সিলেটের গোয়াইনঘাটে বালু উত্তোলন বন্ধ : দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা

প্রকাশিত: ৮:৪০ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৮, ২০২০

সিলেটের গোয়াইনঘাটে বালু উত্তোলন বন্ধ : দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা

গোয়াইনঘাট সংবাদদাতা: সিলেটের গোয়াইনঘাটে নদীর তলদেশ ভরাট হওয়ায় ঘন ঘন প্লাবন ও বন্যায় যেমন ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলাবাসী। তেমনি অন্যদিকে বালু-পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকায় অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতর দিনযাপন করছে হাজার হাজার শ্রমিক পরিবার। তাদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে বাতাস। কিন্তু দেখার কেউ নেই।

একদিকে করোনা-বন্যা, অপরদিকে জাফলং ও বিছনাকান্দি পাথর কোয়ারী বন্ধ থাকায় উপজেলাবাসীর জন্য মরার উপর খাড়ার ঘাঁ হয়ে পড়েছে। বন্ধ হয়ে যাচ্ছে মানুষের জীবন চালিকা শক্তি। বেজে ওঠতে শুরু করেছে মহাদুর্ভোগ ও দুর্ভিক্ষের ঘনঘন্ট। দেশের স্বর্ণের খণি বলে খ্যাত পাথর-বালুময় বৃহত্তর উপজেলা গোয়াইনঘাটের তিন লাখ বনি আদমের এখন যাওয়ার কোন জায়গা নেই। সূযোগ নেই বন্দুকের নলের মূখে সীমান্ত পেরিয়ে ভারত চলে যাওয়ার।

ভারতের পর্বতময় মেঘালয়া রাজ্যের পাদদেশে অবস্থিত গোয়াইনঘাট উপজেলায় পাহাড়ি ঢল থাকে বছরে প্রায় ৮ মাস। খননের অভাবে নদীগুলোর তলদেশ একেবারে ভরাট হয়ে যাওয়ায় সেগুলো পাহাড়ি ঢলের পানির ধারন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। ফলে দীর্ঘ প্রায় ৮মাস প্রত্যহ লেগে থাকে বন্যা আর বন্যা। পাশাপাশি নদী খনন ও পাথর বালু উত্তোলন বন্ধ থাকায় উপজেলাবাসীর আর্থ-সামাজিক অবস্থা ও অবস্থান ক্রমশঃ দুর্বিসহ এবং ভয়াবহ রূপ ধারনা করে চলেছে।

অনেক পূর্ব থেকেই সরকারী সিদ্ধান্তে উপজেলার বিছনাকান্দি ও জাফলং পাথর কোয়ারী বন্ধ থাকায় শ্রমজীবী লোকের মধ্যে হাহাকার দেখা দিয়েছিল। এরই মধ্যে আবির্ভূত হয় বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস। ফলে একদিকে মৃত্যুর ঝুকি ও অন্যদিকে ছড়িয়ে পড়ে খদ্য সংকট। এই দুটি মিলে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের প্রতিধ্বনি শুনা যাচ্ছে উপজেলার লাখ লাখ মানুষের মধ্যে। উপজেলার এই শ্রমজীবি পরিবারগুলোর একমাত্র ভরসা জাফলংয়ে বালু-পাথর উত্তোলন করে জীবিকা নির্বাহ।

সেই আশা নিয়ে দীর্ঘ অপেক্ষায় পর সম্প্রতি নদী থেকে বালু উত্তোলনের কাজ শুরু করেছিল শ্রমিকরা। নৌকায় বালু উত্তোলন করে দৈনিক একজন শ্রমিক হাজার খানেক টাকা কামাই করা সম্ভব ছিল তাদের। কিন্তু অকস্ম্যাৎ সেই উর্পাজনের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিকল্প কোন কর্মসংস্থান না থাকায় অনাহারে ‘অর্ধাহারে হাহাকার ছড়িয়ে পড়েছে নিম্ন আয়ের হাজার হাজার শ্রমিক পরিবারে।

মাস খানেক আগেও এই শ্রমিক পরিবার গুলো সাহায্যের জন্য বিত্তবাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছিল ঠিকই। কিন্তু নদীতে পানি আসার পর তারা কারো কাছে গিয়ে সাহায্য চাইতেও পারছে না। পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রও বন্ধ তাদের। এ অবস্থায় তাদের জীবন-জীবিকা নির্বাহের সকল পথ রূদ্ধশ্বাস বেড়াজাল লৌহযবণিকায় বন্দী হয়ে পড়েছে।

তাই গোয়াইনঘাট উপজেলার লাখ লাখ বনি আদমকে বন্যা-প্লাবণ ও দুর্ভিক্ষ থেকে রক্ষার্থে বাংলাদেশ সরকারের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী সিলেট-৪ আসনের এমপি ইমরান আহমদ ও স্থানীয় প্রশাসনের আশু সদয়দৃষ্টি কামনা করছেন তারা।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ