সিলেট ১৩ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:৪১ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৮, ২০২০
ধর্ম পাতা :: কোরবানি শব্দটি আরবি ‘কোরবান’ শব্দ থেকে আগত। যার অর্থ উৎসর্গ করা। অন্যদিকে কোরবান শব্দটি কুরবু ধাতু থেকে উৎপন্ন, যার অর্থ নব তথা নিকটবর্তী হওয়া।
হজরত যায়েদ বিন আরক্বাম (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) এর সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! এই কোরবানিটা কি? রাসূল (সা.) জবাবে বললেন, তোমাদের পিতা ইব্রাহিম (আ.) এর সুন্নত বা আদর্শ।
তারা জিজ্ঞেস করলেন, এতে আমাদের জন্য কি ফায়েদা রয়েছে হে আল্লাহর রাসূল? তিনি (সা.) বললেন, (কোরবানির পশুর) প্রতিটি পশমের বিনিময়ে একটি করে নেকি রয়েছে। সাহাবিরা আবার জানতে চইলেন, হে আল্লাহর রাসূল! ভেড়া-দুম্বার পশমের ব্যাপারে কি কথা? তিনি বললেন, এর প্রতিটি পশমের বিনিময়েও এক একটি নেকি রয়েছে। (ইবনু মাজাহ)।
আর কিছুদিন পরই কোরবানির ঈদ। আর এই কোরবানি নিয়ে আমাদের মাঝে নানা ধরনের ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে।
কোরবানি কী মৃতদের জন্য নাকি জীবিতদের জন্য?
যেমন: অনেকের ধারণা কোরবানি শুধু মৃত ব্যক্তিদের জন্য বা তাদের পক্ষ থেকে করা হবে। এ ধারণা মোটেই ঠিক নয়। মৃত ব্যক্তির তরফ থেকে পৃথক কোরবানি করার নোকো দলীল নেই। তবে মৃত ব্যক্তিদের জন্য কোরবানি করা জায়েয ও একটি সওয়াবের কাজ। কোরবানি একটি সাদকা। আর মৃত ব্যক্তির নামে যেমন সদকা করা যায় তেমনি তার নামে কোরবানিও দেয়া যায়। মৃতব্যক্তি এর দ্বারা উপকৃত হবে, ইনশাআল্লাহ!
উপরন্তু, মৃতব্যক্তি এ ধরনের পূণ্যকর্মের মুখাপেক্ষীও থাকে। যেমন, মৃত ব্যক্তির জন্য সাদকার বিষয়ে হাদিসে এসেছে, আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (রা.) এর কাছে এসে জিজ্ঞের করল, হে রাসূল (সা.)! আমার মা হাঠাৎ ইন্তেকাল করেছেন। কোনো অসিয়ত করে যেতে পারেননি। আমার মনে হয় তিনি কোনো কথা বলতে পারলে অসিয়ত করে যেতেন। আমি যদি এখন তার পক্ষ থেকে সদকা করি তাতে কি তার সওয়াব হবে? তিনি উত্তর দিলেন, হ্যাঁ। (সহিহ বুখারি, হাদীস নম্বর: ১৩৩৮; সহিহ মুসলিম, হাদীস নম্বর: ১০০৪)।
মৃত ব্যক্তির জন্য এ ধরনের সদকা ও কল্যাণমূলক কাজের যেমন যথেষ্ট প্রয়োজন ও তেমনি তার জন্য উপকারী।
যদি মৃত ব্যক্তির জন্য কোরবাবি ওয়াজিব হয়?
যদি কোনো কারণে মৃত ব্যক্তির জন্য কোরবানি ওয়াজিব হয়ে থাকে তাহলে তার জন্য পূর্ণ একটি কোরবানি করতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় ব্যক্তি নিজেকে বাদ দিয়ে মৃত ব্যক্তির জন্য মৃত ব্যক্তির পক্ষে কোরবানি করেন। এটা মোটেই ঠিক নয়। ভালো কাজ নিজেকে দিয়ে শুরু করতে হয় তারপর অন্যান্য জীবিত ও মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে করা যেতে পারে।
যেমন হাদিসে এসেছে- আয়েশা (রা.) ও আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন কোরবানি দিতে ইচ্ছা করলেন তখন দুটি দুম্বা ক্রয় করলেন। যা ছিল বড়, হৃষ্টপুষ্ট, শিংওয়ালা, সাদা-কালো বর্ণের এবং খাসি। একটি তিনি তাঁর ওইসব উম্মতের জন্য কোরবানি করলেন; যারা আল্লাহর একত্ববাদ ও তার রাসূলের রিসালাতের সাক্ষ্য দিয়েছে, অন্যটি তার নিজের ও পরিবারবর্গের জন্য কোরবানি করেছেন। (ইবনে মাজা, হাদিসটি সহিহ)।
নবীর নামে, আল্লাহর নামে কোরবানি করা যাবে?
এছাড়াও নবীর নামে, আল্লাহর নামে, কোনো নেতার নামে কেউ চাইলে কোরবানি দিতে পারে। এতে কোনো সমস্যা নেই। তবে এটা দিতে হবে উনাদের পক্ষ থেকে, উনাদের নামে কোরবানি দেয়া যাবে না। নবীর নামে, আল্লাহর নামে, পিতা-মাতার নামে, এই নাম শব্দটা ব্যবহার করা যাবে না। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বলতে হবে উনাদের পক্ষ থেকে। কোরবানি শুধুমাত্র আল্লাহর নামে হতে হবে, অন্য যে কারো নামেই হোক সেটা হারাম হয়ে যাবে।
মৃত ব্যক্তির জন্য দেয়া কোরবানির গোস্ত খাওয়া যাবে?
মৃত ব্যক্তির জন্য দেয়া কোরবানির গোসত কোরবানিদাতা নিজেও খেতে পারবে, সদকাও করতে পারবে এবং অন্য শরিককে হাদিয়াও দিতে পারবে। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ১৮৫; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৯; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৬; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৭৮)।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ নাজমুল কবীর পাভেল
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : জুমা কবীর মিম
সহ সম্পাদকঃ আরিফ মাহবুব
নির্বাহী সম্পাদকঃ ধ্রুব জ্যোতি দে
ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃ মাহমুদা আক্তার বিউটি
আইটি সম্পাদক : মাসুম আহমদ
উপদেষ্টা সম্পাদক : এ্যাডভোকেট জাহানারা বেগম
ইমেইল: sylnewsbd@gmail.com, pavel.syl@gmail.com
ফেইসবুক পেইজ : Syl News BD
মোবাইলঃ 01712-540420
শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান।
Design and developed by ওয়েব নেষ্ট বিডি