সিলেট ৮ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৬:২০ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৭, ২০২২
সিলনিউজবিডি ডেস্ক :: ‘একটি কিনলে একটি ফ্রি অথবা শতভাগ ক্যাশব্যাক’ প্রলোভন দেখিয়ে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে যাওয়া ‘আঁখি সুপার শপ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতে এ মামলা করেন মো. মুক্তার আহমদ খান (৩৮) নামের এক গ্রাহক। পাশাপাশি বৃহস্পতিবার দুপুরে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকেরা প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধারদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধনও করেছেন।
মামলায় আসামি করা হয়েছে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার হাসনীপুর গ্রামের আসমা শারমিন আঁখি (২৬) ও পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার পুন্ডুরিয়া গ্রামের মো. জাহাঙ্গীর আলমকে (৩১)। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে সম্পৃক্ত আরও চারজনের নাম উল্লেখসহ চার থেকে পাঁচজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। আসমা ও জাহাঙ্গীর প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করতেন।
মামলার বাদী মুক্তার আহমদের বাড়ি শহরতলির বটেশ্বর এলাকার চুয়াবহর গ্রামে। তিনি এজাহারে উল্লেখ করেছেন, অনলাইনে পেজের মাধ্যমে আসামিরা মিথ্যার আশ্রয়ে প্রলোভন দেখিয়ে ‘একটি পণ্য কিনলে একই পণ্য আরেকটি ফ্রি তথা শতভাগ ক্যাশব্যাক’ বলে প্রচারণা চালায়। এ প্রচারণা দেখে তিনি কয়েক সহযোগীকে নিয়ে প্রতিষ্ঠানটিতে যান। পরবর্তী সময়ে তিনি প্রলোভিত হয়ে বিভিন্ন পণ্য কেনার জন্য নগদ টাকার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মোট ২৪ লাখ ৪০ হাজার ৩৬ টাকা জমা দেন। এরপর পণ্য না দিয়ে আসামিরা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে যান। এরপর তিনি প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারেন।
সিলেট শহরতলির বটেশ্বর গইলাপাড়া এলাকায় আঁখি সুপার শপ নামের প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়। প্রতিষ্ঠানটি ফেসবুক পেজের মাধ্যমে মোটরসাইকেলসহ নানা ধরনের পণ্যে ‘একটি কিনলে একটি ফ্রি বা শতভাগ ক্যাশব্যাক’ প্রচারণা চালাত। তবে গত ২৭ ডিসেম্বর থেকে প্রতিষ্ঠানটি তালাবদ্ধ আছে। গ্রাহকদের অভিযোগ, প্রলোভন দেখিয়ে ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাহকের ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকা নিয়ে আসমা ও জাহাঙ্গীর পালিয়ে গেছেন।
বিজ্ঞাপন
এ ঘটনায় গত রোববার দুজন ভুক্তভোগী গ্রাহক আঁখি সুপার শপের কর্ণধার আসমা শারমিন ও মো. জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে সিলেটের একই আদালতে মামলা করেছিলেন। তারা ছাড়াও একাধিক গ্রাহকের অভিযোগ, আঁখি সুপার শপ ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে অনলাইনভিত্তিক ব্যবসা শুরু করে। এর বাইরে সুপার শপের মাধ্যমেও তারা বটেশ্বর এলাকায় ব্যবসা পরিচালনা করত। প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে নানা সময়ে ৯০ দিন ও ৩০ দিনের একাধিক প্যাকেজ অফার ফেসবুক পেজে জানানো হতো। এসব প্যাকেজে একটি পণ্য কিনলে আরেকটি পণ্য ফ্রি দেওয়া হতো।
এ অফারের মধ্যে মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও গ্রোসারি পণ্য থাকত। এ অফারে অনেক গ্রাহক অংশ নিয়ে একটি পণ্য কিনে একই পণ্য আরেকটা বিনা মূল্যে পেয়েছেন। একইভাবে গত বছরের ১৩ নভেম্বর থেকে প্রতিষ্ঠানটি ‘একটি পণ্য কিনলে একই পণ্য আরেকটি ফ্রি তথা শতভাগ ক্যাশব্যাক’ শিরোনামে একটি অফার দিয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালায়। এ প্রচারণায় প্রলুব্ধ হয়ে অন্তত ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাহক মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন পণ্য কিনতে টাকা জমা দেন। অন্তত ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানটি এভাবে জমা নিয়েছে বলে কয়েক গ্রাহক ধারণা করছেন। এ টাকা নিয়েই আসমা ও জাহাঙ্গীর পালিয়ে গেছেন বলে গ্রাহকদের অভিযোগ।
এ বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে আঁখি সুপার শপের মুঠোফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। তবে গত ২৯ ডিসেম্বর আঁখি সুপার শপের পেজে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির কারণে সাময়িকভাবে তাঁরা প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ রেখেছে।
গত ২৭ ডিসেম্বর থেকে আঁখি সুপার শপ তালাবদ্ধ আছে। এ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা পালিয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে গ্রাহকেরা সেখানে গিয়ে বিক্ষোভ করেন। গত শনিবার বিকেলে বটেশ্বর এলাকায় সড়ক অবরোধ করে ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। আজ দুপুরে নগরের চৌহাট্টা এলাকার সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকের ব্যানারে শতাধিক ব্যক্তি মানববন্ধন করেছেন। কর্মসূচিতে তাঁরা আসমা ও জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে একাধিক ভুক্তভোগী গ্রাহক বলেন, গ্রাহকদের সর্বস্বান্ত করে ই-কমার্সভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আঁখি সুপার শপের কর্ণধারেরা পালিয়ে গেছেন। তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে।
সাকিব আহমেদ / ০৭ জানুয়ারি
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ নাজমুল কবীর পাভেল
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : জুমা কবীর মিম
সহ সম্পাদকঃ আরিফ মাহবুব
ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃ আম্বিয়া পাভেল
আইটি সম্পাদক : মাসুম আহমদ
ইমেইল: sylnewsbd@gmail.com, pavel.syl@gmail.com
ফেইসবুক পেইজ : Syl News BD
মোবাইলঃ 01712-540420
শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান।
Design and developed by ওয়েব নেষ্ট বিডি