যেভাবে ইয়াবাসহ গ্রেফতার হয় সিলেটের খালেদ!

প্রকাশিত: ১০:৫২ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৩, ২০২০

যেভাবে ইয়াবাসহ গ্রেফতার হয় সিলেটের খালেদ!

নিজস্ব প্রতিবেদক :: ২২ জুলাই দিনটি ছিল বুধবার। পুরো শহরে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে সাথে আকাশে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। এর মধ্যে হঠাৎ করে পুলিশ হেডকোয়ার্টাস ঢাকার গোয়েন্দা দলের কাছ থেকে সিলেট জেলা পুলিশ সুপারের কাছে একটি তথ্য আসলো। কি ছিলো পুলিশ হেডকোয়ার্টাস ঢাকার গোয়েন্দা দলের বার্তা। হ্যাঁ তা হচ্ছে সিলেটের বিশ্বনাথে ইয়াবার একটি বড় চালান এসে ঢুকেছে। সাথে সাথে তৎপর হলেন সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম। খোঁজ নিতে শুরু করলেন। এর মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ ব্যাপারটি নিয়ে ভাবলেন ও পরিকল্পনা করলেন । খবর পেলন বিশ্বনাথের চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী দুলুর মাধ্যমে এসেছে বড় এই চালান। কিন্তু কিভাবে? দুলু তো এর আগেই বুধবার একটি মামলায় আদালত যায়। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ।

তাহলে কে এই চালানের লিড দিচ্ছে? কার মাধ্যমে প্রবেশ করছে এত বড় ইয়াবার চালান? হিসেবটা বেশ জটিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবার আরও একটু বেশি চাপ দিলেন গোয়েন্দাদের । সবাই আরও গভীরে যেতে শুরু করলেন । স্থানীয়দের সহযোগীতায় জানা গেলো দুলু কারাগারে থাকলেও সেই চালান তা রেখে দিয়েছে তার খালাতো ভাই খালেদের কাছে ।

তথ্য পাওয়া গেলো তাহলে এবার দেখা যাক কে সেই খালেদ । সিলেট জেলা পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন পিপিএমএর দিক নির্দেশনায় অভিযানে নামে পুলিশ। এতে নেতৃত্ব দেন তিনি সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.লুৎফর রহমান ও ওসমানীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.রফিকুল ইসলাম। আর একদল ফোর্সসহ অভিযানে অংশ নেন সিলেট জেলা গোয়েন্দা শাখার ‘ডিবি’ (দক্ষিণ) অফিসার ইনচার্জ আশীষ কুমার মৈত্র।

অভিযানকালে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে খালেদ ঘর থেকে বের হয়ে দৌঁড়ে পালাতে থাকে। এসময় তারাও (পুলিশ) পিছু পিছু দৌঁড়তে থাকে এবং একপর্যায়ে তাকে (খালেদকে) ঝাপটে ধরেন তারা (পুলিশ)। ধরা পড়ল খালেদ।

পুরো নাম খালেদ মিয়া। পেশায় একজন মাদক ব্যবসায়ী। বাড়ি সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার শিমুলতলা গ্রামে। বাবা মৃত ফজর আলী।

প্রথমে খালেদ ইয়াবার বিষয়টি অস্বীকার করে। পরে বিষয়টি স্বীকার করে নেয়। খালেদের দেওয়া তথ্যমতে স্টিল আলমিরার ৩টি স্থানে কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় ৩০ হাজার পিছ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। যার আনুমানিক বাজার মূল্য হবে প্রায় ৯০ লাখ টাকা। এছাড়াও ইয়াবা বিক্রয়ের ২৯ হাজার টাকা উদ্ধার করে পুলিশ।

মাদক ব্যবসায়ী খালেদের তথ্যের ভিত্তিতে রাতে বিশ্বনাথ পুরানবাজারস্থ আল হেরা শপিং সিটির পার্কিং থেকে ইয়াবা বিক্রির কাজে ব্যবহৃত রেজিষ্ট্রেশনবিহীন লাল-কালো রংয়ের হিরো গ্ল্যামার মোটরসাইকেল উদ্ধার করে গোয়েন্দা পুলিশ।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেট জেলা পুলিশ লাইন্সে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম।

এই ঘটনায় খালেদের বিরুদ্ধে বিশ্বনাথ থানায় মাদকদ্রব্য আইনে মামলা করা হয়। আজ তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।