পদ্মশ্রী পুরস্কার গ্রহণ করলেন চারজন

প্রকাশিত: ৬:০৮ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১০, ২০২১

পদ্মশ্রী পুরস্কার গ্রহণ করলেন চারজন

স্বপন দেব, নিজস্ব প্রতিবেদক :: সন্জীদা খাতুন ও সাজ্জাদ আলী জহির ২০২১ সালের এবং সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী ও ড. এনামুল হক ২০২০ সালের পুরস্কার পান।
ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছ থেকে গতকাল মঙ্গলবার দেশটির সম্মানজনক ‘পদ্মশ্রী’ পুরস্কার গ্রহণ করলেন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সন্জীদা খাতুন ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সাজ্জাদ আলী জহির। ‘পদ্মশ্রী’ ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান।
সন্জীদা খাতুন ও সাজ্জাদ আলী জহির নয়াদিল্লিতে রাষ্ট্রপতি ভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পুরস্কার গ্রহণ করেন। গতকালের অনুষ্ঠানে ২০২১ সালের পদ্মবিভূষণ, পদ্মভূষণ ও পদ্মশ্রী পুরস্কার দেওয়া হয়। ভারতের উপরাষ্ট্রপতি ভেঙ্কাইয়া নাইডু এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
গত ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে ভারত সরকার ২০২১ সালের পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে। শিল্পকলা, শিক্ষা, বাণিজ্য, সাহিত্য, বিজ্ঞান, খেলাধুলা, সমাজসেবা ও সরকারি ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য এই পুরস্কার দেওয়া হয়ে থাকে।
বিশিষ্ট রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী, গবেষক ও শিক্ষক সন্জীদা খাতুন বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। তিনি এর সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদেরও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তিনি। সন্জীদা খাতুন ১৯৫৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক এবং ১৯৫৫ সালে পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পান। ১৯৭৮ সালে বিশ্বভারতী থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন তিনি।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ৪ নম্বর সেক্টরের অধীনে দ্বিতীয় গোলন্দাজ বাহিনীকে সংগঠিত করেন। যুদ্ধে সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে বীরপ্রতীক খেতাব দেয়। সাজ্জাদ আলী জহির ১৯৬৯ সালের শেষে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে ক্যাডেট হিসেবে যোগ দেন। ১৯৭১ সালের আগস্ট মাসে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আর্টিলারি কোরে কমিশন লাভ করেন। আগস্টের শেষেই তিনি পাকিস্তান থেকে পালিয়ে এসে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বাংলাদেশের স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন।
এর আগে গত সোমবার নয়াদিল্লিতে রাষ্ট্রপতি ভবনে ২০২০ সালের ‘পদ্ম’ পুরস্কার দেওয়া হয়। গত বছর বাংলাদেশের প্রয়াত পররাষ্ট্রসচিব ও হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলীকে ‘পদ্মভূষণ’ ও প্রত্নতত্ত্ববিদ অধ্যাপক ড. এনামুল হককে ‘পদ্মশ্রী’ পুরস্কার দেয়। ড. এনামুল হক ভারতের রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন।
অন্যদিকে সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলীর পক্ষে ‘পদ্মভূষণ’ গ্রহণ করেন তাঁর স্ত্রী তুফা জামান আলী।
এ বছর পদ্ম পুরস্কার পাওয়া বিদেশিদের মধ্যে জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেও ছিলেন। তবে তিনি পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না।

উল্লেখ্য, ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার হলো ‘ভারতরত্ন’। ‘পদ্মবিভূষণ’ ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার। ‘পদ্মভূষণ’ তৃতীয় ও ‘পদ্মশ্রী’ চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার।
অন্য রাষ্ট্রীয় পুরস্কারগুলোর মতো অর্থ বা বিশেষ সুবিধা নেই পদ্ম পুরস্কারে। পুরস্কার বিজয়ীরা ভারতের রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষর ও সিলমোহরযুক্ত সনদ পান। এ ছাড়া তাঁরা পদকের একটি রেপ্লিকা পেয়ে থাকেন।

সিলনিউজবিডি ডট কম / এস:এম:শিবা