খুন সিলেটে, আটক নারায়ণগঞ্জে

প্রকাশিত: ১২:৫৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৮, ২০২০

খুন সিলেটে, আটক নারায়ণগঞ্জে

নিজস্ব প্রতিবেদক ::

পেশায় ট্যুরিস্ট গাইড পাশাপাশি সে ছবিও তুলত।১৫ জুলাই সকাল সাড়ে ৮ টা ক্যামেরা নিয়ে পর্যটকদের ছবি তুলতে বের হোন সাদ্দাম (৩০) এরপর বিকেলবেলা জাফলং বন বিটের গ্রিনপার্ক এলাকায় স্থানীয় লোকজন তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে থানা পুলিশকে খবর দেয়।

এরপর তদন্তে নামে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআই । ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত দুইজনকে গতকাল নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই। গ্রেফতারকৃতরা হলো নারায়ণগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জ থানার চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রের দীন ইসলামের ছেলে মো.হুমায়ুন (১৫) এবং একই এলাকার মো. সানীর ছেলে মো. সজল।

মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পিবিআই সিলেটের পুলিশ সুপার মো.খালেদ উজ জামান।

পুলিশ সুপার মো. খালেদ উজ জামান বলেন, এই হত্যাকান্ডের পর তার স্ত্রী বাদি হয়ে মামলা দায়ের করলে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ তদন্ত শুরু করে। পাশাপাশি পিবিআই এ ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করে। কিন্তু ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তেমন কোন ক্লু পাওয়া যাচ্ছিল না। মামলার এজাহারে তিন মাস পূর্বের একটি ঘটনা নিয়ে পূর্বশত্রুতার বিষয়ে কিছু তথ্য উল্লেখ ছিল।

এই বিষয়টিকে মুল ধরে তদন্তের কাজ চালিয়ে যায় পিবিআই। একপর্যায়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানা যায় মারা যাওয়ার দিন দুজন লোকের সাথে সাদ্দাম হোসেনকে দেখা যায়, কিন্তু তাদেরকে স্থানীয়রা তেমনটা চিনে না । এসব তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৬ জুলাই থেকে এসআই সুদিপসহ একটি টিম পুরোদমে কাজ শুরু করে। তদন্তের মাধ্যমে নানা তথ্য যাচাই বাছাই করে নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জে অভিযান পরিচালনা করে পিবিআই এবং ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত এই দুইজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে সাদ্দাম হোসেনের ব্যবহৃত স্যামসাং জে-২ মোবাইল ও ক্যানন ৭৫০ ডিএসএলআর ক্যামেরা উদ্ধার করা হয়।

তিনি বলেন, তারা মূলত পর্যটকের ছদ্মবেশে সিলেটে এসে এমন কাজ করেছে। গত ১৪ জুলাই তারা সিলেটে এসে টার্মিনাল এলাকার হোটেল আল হকে রাত্রিযাপন করে। হোটেলের রেজিস্ট্রারে সজল নিজের নাম উল্লেখ করলেও হুমায়ুন নিজের নাম সাগর হোসেন উল্লেখ করে।

১৫ জুলাই তারা জাফলংয়ে ঘুরতে যায় এবং সাদ্দাম হোসেনকে টার্গেট করে। ঘুরাঘুরির এক পর্যায়ে তারা সাদ্দাম হোসেনকে নিরিবিলি যায়গায় নিয়ে গিয়ে হত্যা করে এবং তার সাথে থাকা মোবাইল ও ক্যামেরা নিয়ে পালিয়ে যায়। পুলিশ সুপার জানান সজল পেশায় বাসের হেলপার এবং হুমায়ুন জুতার দোকানের সেলসম্যান।

উল্লেখ্য, প্রতিদিনের ন্যায় সেই দিন বুধবার (১৫ জুলাই) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ক্যামেরা নিয়ে পর্যটকদের ছবি তোলার জন্য পর্যটনকেন্দ্র সংগ্রাম বিজিবি ক্যাম্প এলাকায় যাওয়ার উদ্দেশে সাদ্দাম বাড়ি থেকে বের হন। এরপর বিকেলবেলা জাফলং বন বিটের গ্রিনপার্ক এলাকায় স্থানীয় লোকজন তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে থানা পুলিশকে খবর দেয়।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সাদ্দামের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। ঘটনাস্থল থেকে একটি রক্তমাখা ছুরি উদ্ধার করে পুলিশ।