সিলেট ১৩ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১:৩৪ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২৪, ২০২০
ড. আতিউর রহমান :;
জুনের ২৬ থেকে জুলাইয়ের ৭ তারিখ পর্যন্ত প্রথম দফায় বন্যা আমাদের ১৫টি জেলায় ছড়িয়ে পড়েছিল। সামান্য বিরতি দিয়ে আবার ৯-১০ জুলাই থেকে ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা অববাহিকায় পানি বাড়ছে। পদ্মা অববাহিকায়ও পানি এখনো বাড়ছে। তার মানে আমাদের তিনটি প্রধান নদ-নদীর অববাহিকাতেই পানি বেড়েই চলেছে। এ ছাড়া দক্ষিণ-পূর্ব পাহাড়ি অঞ্চলেও পানি বাড়ছে। তবে উত্তরবঙ্গের কিছু এলাকায় বন্যার পানি স্থিতিশীল থাকলেও আবার অবনতি হচ্ছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ও আবহাওয়া সতর্কীকরণ কেন্দ্র আশঙ্কা করছে, সপ্তাহখানেক বিরতির পর বাংলাদেশে আবারও প্রবল বৃষ্টিপাত হতে পারে। এ মুহূর্তে আমাদের উজানে আসামসহ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোয় প্রবল বর্ষণ হচ্ছে। সে পানি আমাদের প্রধান তিনটি নদ-নদীর অববাহিকা দিয়েই প্রবাহিত হয়ে সমুদ্রে পৌঁছে বলে বাংলাদেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে এখনো পানিপ্রবাহ বাড়ছে। মুন্সীগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, সারিয়াকান্দি, জামালপুরসহ তিনটি প্রধান নদ-নদীর অববাহিকাতেই বন্যার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এমনকি মানিকগঞ্জসহ ঢাকার আশপাশেও পানি বাড়ছে। বহু মানুষ জলাবদ্ধ অবস্থায় আছে। জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধির অফিস থেকে আশঙ্কা করা হচ্ছে, এবারের বন্যা ১৯৮৮ সালের বন্যার পর সবচেয়ে দীর্ঘ হতে পারে। তারা আরও বলেছেন, সব জেলায় এরই মধ্যে রাস্তাঘাট, বাঁধ, ডাইক ও স্লুইস গেট ভেঙে গেছে, সেসব জেলাতেই পরবর্তী পর্যায়ের বন্যা আরও তীব্র হতে পারে। যেসব জায়গায় এখন পানি কমছে সেসব জায়গায় নদী ভাঙন তীব্রতর হচ্ছে। এ বিপদ এমন সময় ঘটছে যখন করোনা সংকট পুরোদমেই আমাদের দেশে বিরাজ করছে। সেজন্য এসব আশ্রয় কেন্দ্র্রে সরকারের সদিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। একই সঙ্গে এতসংখ্যক বিপন্ন মানুষের পর্যাপ্ত খাদ্য ও নগদ সহায়তা দেওয়াও বেশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়েছে। জাতিসংঘের খবরে বলা হচ্ছে, সাড়ে ৫ লাখ পরিবারের বাড়িঘর বন্যার তোড়ে ভেসে গেছে। তাই আশ্রয়হীন মানুষের দুরবস্থা দিন দিনই আরও খারাপ হচ্ছে।
ফের প্রবল বৃষ্টিপাত হলে পানির এ প্রবাহ আরও তীব্র হতে পারে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, দ্বিতীয় পর্যায়ের এ বন্যা জুলাইয়ের শেষ কিংবা আগস্টের শুরুতেও অব্যাহত থাকতে পারে। তখন প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি আরও বাড়তে পারে। এমনিতে উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের চরগুলো পানির নিচে চলে গেছে। বন্যার্ত মানুষ গবাদি পশুসহ পাশের বাঁধে এসে আশ্রয় নিয়েছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুনামগঞ্জ, সিলেট, নেত্রকোনা এবং উত্তরের কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, লালমনিরহাট, উত্তর-পশ্চিমের নাটোর ও নওগাঁ, উত্তর-মধ্যাঞ্চলের বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর, টাঙ্গাইল এখন বন্যাক্রান্ত। পদ্মা অববাহিকায় মুন্সীগঞ্জের ভাগ্যকূলে বন্যার পানি বিপৎসীমার যথেষ্ট ওপর দিয়ে বইছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের আবহাওয়া সতর্কীকরণ কেন্দ্রও মনে করছে এবারের বন্যাটি যদি আরও প্রলম্বিত হয় তাহলে প্রতি ১০ বছর অন্তর যে বড় বন্যা হয়, সে রকমটি হওয়ার আশঙ্কা এবার শতকরা ৫০ ভাগের বেশি। এখনই এ তিন প্রধান নদ-নদীর অববাহিকায় বসবাসকারী মানুষজন বেশ সংকটের মধ্যে রয়েছেন। তারা বেশির ভাগই বাঁধে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। সে বাঁধও খুবই ভঙ্গুর। ত্রাণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখনই ১৮ জেলার ২২ লাখ ৪৬ হাজারের বেশি মানুষ বানভাসি। অবশ্য জাতিসংঘের হিসাবমতে এ সংখ্যা ২৪ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। সরকার এরই মধ্যে ১ হাজার ৮৬টি আশ্রয় কেন্দ্র খুলেছে। এসব বন্যার্তের ৫৬ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন আশ্রয় কেন্দ্রে। কিন্তু এ বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হলে আসলেই সংকট ঘনীভূত হবে। আশ্রয় কেন্দ্র খোলার মতো জায়গা পাওয়াও মুশকিল হবে। তার ওপর গবাদি পশু রাখার জায়গাই বা কোথায় মিলবে? বাচ্চাদের অবস্থা আরও শোচনীয়। শহর থেকে অনেক মানুষ জীবিকার সুযোগ হারিয়ে গ্রামে চলে গেছেন। বিশেষ করে চরের মানুষের অবস্থা আরও সংকটজনক। এমনিতেই করোনার দাপটে কর্মহীন মানুষের আয়-রোজগার নেই। এর ওপর এ বন্যার আক্রমণ তাদের আরও বিপর্যস্ত করে ফেলেছে। আসলে তাদের জীবন ও জীবিকা গভীর সংকটে। এ যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। কভিড-১৯ সংকট মোকাবিলায় যখন আমরা হিমশিম খাচ্ছি তখন দীর্ঘস্থায়ী বন্যা হলে আমাদের বিপদের শেষ নেই। তাই এখন থেকেই আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে এ বন্যা মোকাবিলার। প্রযুক্তির কল্যাণে এখন দুর্যোগ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা খুবই সহজ। এমনকি পাশের দেশের বৃষ্টিপাত এবং বন্যার অবস্থা জানাও সহজ। তাই নতুন করে বন্যার চাপ কখন আসছে তাও আমরা ডিজিটাল ডাটা বিশ্লেষণ করে অনেকটাই প্রক্ষেপণ করতে পারি। আর সেজন্যই দুর্যোগ মোকাবিলায় আমরা আগেভাগে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারি। দুর্যোগ বিষয়ে স্থায়ী নির্দেশনা (এসওডি) স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু করা সম্ভব। আর এ প্রস্তুতি নিতে পারলে বন্যাসহ যে কোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় আমরা যথেষ্ট পারদর্শিতা দেখাতে পারি।
বন্যার তোড়ে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, বাঁধ, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পুকুরের মাছ ভেসে যাচ্ছে। মুরগি ও গবাদি পশুর খামারে পানি ঢুকে পড়েছে। কৃষক যে ধানের ও হাইব্রিড মরিচের বীজতলা তৈরি করেছিলেন তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যে পাট কাটা হয়নি তা পানির নিচে পড়ায় তাও নষ্ট হওয়ার পথে। দ্রুত পানি নেমে গেলে হয়তো এ ক্ষতি সামলানো যাবে। কিন্তু বন্যা দীর্ঘ হলে আর নতুন করে বীজতলা তৈরি করা সম্ভব হবে না। মধ্য ও ধনী কৃষকের ঘরে ধান-চাল আছে। কিন্তু খুদে কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষের কী হবে। শুধু ত্রাণের ওপর ভরসা করে এদের বাঁচানো বেশ কষ্টকর হবে। করোনার সংকটকালে ’৯৮-এর বন্যার মতো বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষে তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়ানোও বেশ চ্যালেঞ্জিং হবে। ব্যক্তি খাতের সামাজিক দায়বদ্ধ তহবিলের সমাবেশ করাও সহজ বলে মনে হয় না। ভরসা একমাত্র সরকারের আশ্রয় কেন্দ্র ও ত্রাণ বিতরণ। এত মানুষকে সুষ্ঠুভাবে ত্রাণ দিয়ে বেশি দিন ধরে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারকেও বেশ বেগ পেতে হবে। স্থানীয় এনজিও ও সামাজিক সংগঠনগুলোকে তাই প্রস্তুত থাকতে হবে প্রশাসনের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে বন্যার্ত মানুষকে সহযোগিতা করার জন্য। সরকারকে এক্ষুনি সিদ্ধান্ত নিতে হবে যেখানে বন্যা হয়নি সেসব অঞ্চলে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আকার খানিটা কমিয়ে বন্যাকবলিত এলাকায় তা বাড়ানো। একই সঙ্গে সামাজিক সুরক্ষা বাজেটের মূল আকার আরও বাড়াতেও যেন দ্বিধা না করে সরকার। প্রয়োজনে এজন্য বাজেট ঘাটতি আরেকটু বাড়লেও ক্ষতি নেই। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এজন্য তার সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে পারে। কেননা আমাদের অর্থনীতি এখনো ‘ফুল ক্যাপাসিটি’র অনেকটাই নিচে। তাই মূল্যস্ফীতির আশঙ্কাও কম।
একই সঙ্গে কৃষিঋণ, এসএমই ঋণ ও এমএফআই ঋণের যে প্রণোদনা প্যাকেজ সরকার ঘোষণা করেছে সেসব অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে যেন বন্যাকবলিত অঞ্চলে বাস্তবায়ন করা হয় তার জন্য জোর তাগাদা ব্যাংকগুলোকে দিতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও এমআরএ এজন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে পারে। দরকার হলে কুটিরশিল্পের জন্য আলাদা প্রণোদনা প্যাকেজ তৈরি করে এমএফআইগুলোর সঙ্গে অংশীদারিত্বে সস্তায় ঋণ দেওয়ার উদ্যোগ এমআরএ, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও পিকেএসএফ নিতে পারে। অতীতে এমন সংকটে আমাদের সরকার, সমাজ ও বাজার মিলে এমন অংশীদারিত্বমূলক নানা কর্মসূচি হাতে নিয়ে মানুষ বাঁচানোর চেষ্টা করেছে এবং সফলও হয়েছে। আমাদের স্পষ্ট মনে আছে, ১৯৯৮ সালে বড় বন্যার সময় অনেক মানুষ না খেয়ে মারা যাবে বলে বিবিসি এবং আরও অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল। কিন্তু বাস্তবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিক এবং শক্ত নেতৃত্বের কারণে সেবার আমরা ভয়াবহ বন্যার আঘাত সামলে নিতে পেরেছিলাম। সে সময় একজন মানুষও না খেয়ে মরেনি। বর্গা চাষিসহ কৃষকের হাতে সহজে ঋণ পৌঁছে দেওয়ার জন্য তিনি হাটে হাটে ঋণ ক্যাম্প করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। কারা কারা ঋণ ও রিলিফ পেলেন তাদের নাম ইউনিয়ন পরিষদের দেয়ালে টানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সমাজের বিত্তশালী, এনজিও, সামাজিক সংগঠন ঝাঁপিয়ে পড়েছিল ওই বন্যা মোকাবিলার জন্য। ঢাকা শহরেও পানি উঠেছিল। ঢাকার অদূরে কাজ করতে গিয়ে তরুণ স্বেচ্ছাসেবীর কেউ কেউ প্রাণও দিয়েছিলেন। রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির পরও তেমন মানবিক জাগরণ দেখেছি। অন্যদিকে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কর্মীরা কৃষি পুনর্বাসনের লক্ষ্যে বন্যাকবলিত কৃষকের জন্য ধানের বীজতলা পাশের উপজেলায় বেশি বেশি করতে উপদেশ দিয়েছিলেন। বন্যার পর কৃষক সারা দেশ থেকে ধানের চারা সংগ্রহ করেছেন। এমনকি সেনাবাহিনী হেলিকপ্টারে করেও এ চারা সরবরাহ করেছে। মহাসড়কের পাশে ধানের চারার বাজার চলতে দেখেছি।
মাত্র ২২ বছর আগের সে অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আমাদের কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ নিশ্চয় এবারও অনুরূপ উদ্ভাবনীমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করতে সক্ষম হবে। আশা করছি, এদিকে নজর দিতে কৃষি মন্ত্রণালয়কে এবারও সক্রিয় হতে দেখতে পাব। করোনা সংকটকালে বোরো ধান কাটা এবং শ্রমিক সমন্বয়ে তারা দারুণ কাজ করেছেন। আম, লিচু ও অন্যান্য কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণেও এ মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় প্রশাসন মিলে কৃষিপণ্যের সাপ্লাই চেইন পুনর্নির্মাণে আশাতীত অবদান রেখেছে। আইসিটি ডিভিশনও ই-কমার্সের মঞ্চ খুলে দিয়ে অনলাইনে কৃষিপণ্যের বাজার সক্রিয় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে এবং এখনো করছে। সে কারণে অনেক স্টার্টআপের উদ্ভব ঘটেছে। এখন অনেক শিক্ষিত তরুণ-তরুণী ডিজিটাল অ্যাপ খুলে কৃষিপণ্যেও ই-কমার্স করছেন।
তাই বন্যা-পরবর্তী কৃষি খাতের পুনর্বাসনেও সরকার তার উপযুক্ত ভূমিকা নিশ্চয় পালন করবে সে প্রত্যাশাই করছি। আমাদের শিক্ষিত তরুণ-তরুণীরাও কৃষি খাতে নতুন উদ্যোক্তা হিসেবে আধুনিক কৃষির প্রসারে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন- সে আশা নিশ্চয় করতে পারি। সেদিন এক ওয়েবিনারে ‘অ্যাগ্রিন’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের একজন সামাজিক উদ্যোক্তা যেভাবে নিরাপদ কৃষি সম্প্রসারণের এবং বাজারজাতকরণের কথা বললেন তাতে আশাবাদী না হয়ে উপায় ছিল না। আরেকজন বললেন ছাদবাগান এবং পুরো শহরকে সবুজায়নের স্বপ্নের কথা। এসব তরুণ-তরুণীই আমাদের ভরসার কেন্দ্র এবং কৃষিই হতে পারে আমাদের বড় রক্ষাকবচ। এ কথা মনে রেখেই করোনা ও বন্যা- এ দুই সংকট মোকাবিলা করার মতো সাহস আমাদের দেখাতে হবে। এ প্রেক্ষাপটে আমরা কয়েকটি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব রাখতে পারি :
১. বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রের বন্যার্তদের খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি আরও কয়েক মাসের জন্য পর্যাপ্ত নগদ সহায়তা মোবাইল ব্যাংকের মাধ্যমে দিয়ে যেতে হবে। ২. সরকারের দেওয়া প্রণোদনার অংশ হিসেবে কুটিরশিল্প ও খুদে উদ্যোগের জন্য এমএফআইর সঙ্গে অংশীদারিত্বের কর্মসূচি জোরদার করতে হবে। ব্যাংকের স্থানীয় শাখাগুলোকেও কৃষিঋণের প্রশ্নে সক্রিয় থাকতে হবে।
৩. বন্যা নেমে যাওয়ার পর গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য ন্যূনতম মজুরিতে অন্তত ১০০ দিনের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার কর্মসূচি হাতে নিতে হবে। পাশাপাশি গ্রামীণ পূর্তকর্মও সচল রাখতে হবে। ৪. গ্রামীণ শিক্ষিত তরুণ-তরুণীদের নিরাপদ ও প্রাকৃতিক কৃষির উন্নয়ন ও বাজারজাতকরণে উৎসাহিত করতে হবে।
৫. স্কুল-কলেজের ছেলে-মেয়েদের করোনা মোকাবিলায় প্রয়োজনে জনসচেতনতা (মাস্ক ব্যবহার, হ্যান্ড স্যানিটাইজেশন ব্যবহার, বারবার হাত ধোয়া ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা) বৃদ্ধির জন্য সংগঠিত করতে হবে।
৬. স্থানীয় সরকার ও এনজিওকে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির উপকারভোগীদের তালিকা তৈরির কাজে তরুণদের যুক্ত করতে হবে। এ কাজে সর্বত্রই ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
৭. বন্যার্তদের আশ্রয়শিবিরে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করতে গ্রামীণ তরুণদের উৎসাহিত করতে এবং আশ্রয় কেন্দ্রগুলোয় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালু রাখতে হবে।
আমাদের নদ-নদীগুলো প্রকৃতির অবকাঠামো। এগুলো ড্রেজিং করে তার প্রবাহ সচল রাখার জন্য ব-দ্বীপ পরিকল্পনায় নানা উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদূরপ্রসারী জলবায়ুবান্ধব এ পরিকল্পনা যে কতটা বাস্তবানুগ তা এ বন্যার সময় টের পাচ্ছি। আমরা বুক বেঁধে আছি এ পরিকল্পনা কত দ্রুত বাস্তবায়ন হবে তা দেখার জন্য। প্রধানমন্ত্রী বন্যা মোকাবিলার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক থাকতে বলেছেন, যাতে বন্যার কারণে মানুষের ক্ষতি না হয়। সবাই মিলে লেগে থাকলে এবং উপযুক্ত কর্মকৌশল গ্রহণ করলে চলমান করোনা ও বন্যার সংকট মোকাবিলায় নিশ্চয় আমরা সফল হব। আমাদের এ সংকট থেকে পুনরুদ্ধারের কৌশল অবশ্যই সবুজ হতে হবে।
লেখক : ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর।
যোগাযোগ : dratiur@gmail.com
সুত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ নাজমুল কবীর পাভেল
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : জুমা কবীর মিম
সহ সম্পাদকঃ আরিফ মাহবুব
নির্বাহী সম্পাদকঃ ধ্রুব জ্যোতি দে
ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃ মাহমুদা আক্তার বিউটি
আইটি সম্পাদক : মাসুম আহমদ
উপদেষ্টা সম্পাদক : এ্যাডভোকেট জাহানারা বেগম
ইমেইল: sylnewsbd@gmail.com, pavel.syl@gmail.com
ফেইসবুক পেইজ : Syl News BD
মোবাইলঃ 01712-540420
শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান।
Design and developed by ওয়েব নেষ্ট বিডি