সিলেটের শিশু শিল্পী রিমার উপর নির্ভরশীল একটি পরিবার

প্রকাশিত: ৯:২৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৭, ২০২০

সিলেটের শিশু শিল্পী রিমার উপর নির্ভরশীল একটি পরিবার

অনলাইন ডেস্ক :;

রিমা আক্তার রুমি। বয়স আট বছর। এই বয়সে অন্য শিশুদের সাথে পুতুল খেলার সময় তার। কিন্তু পুতুল খেলার সুযোগ নেই তার। এই বয়সেই সংসারের হাল ধরেছেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান গেয়ে যে অর্থ উপার্জন হয়, তাই দিয়ে সংসার পরিচালনা করে রুমি। মায়ের মুখে হাসি ফোটাতে পারে বলে রুমিও সুখি। শত কষ্টের মাঝেও সে তার মায়ের মুখের হাসি ধরতে রাখতে চায়।

রিমা আক্তার রুমি সিলেটের এক শিশু শিল্পী। মা ও ভাইকে নিয়ে বসবাস করে সিলেট দক্ষিণ সুরমার সিলামের একটি ভাড়াটে বাসায়।

এতোটুকু শিশুর উপর সংসারের দায়িত্ব সম্পর্কে বলতে গিয়ে রিমার মা ফাতেমা বেগম দৈনিক বায়ান্নের কাছে তুলে ধরেন চরম নির্মমতার কথা।

তিনি জানান, অন্য দশটি সুখি পরিবারের মতো তাদের পরিবারেও সুখের কমতি ছিল না। কিন্তু একটি ষড়যন্ত্র তাদের সব কিছু তছনছ করে দিয়েছে। রিমার বাবা একটি ষড়যন্ত্রমুলক মামলায় কারাবন্দি হওয়ার চরম অসহায়ত্ব নেমে আসে পরিবারে।

তিনি বলেন, তাদের পুরো পরিবারটি সংস্কৃতিমনা। রিমার বাবা বাংলাদেশ বেতারের শিল্পী ছিলেন। তাদের বড় মেয়ে রহিমা আক্তার রুহি ফোক গানের জনপ্রিয় শিল্পী ছিলেন। বিয়ের পর রুহি চলে গেছে স্বামীর সংসারে। বড় ছেলে ইমন আহমদ কি বোর্ডে পারদর্শী। বিয়ের পর সেও পৃথক হয়ে গেছে।

এখন সাথে আছেন ১৭ বছর বয়সের লিমন ও ৮ বছর বয়সের রিমা। লিমন ঢোলে বিশেষ পারদর্শী। এই ২ সন্তানকে নিয়ে ফাতেমা অকুল সাগরে পড়েন। ছোট এই দুই সন্তানকে নিয়ে শহর ছেড়ে আশ্রয় নেন গ্রামের ছোট একটি বাসায়। দুই সন্তানের লেখা পড়া বন্ধ হয়ে যায়।

ফাতেমা জানান, ছোট মেয়ে রিমাকে গানের তালিম দিতে থাকেন। কয়েক মাসের মধ্যেই সিলেটের আঞ্চলিক গানসহ লোসংগীতে রিমা নিজকে তৈরি করে নেয়। এর পর থেকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ডাক পড়ে। ওইসব অনুষ্ঠান থেকে যে অর্থ আয় হয়, তা দিয়ে তাদের সংসার চলতে থাকে। কিন্তু করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ার পর তাদের পরিবারের নেমে আসে চরম বিপর্যয়। এখন তাদের দিন কাটে খেয়ে আর না খেয়ে।