সয়াবিনের দাম বাড়ালে কঠোর ব্যবস্থা

প্রকাশিত: ২:০৪ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৬, ২০২২

সয়াবিনের দাম বাড়ালে কঠোর ব্যবস্থা

সিলনিউজবিডি ডেস্ক  :: অনুমোদন ছাড়া সয়াবিনসহ ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানো হলে সংশ্নিষ্ট কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে সরকার। বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সব ধরনের ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এমন অবস্থান জানা গেছে। ওই সমিতি তাদের চিঠিতে লিখেছে, অনুমোদন না পেলেও তারা ৮ জানুয়ারি থেকে ভোজ্যতেলের নতুন দর কার্যকর করবে।

সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে জানানো হয়, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন ৮ টাকা, খোলা সয়াবিন ৯ টাকা এবং পাম অয়েলের দাম ১০ টাকা বাড়ানো হবে। আগামী ৮ জানুয়ারি থেকে কোম্পানিগুলো নতুন দর কার্যকর করবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এভাবে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানো যায় না। কারণ নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যের দাম ‘এসেনসিয়াল কমোডিটি অ্যাক্ট’ অনুযায়ী সরকার নির্ধারণ করে দেয়। আইন অনুযায়ী কোম্পানি নিজে দাম বাড়াতে পারে না। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে কোম্পানিগুলো দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করতে পারে। প্রস্তাব যৌক্তিক কিনা তা বিশ্নেষণ করতে ট্যারিফ কমিশনের কাছে পাঠায় মন্ত্রণালয়। ট্যারিফ কমিশন আন্তর্জাতিক বাজার, পরিবহন খরচসহ সামগ্রিক বিষয় পর্যালোচনা করে মতামত দেয়। সেই মতামত নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন একটি জাতীয় কমিটির বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়। কমিটি পক্ষে মত দিলে দাম বাড়ে, বিপক্ষে দিলে বাড়ে না। আর দাম বাড়ানোর ঘোষণাও কমিটি দিয়ে থাকে।

এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর একটি প্রক্রিয়া রয়েছে এবং তা আইনসিদ্ধ। প্রক্রিয়ার বাইরে দাম বাড়ানোর সুযোগ নেই। এরপরও কোনো পক্ষ যদি তা করে, তাহলে সরকার ব্যবস্থা নিতে পারে। কাস্টমস, ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর, বাজার মনিটরিং কমিটির মতো বিভিন্ন টুলস রয়েছে সরকারের।’ তিনি বলেন, ভোজ্যতেল কোম্পানিগুলোর প্রস্তাব পর্যালোচনার জন্য ট্যারিফ কমিশনে পাঠানো হয়েছে।

ট্যারিফ কমিশন সূত্র জানিয়েছে, কোম্পানিগুলো দাবি করেছে যে, তারা বর্তমানে যেসব ভোজ্যতেল বাজারে ছাড়বে, সেগুলো গত বছরের সবচেয়ে বেশি দামে কেনা। ফলে দাম না বাড়ালে লোকসানে পড়তে হবে। কিন্তু অনেক সময় বিশ্ববাজার থেকে কম দামে অপরিশোধিত তেল কিনলেও তারা স্থানীয় বাজারে কমায় না।

গত এক বছরে ভোজ্যতেলের দাম কয়েক দফা বেড়েছে। মাঝে আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমলেও কোম্পানিগুলো দাম কমায়নি। অন্যদিকে, বর্তমানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার ঊর্ধ্বমুখী। মূল্যস্ফীতি প্রতি মাসে বাড়ছে। দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমে গেছে। জানা গেছে, এ অবস্থায় ভোজ্যতেলের দাম বাড়িয়ে মানুষের দৈনন্দিন খরচ আর বাড়াতে চায় না সরকার। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে টানা চার মাস ধরে মূল্যস্ফীতিতি ঊর্ধ্বমুখী। গত নভেম্বরে মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৯৮ শতাংশ যা ১৩ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।

টিসিবির তথ্য অনুযায়ী এক বছরের ব্যবধানে বিভিন্ন ধরনের ভোজ্যতেলের দাম ২৪ থেকে ৩৮ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। গতকাল রাজধানীর বাজারগুলোতে খোলা সয়াবিন প্রতি লিটার ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। পাম অয়েল বিক্রি হয়েছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা দরে। ট্যারিফ কমিশনের মতে, দেশে বছরে প্রায় ২০ লাখ টন ভোজ্যতেল লাগে এবং চাহিদা মেটাতে ৯০ শতাংশ আমদানি করতে হয়।

সাকিব আহমেদ / ০৬ জানুয়ারি

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
14151617181920
21222324252627
28293031   
       
1234567
15161718192021
293031    
       
22232425262728
2930     
       
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ