ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতির বিরুদ্ধে সহসভাপতির ‘বিস্ফোরক’ অভিযোগ!

প্রকাশিত: ১০:১৬ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ১৬, ২০২২

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতির বিরুদ্ধে সহসভাপতির ‘বিস্ফোরক’ অভিযোগ!

সিল ডেস্ক

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লাইভে এসে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খানের বিরুদ্ধে কিছু ‘বিস্ফোরক’ অভিযোগ করেছেন সংগঠনের সহসভাপতি ইয়াজ আল রিয়াদ। তার অভিযোগ, ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আল নাহিয়ান ছাত্রদলের হয়ে ধানের শীষে ভোট চেয়েছিলেন। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে বিএনপির ‘ডামি প্রার্থী’ ছিলেন আল নাহিয়ানের বাবা।

গতকাল শনিবার রাতে ফেসবুক লাইভে এসে এসব অভিযোগ করেন রিয়াদ। অভিযোগের বিষয়ে জানতে আল নাহিয়ানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও সাড়া মেলেনি।

আল নাহিয়ান ও লেখক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বাধীন ছাত্রলীগের বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। কিন্তু আল নাহিয়ান ও লেখক শিগগির পদ ছাড়তে চান না বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ছাত্রলীগে অসন্তোষ রয়েছে। আল নাহিয়ানের বিরুদ্ধে রিয়াদের অভিযোগকে সেই অসন্তোষের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দেখছেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।

ফেসবুক লাইভে রিয়াদ বলেন, ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছিলেন আল নাহিয়ান। অভিযোগ আছে, তখন তাঁর ফুফাতো ভাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল শাখা ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। তাঁর কক্ষে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কোচিং করেছেন, ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন আল নাহিয়ান। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে তিনি ছাত্রদলের হয়ে ধানের শীষে ভোট চেয়েছিলেন। সাম্প্রতিক ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আপন চাচাতো ভাইকে নিজের ক্ষমতাবলে নৌকার বিরুদ্ধে জিতিয়েছেন আল নাহিয়ান।

রিয়াদ অভিযোগ করে বলেন, আল নাহিয়ানের বাবা ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বাবুগঞ্জ-উজিরপুর আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। সেই নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর তাঁর বাবা ব্যবসায়ী ও বিএনপি নেতা আব্দুল আউয়াল মিন্টুর বিমা কোম্পানিতে চাকরি করেছিলেন। তিনি তৎকালীন তৎকালীন বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার পিএ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির যে নির্বাচন আওয়ামী লীগ বর্জন করেছিল, সেই নির্বাচনে বিএনপির ডামি প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন আল নাহিয়ানের বাবা।

ছাত্রলীগ সভাপতিকে এসব অভিযোগের জবাব দেওয়ার আহ্বান জানান রিয়াদ। তিনি বলেন, অভিযোগ উঠতেই পারে। অভিযোগের জবাব তাঁকেই দিতে হবে। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে তাঁকে নিয়ে যেন কোনো ধোঁয়াশা তৈরি না হয়, নেতা-কর্মীরা যাতে বিভ্রান্ত ও আদর্শচ্যুত না হন, সেই জায়গা থেকে তাঁর উচিত অভিযোগগুলো খণ্ডন করা।

লাইভের একপর্যায়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তোলেন রিয়াদ। তিনি বলেন, আল নাহিয়ান ও লেখক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে। তাঁরা অনিয়মতান্ত্রিক ও সংগঠনবিরোধী অনেক কর্মকাণ্ড করে সংগঠনকে নানা প্রশ্নের সম্মুখীন করছেন। এসব বিষয় নিয়ে যাঁরা কথা বলেন, যাঁরা দুঃসময়ের আওয়ামী পরিবারের সন্তান, তাঁরা তাঁদের চিহ্নিত করে সংগঠন থেকে দূরে সরিয়ে রাখছেন।

গতকাল রাতে ফেসবুক লাইভে রিয়াদের করা অভিযোগের বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতির পাশাপাশি সাধারণ সম্পাদকের মুঠোফোনেও একাধিকবার কল করা হয়; কিন্তু তিনিও সাড়া দেননি।

২০১৮ সালের মে মাসে ছাত্রলীগের ২৯তম জাতীয় সম্মেলন হয়। একই বছরের ৩১ জুলাই রেজওয়ানুল হক চৌধুরীকে সভাপতি ও গোলাম রাব্বানীকে সাধারণ সম্পাদক করে ঘোষণা করা হয় কেন্দ্রীয় কমিটি। উন্নয়ন প্রকল্প থেকে চাঁদা দাবিসহ নানা অভিযোগে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে রেজওয়ানুল ও রাব্বানী ছাত্রলীগের পদ হারান। তখন আল নাহিয়ানকে ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও লেখক ভট্টাচার্যকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০২০ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে তাঁদের ‘ভারমুক্ত’ করে দেওয়া হয়।

আল নাহিয়ান ও লেখক ভট্টাচার্য দায়িত্ব পাওয়ার পর ছাত্রলীগের দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা আবদুর রহমান বলেছিলেন, রেজওয়ানুল-রাব্বানীর অবশিষ্ট মেয়াদে (১০ মাস) ছাত্রলীগের দায়িত্ব পালন করবেন নতুন দুই নেতা।

সেই সময়সীমা অনেক আগেই শেষ হয়েছে। ছাত্রলীগের অনেক নেতার অভিযোগ, মেয়াদ শেষ হলেও পদ ধরে রাখতে নানা কৌশল অবলম্বন করছেন আল নাহিয়ান ও লেখক। সাংগঠনিক ধারাবাহিকতার স্বার্থে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের প্রায় সবাই দ্রুত কেন্দ্রীয় সম্মেলন চান।

 

সূত্র : প্রথম আলো

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
14151617181920
21222324252627
28293031   
       
1234567
15161718192021
293031    
       
22232425262728
2930     
       
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ