আন্তর্জাতিক চুক্তি ও তথাকথিত অনুদান

প্রকাশিত: ১২:২৯ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ৭, ২০২২

আন্তর্জাতিক চুক্তি ও তথাকথিত অনুদান

মেজর আখতার (অব.) সিলনিউজবিডি ডেস্ক :: বৈদেশিক সহায়তার আওতায় নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অনুদান পাওয়া অব্যাহত রাখতে এখন থেকে নাকি চুক্তি করতে হবে বাংলাদেশকে। ডিসেম্বরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে চুক্তি সইয়ের সম্মতিপত্র দেওয়ার কথা ছিল। সরকার এ বিষয়ে দ্বিতীয় দফায় সময় চেয়েছে। এ ছাড়া আগে পাওয়া অনুদান কোথায় কীভাবে ব্যবহৃত হয়েছে তা-ও জানতে চেয়েছে নাকি যুক্তরাষ্ট্র। এগুলো আমরা পত্রপত্রিকার মাধ্যমে জানতে পেরেছি। সত্যিকারের ঘটনা আমাদের জানা নেই। তবে এ-সংক্রান্ত যে কোনো চুক্তি যাতে বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী না হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের মর্জিমাফিক মানবাধিকার সুরক্ষার স্বার্থে যুক্তরাষ্ট্র বিদেশি কোনো নিরাপত্তা বাহিনীকে বিভিন্ন পর্যায়ে অনুদান দেয়। দেশটির বৈদেশিক সহায়তা আইনের আওতায় এমন অনুদান পায় বাংলাদেশও। এর আওতায় বিভিন্ন বাহিনীর সক্ষমতা বাড়াতে প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জাম পায়। বিভিন্ন মাধ্যম থেকে পাওয়া তথ্যনুযায়ী বাংলাদেশ ২০১৫ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৬৫০ কোটি টাকা অনুদান পেয়েছে। এ সহায়তার মধ্যে বৈদেশিক সামরিক অর্থায়ন এবং আন্তর্জাতিক সামরিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের বিষয়গুলো রয়েছে। ওই সহায়তার উল্লেখযোগ্য অংশ বঙ্গোপসাগরে নিরাপত্তা বাড়াতে বাংলাদেশকে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ২০১৩ ও ২০১৫ সালে বাংলাদেশকে দুটি হ্যামিলটন কাটার নৌজাহাজ দেয় যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশ নেয়। বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী বাহিনীকে সহায়তার জন্য ৫০টি মাল্টি রোল আর্মার্ড পারসোন্যাল ক্যারিয়ার দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০০৫ সাল থেকে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি ও প্রশিক্ষণের জন্য প্রায় ৩৮০ কোটি টাকা ব্যয় করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর পাশাপাশি দেশটি থেকে ২০১২ সালে ১৮ কোটি ডলার তথা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ হাজার ৫৪৮ কোটি টাকার (প্রতি ডলার ৮৬ টাকা হিসাবে) চারটি সি-১৩০ পরিবহন বিমান পেয়েছে বাংলাদেশ। তবে তা অনুদানের মধ্যে কি না এখন পর্যন্ত কারও থেকে নিশ্চিত করা যায়নি। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র নাকি বাংলাদেশকে ১১০ কোটি টাকা মূল্যের ড্রোন দেওয়ার কথাও জানিয়েছে। যদিও এ ড্রোনগুলোর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে জনমনে যথেষ্ট প্রশ্ন রয়েছে।
অনেক বিজ্ঞজন বিশেষ করে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব বলছেন, যা বিভিন্ন পত্রপত্রিকার মাধ্যমে জানা যায়, ‘বাংলাদেশের সার্বিক নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা রয়েছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এটি জোরদার করার চেষ্টাটা একটি স্বাভাবিক ঘটনা। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বহুমাত্রিক সম্পর্কের আওতায় নানান সহায়তার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে নিরাপত্তা সহযোগিতা।’ তাহলে এখন ধরে নিতে হচ্ছে লাখ লাখ মানুষের আত্মত্যাগের মাধ্যমে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করার জন্য আমাদের যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বহুমাত্রিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে হচ্ছে যার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো নিরাপত্তা সহযোগিতা! ভালো, খুবই মহৎ উদ্যোগ! সেই সঙ্গে আরেকটি বিষয় সামনে উঠে এসেছে, তা হলো যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার উল্লেখযোগ্য অংশ নাকি বঙ্গোপসাগরে নিরাপত্তা বাড়াতে বাংলাদেশকে দেওয়া হয়েছে। তাহলে বঙ্গোপসাগরের নিরাপত্তার বিশাল দায়িত্ব বাংলাদেশের ওপর বর্তেছে যা আরও বাড়াতে খোদ যুক্তরাষ্ট্র দুই হাত বাড়িয়ে দিয়েছে! তাই যদি হয় তাহলে চুক্তি করার কী প্রয়োজনীয়তা দেখা দিল! যুক্তরাষ্ট্র কিন্তু বঙ্গোপসাগরের কোনো অংশীদার নয় এবং তার কোনো হিসসাও নেই। তবু বঙ্গোপসাগরের নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য সে বাংলাদেশকে সহায়তা দিতে এগিয়ে এসেছে। এখন চুক্তি হলেই ডলার আসা শুরু হয়ে যাবে যাতে লাভবান হতে পারবে আমার মতো সুযোগসন্ধানীরা! যা হোক, এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র থেকে যে সহায়তা পাওয়া গেছে তার কিছুটা বিশ্লেষণ করলে থলের কালো বিড়ালটা বেরিয়ে আসবে। প্রথমেই আলোচনা করা যেতে পারে বঙ্গোপসাগরের নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র যে দুটি হ্যামিল্টন ক্লাস কাটার নৌজাহাজ দিয়েছে ওই দুটি নিয়ে।

১৯৬৭ সালে মোট ১২টি হ্যামিলটন ক্লাস কাটার নৌজাহাজ তৈরি করা হয়। যার মধ্যে মোটামুটি চলন-উপযোগী আছে ১১টি। এ ১১টি রিকন্ডিশন্ড অর্থাৎ অবকাঠামো ঠিক রেখে ইঞ্জিন পরিবর্তন করা হয়েছে। এগুলোর যুদ্ধ করার ক্ষমতা নেই বললেই চলে। যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী থেকে ১২টি হ্যামিলটন কাটার নৌজাহাজকে ২০০৮ সালে বাদ দিয়ে তার জায়গায় নতুন ১১টি অত্যাধুনিক লিজেন্ড-ক্লাস কাটার নৌজাহাজ যুক্তরাষ্টের কোস্টগার্ডে নিয়োগ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ১১টি হ্যামিলটন কাটার নৌজাহাজ বিভিন্ন দেশে গছিয়ে দেওয়া হয়েছে। ১১টি হ্যামিলটন কাটার নৌজাহাজের ২টি বাংলাদেশ, ২টি নাইজেরিয়া, ৩টি ফিলিপাইন, ২টি শ্রীলঙ্কা ও ২টি ভিয়েতনামকে গছানো হয়েছে। হ্যামিলটন কাটার নৌজাহাজ এখন আর কোনো যুদ্ধজাহাজ নয়। এগুলো মূলত টহল নৌজাহাজ এবং এর কাজ হলো সমুদ্রপথের প্রতিবন্ধকতা দূর করে অন্য জাহাজের পথ পরিষ্কার করে দেওয়া। তা ছাড়া সমুদ্রপথে বরফ জমে থাকলে তা পরিষ্কার করা এ নৌজাহাজগুলোর অন্যতম দায়িত্ব। এজন্য এর নাম কাটার। আর হ্যামিলটন নাম দেওয়া হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম সেক্রেটারি অব দ্য ট্রেজারি আলেকজান্ডার হ্যামিলটনের নামে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় চারদিকের সমুদ্রপথে শীতকালে এবং কোনো কোনো সমুদ্রপথে প্রায় সারা বছরই বরফ জমে থাকে যার ফলে কোস্টগার্ডের টহল জাহাজগুলোকে সমুদ্রপথে জমে থাকা বরফ কেটে অন্য যুদ্ধজাহাজের পথ পরিষ্কার করে দিতে হয়। হ্যামিলটন কাটার নৌজাহাজ ২টিকে বাংলাদেশে বরফ ভেঙে সমুদ্রপথ পরিষ্কার করার কাজটি যে করতে হবে না তা শতভাগ নিশ্চিত বলা যায়। তার পরও যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গোপসাগরে তথাকথিত কাল্পনিক নিরাপত্তা বাড়াতে ৫৪ বছরের পুরনো বরফ কাটার ২টি নৌজাহাজ বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে গছিয়ে দেয়। তবে ঋণে না অনুদানে গছানো হয়েছে তা কিন্তু কোনো সরকারই এখনো পরিষ্কার করে বলছে না।

এ ২টি বিশালাকার কাটার নৌজাহাজ বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য কতটুকু প্রয়োজন তার চেয়ে বড় প্রশ্ন হচ্ছে নৌজাহাজ ২টির দৈনন্দিন রক্ষণাবেক্ষণ খরচ কত ব্যয়বহুল তা আগে বিশ্লেষণ করা। নৌজাহাজ ২টি ২০০৮ সালে লিজেন্ট ক্লাস কাটার নৌজাহাজ অন্তর্ভুক্ত করার আগ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র কোস্টগার্ডের সবচেয়ে বড় কাটার ক্লাস জাতের নৌজাহাজ ছিল। নৌজাহাজগুলো লম্বায় ৩৭৮ ফুট, বিম ৪৩ ফুট, ড্রাফট ১৫ ফুট। নৌজাহাজগুলোর মধ্যে প্রতিস্থাপিত বৈদ্যুতিক ধারণক্ষমতা হলো ২টি ৫৫০ কিলোওয়াটের ডিজেল জেনারেটর, ১টি ৫০০ কিলোওয়াটের গ্যাস জেনারেটর। ৭ হাজার হর্স পাওয়ারের ২টি ইঞ্জিন ও ৩৬ হাজার হর্স পাওয়ার অর্থাৎ ২৭ হাজার কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন ২টি গ্যাস টারবাইন। এ নৌজাহাজগুলোর ১টি ৭৫ এমএম অথবা ৬২টি ক্যালিবারের গান বা কামান, ২টি ২৫ এমএম এমকে ৩৮, ১টি এমকে ১৫ ও ৬টি .৫০ ক্যালিবারের মেশিনগান থাকার কথা তবে আছে কি না সেই তথ্য অজ্ঞাত। এ নৌজাহাজগুলো কোল্ড ওয়ারের সময় সোভিয়েত রাশিয়ার মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র কোস্টগার্ডের জন্য নির্মাণ করে নিয়োজিত করা হয়েছিল। এখন এর প্রয়োজনীয়তা যে নেই তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তার পরও যুক্তরাষ্ট্র তা জাং বা আবর্জনা তথা বর্জ পরিষ্কার করার জন্য তথাকথিত বঙ্গোপসাগরের নিরাপত্তার ধুয়া তুলে বর্তমানে বাতিল এবং পুরনো ২টি নৌজাহাজ বাংলাদেশকে গছিয়েছে।

২ হাজার ৯০ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ১ হাজার ৬১০ কিলোমিটার প্রশস্ত বঙ্গোপসাগর শুরু হয়েছে বাংলাদেশের দক্ষিণ সীমা থেকে এবং গিয়ে মিলেছে ভারত মহাসাগরে। এর পুব পাশে রয়েছে মিয়ানমার, পশ্চিমে ভারত, উত্তরে বাংলাদেশ ও ভারত, দক্ষিণে ভারত মহাসাগর ও আন্দামান সাগরের কিছু অংশ। বঙ্গোপসাগরের ক্ষুদ্র অংশীদার হলো বাংলাদেশ। বঙ্গোপসাগরের তথাকথিত নিরাপত্তার নামে যুক্তরাষ্ট্র যে বাতিল ও পুরনো ২টি নৌজাহাজ দিয়েছে যা কখনই আমাদের উপকারে আসবে না।

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী বাহিনীকে সহায়তা করার জন্য ৫০টি মাল্টি রোল আর্মার্ড পারসোন্যাল ক্যারিয়ার দিয়েছে বলে জানা যায়। মাল্টি রোল আর্মার্ড পারসোন্যাল ক্যারিয়ার সম্পর্কে জানা যায়, তা হলো ২০০৮ সালে এ ক্যারিয়ারগুলো রেনাল্ট ট্রাকস ডিফেন্স নির্মাণ করে এবং ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্রজেক্ট স্করপিও’র আওতায় ব্যাপক সামরিক আধুনিককরণের ফলে তাদের যুদ্ধের লাইন থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ২০০৮ সালের পুরনো মাল্টি রোল আর্মার্ড পারসোন্যাল ক্যারিয়ার হিসেবে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী বাহিনীকে সহায়তা করার জন্য জাতিসংঘের অর্থের আওতায় সম্ভবত দেওয়া হয়। ৫০টি মাল্টি রোল আর্মার্ড পারসোন্যাল ক্যারিয়ার দেওয়ার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ বেশি কাজ করেছে। তা ছাড়া বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী বাহিনীর জন্য মাল্টি রোল আর্মার্ড পারসোন্যাল ক্যারিয়ার প্রয়োজন ছিল না। কারণ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী বাহিনী যেসব দেশে শান্তি রক্ষায় কাজ করে সেখানকার অবস্থা বাংলাদেশের জন্য এত প্রতিকূল নয়।

এবার ৪টি সি-১৩০ পরিবহন বিমান পাওয়ার কী কারণ তা-ও বিশ্লেষণ করে দেখা যাবে এখানেও যুক্তরাষ্ট্রের কায়েমি স্বার্থের হাত রয়েছে। সি-১৩০ পরিবহন বিমান যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক পরিবহন বিমান। এর ঘণ্টায় সর্বোচ্চ গতিবেগ ৫৯২ কিলোমিটার। সর্বোচ্চ দূরত্ব ৩ হাজার ৮০০ কিলোমিটার। ধারণক্ষমতা মাত্র ৩৪.৩৮ টন। এ পরিবহন বিমানটির মূল বৈশিষ্ট্য হলো এটি যে কোনো অপ্রস্তুত রানওয়েতে নামতে বা উঠতে পারে। সি-১৩০ পরিবহন বিমানের মূল্য ১১ কোটি থেকে ৩০ কোটি ডলার পর্যন্ত এবং এটি উৎপাদন করে বিখ্যাত লকহিড কোম্পানি। এখন জনগণের স্বাভাবিক প্রশ্ন- একটির মূল্য যেখানে ১১ থেকে ৩০ কোটি ডলার সেখানে যুক্তরাষ্ট্র সরকার কীভাবে ৪টি সি-১৩০ পরিবহন বিমান ১৮ কোটি ডলারে বাংলাদেশকে দিল এবং এ ৪টি সি-১৩০ পরিবহন বিমান বাংলাদেশের কী কাজে আসবে?

প্রকাশিত বিভিন্ন তথ্যানুযায়ী মানবাধিকার সুরক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে প্রবর্তিত হয়েছে লিহেই আইন। বৈদেশিক সহায়তা আইনের সঙ্গে লিহেই আইনের দুটি ধারাও নাকি যুক্ত করা হয়েছে। বিদেশের কোনো নিরাপত্তা সংস্থা বা বাহিনী নির্যাতন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, ধর্ষণসহ ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত থাকলে ওই সংস্থা বা বাহিনীকে ওই ধারার আওতায় অনুদান দেওয়া নাকি বন্ধ করে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। মূলত যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সহায়তা আইনের সঙ্গে লিহেই আইনের দুটি ধারা যুক্ত করে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর ও প্রতিরক্ষা দফতরকে অনুদান বন্ধের অধিকার দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি ওই আইনে নাকি সংশোধন আনা হয়েছে। অনুদানপ্রাপ্ত দেশগুলোর সঙ্গে কোন সংস্থা অনুদানের অর্থ পাচ্ছে তা জানার জন্য চুক্তি করার বিষয়ে একটি ধারা সংযোজিত হয়েছে। এর ফলে মার্কিন সামরিক অনুদানপ্রাপ্ত দেশগুলোর সঙ্গে এ চুক্তি করার উদ্যোগ নাকি নিয়েছে দেশটি। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে এমন কোনো সংস্থা বা বাহিনী নাকি ওই অনুদান পাবে না। চুক্তির ব্যাপারে সংবিধানে পরিষ্কার নিয়মাবলি রয়েছে যা সরকার মেনে চললে দেশ বড় রকমের দুর্নীতি থেকে হয়তো রক্ষা পেতে পারে। আমাদের বড় বড় কেনাবেচায় খুবই দিল দরিয়া যার সুযোগ নিয়ে অনেক রথী-মহারথী সংবিধানের কথা ভুলে যান। তাই নিম্নে চুক্তি করার সংবিধানের ধারাগুলো মনে করিয়ে দেওয়া হলো মাত্র।

চুক্তি ও দলিল : “সংবিধানের ১৪৫। (১) প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী কর্তৃত্বে প্রণীত সকল চুক্তি ও দলিল রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রণীত বলিয়া প্রকাশ করা হইবে এবং রাষ্ট্রপতি যেরূপ নির্দেশ বা ক্ষমতা প্রদান করিবেন, তাঁহার পক্ষে সেইরূপ ব্যক্তি কর্তৃক ও সেইরূপ প্রণালীতে তাহা সম্পাদিত হইবে। (২) প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী কর্তৃত্বে কোন চুক্তি বা দলিল প্রণয়ন বা সম্পাদন করা হইলে উক্ত কর্তৃত্বে অনুরূপ চুক্তি বা দলিল প্রণয়ন বা সম্পাদন করিবার জন্য রাষ্ট্রপতি কিংবা অন্য কোনো ব্যক্তি ব্যক্তিগতভাবে দায়ী হইবেন না, তবে এই অনুচ্ছেদ সরকারের বিরুদ্ধে যথাযথ কার্যধারা আনয়নে কোনো ব্যক্তির অধিকার ক্ষুণœ করিবে না।”

আন্তর্জাতিক চুক্তি : “সংবিধানের ১৪৫(ক)। বিদেশের সহিত সম্পাদিত সকল চুক্তি রাষ্ট্রপতির নিকট পেশ করা হইবে, এবং রাষ্ট্রপতি তাহা সংসদে পেশ করিবার ব্যবস্থা করিবেন : তবে শর্ত থাকে যে, জাতীয় নিরাপত্তার সহিত সংশ্লিষ্ট অনুরূপ কোন চুক্তি কেবলমাত্র সংসদের গোপন বৈঠকে পেশ করা হইবে।”

লেখক : সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রতিরক্ষা বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সদস্য।

সাকিব আহমেদ / ০৭ জানুয়ারি

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031   
       
1234567
15161718192021
293031    
       
22232425262728
2930     
       
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ