাছির আরও বলেন, দেখা গেছে যাদের ওপর হামলা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধেই মামলা করা হচ্ছে। নিরীহ ছাত্রদের পুলিশ গ্রেফতার করছে। প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে পুলিশ প্রশাসনকে ওভার ফোনে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। এমন লোকজন দিয়ে ফোন করানো হচ্ছ যারা মেডিকেল কলেজের কেউ নন। প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে।

আ জ ম নাছির আরও বলেন, ‘আমি চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালেই মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগকে পুনর্গঠন করি। এজন্য বিভিন্ন চড়াই-উতরাই পেরুতে হয়েছে। জাসদের অবস্থান থাকাকালে এবং বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলেও মেডিকেল কলেজে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড শক্তিশালী ছিল। তাদের প্যানেলের বিপরীতে ছাত্রলীগের পূর্ণ প্যানেল বিপুল ভোটে জয়ী হওয়ার নজির আছে। কিন্তু কখনোই মেডিকেল কলেজের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হতে দেয়নি ছাত্রলীগ। সেই ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন আছে। এখন কেউ যদি বলেন, অন্য কারও ব্যবসা-বাণিজ্যের স্বার্থে ছাত্ররা ব্যবহার হচ্ছে, চমেকে ছাত্রলীগের কমিটি নেই। ছাত্র সংসদ নেই বা ছিল না। তা ঠিক না।’

আ জ ম নাছির বলেন, ‘প্রয়োজনে মেডিকেল কলেজে ছাত্ররা রাজনীতি করবে না। মারামারি করে, রক্ত ঝরিয়ে ক্যাম্পাসে অস্থিরতা তৈরি করার কোনো যৌক্তিকতা নেই। যারা শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে কটাক্ষ করে যারা স্লোগান দিয়েছিল, তারাই এখন মেডিকেল কলেজে ছাত্রলীগার সেজে ত্যাগী ছাত্রলীগ নেতাকর্মী ও সাধারণ ছাত্রদের ওপর হামরা চালাচ্ছে। দুই বছর ধরে চমেকের শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। আমি চাই, চমেকে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় থাকুক। সাম্প্রতিক ঘটনাবলির জন্য কারা দায়ী, তা খুঁজে বের করা হোক। দায়ীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হোক। তবেই চমেক ক্যাম্পাসে আগের মতো শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরে আসবে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ