বড়লেখায় ট্রিপল মার্ডারের প্রায় আড়াই বছর পর আসামি গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি

প্রকাশিত: ২:১৭ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৯, ২০২০

বড়লেখায় ট্রিপল মার্ডারের প্রায় আড়াই বছর পর আসামি গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি

স্বপন দেব, মৌলভীবাজার :: মৌলভীবাজারের বড়লেখায় প্রায় আড়াই বছর আগে প্রবাসীর স্ত্রী ও ুই সন্তানের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় এলাকায় তখন তোলপাড় হয়েছিল। এ ঘটনায় ৯ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছিল। কিন্তু মামলার পর মূল আসামিরা আত্মগোপনে থাকায় কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। প্রায় ৭ মাস আগে মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) স্থানান্তর হয়। এরপর মামলার ৪ নম্বর আসামি সু›র আলীকে (২৩) গ্রেপ্তার করে সিআইডি।
গত ২৬ জুলাই রাতে বড়লেখা উপজেলার সুজানগর ইউনিয়নের আজিমগঞ্জ বাজার থেকে সিআইডি’র মৌলভীবাজার কার্যালয়ের পুলিশ পরিদর্শক বিকাশ চন্দ্র াসের নেতৃত্বে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২৭ জুলাই বিকেলে আালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলার মূলরহস্য উদঘাটনের লক্ষ্যে সুন্দর আলীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
এই বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির মৌলভীবাজার কার্যালয়ের পুলিশ পরিদর্শক বিকাশ চন্দ্র দাস বুধবার (২৯ জুলাই) মুঠোফোনে বলেন, ‘এটি চাঞ্চল্যকর ট্রিপল মার্ডার মামলা। মামলার মূল আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে আত্মগোপনে থাকায় বিচার পাওয়ার বিষয়টি অন্ধকারে ছিল। মামলা তদন্তের দায়িত্ব পেয়ে প্রযুক্তির সহায়তা ও ছদ্মবেশ ধারণ করে ঘটনায় জড়িত একজন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছি। আালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাছাড়া মামলার মূল রহস্য উদঘাটন ও পলাতক অপরাপর আসামিদের গ্রেপ্তার এবং ঘটনার রহস্য উদঘাটনের জন্য আসামিকে রিমান্ডে এনে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদের নিমিত্তে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছি।’
সিআইডি ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১৯ ডিসেম্বর রাতে বড়লেখা উপজেলার সুজানগর ইউনিয়নের ভোলারকান্দি গ্রাম থেকে কাতারপ্রবাসী আকামত আলীর স্ত্রী মাজেদা বেগম (৩৬), মেয়ে লাবণী বেগম (৭) ও ছেলে ফারুক আহমদের (৪) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় নিহত গৃহবধু মাজেদার চাচাতো ভাই ইমরান আলী ২১ ডিসেম্বর রাতে বড়লেখা থানায় মামলা করেন। এতে মাজেদা বেগমের চাচা শ্বশুর শরাফত আলীকে প্রধান আসামি করে ৯ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৭-৮ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করেন। মামলার পর ওই বাড়ির তিন নারীকে আটক করা হয়েছিল। কিন্তু তাদের থেকে গুরুত্বপূর্ণ কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। মা-সন্তানসহ তিনজনের মৃত্যু ঘিরে নানা রহস্যের সৃষ্টি হয়।
তবে এটি পরিকল্পিত একটি হত্যাকান্ড বলে পুলিশ ও এলাকাবাসী ধারণা করছিলেন। কিন্তু মৃত্যু রহস্যের কোনো কূল-কিনারা করতে পারেনি থানা পুলিশ। কয়েক মাস পর মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এ স্থানান্তর হয়। পিবিআই-এর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তদন্ত করে প্রায় বছর খানেক পর আালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। তবে আালত পর্যালোচনা পূর্বক প্রতিবেদন গ্রহণ না করে স্বপ্রণোদিত হয়ে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দেন।
প্রায় ৭ মাস আগে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান সিআইডির মৌলভীবাজার কার্যালয়ের পুলিশ পরির্শক বিকাশ চন্দ্র াস। এরপর প্রযুক্তির সহায়তা ও ছদ্মবেশ ধারণ করে মামলার এজাহার নামীয় ৪ নম্বর আসামি সু›র আলীকে গ্রেপ্তার করেন। সুন্দর আলী নিহত মাজেদা বেগমের আপন দেবর।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ