অস্থির চালের বাজার

প্রকাশিত: ১:০৬ পূর্বাহ্ণ, মে ২৭, ২০২২

অস্থির চালের বাজার

সিলনিউজ বিডি ডেস্ক :: বোরো ধানের ভরা মৌসুমেও অস্থির চালের বাজার। কিছুতেই কাটছে না এ অস্থিরতা। হু হু করে বাড়ছে সব ধরনের চালের দাম। এক মাসেরও কম সময়ে চালের দাম পাঁচ দফায় কেজিপ্রতি অন্তত ৫ টাকা বেড়েছে। বলা যায়, দু-এক দিন অন্তর অন্তর বাড়ছে। ফলে চরম ভোগান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে ক্রেতাদের।

সরেজমিনে কুষ্টিয়া শহরের পৌরবাজার ও বড় বাজার ঘুরে চাল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের দু-এক দিন আগে থেকেই চালের দাম বৃদ্ধি শুরু হয়। ঈদের পর এ প্রবণতা যেন আরও বেড়েছে। সবশেষ গত ২৩ মে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে এক টাকা বেড়েছে। এ নিয়ে এক মাসেরও কম সময়ে পঞ্চম দফায় চালের দাম বৃদ্ধি পেল। এর আগে চালের দাম গত ১৯ মে কেজিপ্রতি এক টাকা বৃদ্ধি পেয়েছিল। বর্তমানে কুষ্টিয়ার চালের বাজারে অটোরাইচ মিলে ভাঙানো মিনিকেট চাল ৬৪ টাকা কেজি, সাধারণ মিনিকেট ৬৩ টাকা, অটোরাইচ মিলে ভাঙানো কাজললতা চাল ৫৬ টাকা, অটোরাইচ মিলে ভাঙানো বাসমতি চাল ৭৬ টাকা, সাধারণ বাসমতি চাল ৭৫ টাকা, অটোরাইচ মিলে ভাঙানো কাটারিভোগ চাল ৭২ টাকা, নাজির শাইল চাল ৭৮ টাকা ও অটোরাইচ মিলে ভাঙানো পাইজাম চাল ৪৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এর আগে গত ১৯ মে অটোরাইচ মিলে ভাঙানো মিনিকেট চাল ছিল ৬৩ টাকা, সাধারণ মিনিকেট চাল ৬০ টাকা, অটোরাইচ মিলের কাজললতা ৫৬, কাজললতা সাধারণ ৫২, অটোরাইচ মিলের বাসমতি ৭৫ টাকা, বাসমতি সাধারণ ৭২ টাকা, কাটারিভোগ অটোরাইচ মিল ৭২, নাজির শাইল ৭৮ ও পাইজাম ৪৬ টাকা। কুষ্টিয়া পৌর বাজারের চাল ব্যবসায়ী মা স্টোরের মালিক কিরণ জানান, দীর্ঘদিন ধরে চালের ব্যবসা করছি। কিন্তু বোরো ধানের ভরা মৌসুমে চালের দাম এ রকম দফায় দফায় বৃদ্ধি পেতে কখনো দেখা যায়নি। তিনি জানান, তিন-চার দিন আগে কুষ্টিয়ার খাজানগর মিল গেটে মিনিকেট ৫০ কেজির বস্তা যেখানে তারা ২ হাজার ৮০০ টাকায় কিনেছেন। এখন সেই মিনিকেট চাল ৩ হাজার ১০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চালের মোকাম কুষ্টিয়ার খাজানগর মিল গেটে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিল গেটেও চালের দাম দফায় দফায় বাড়ানো হচ্ছে। বর্তমানে খাজানগর মিল গেটে মিনিকেট চাল ৫০ কেজি ৩ হাজার ৫০ টাকা থেকে ৩ হাজার ১০০ টাকা, কাজললতা চাল ২ হাজার ৭০০ টাকা এবং আটাশ চাল ২ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চালের দামের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে ধানের দামও। বর্তমানে মিনিকেট ধান ১ হাজার ৪০০ টাকা মণ, বোরো ধান ৯৬০ টাকা, বাসমতি ধান ১ হাজার ৫০০ টাকা, কাজললতা ধান ১ হাজার ২১০ টাকা এবং বাসমতি চাল ১ হাজার ৭৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা মণ দরে বাজারে বিক্রি হচ্ছে। অথচ মৌসুমের শুরুতে বোরো ধান ছিল ৮৬০ টাকা মণ। ব্যবসায়ীরা বলছেন, চালের বাজার কমার আপাতত কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। বর্তমানে যে দাম রয়েছে সে দাম আরও বৃদ্ধি পেলেও বলার কিছু থাকবে না। বর্তমানে কুষ্টিয়ায় বোরো ধানের ভরা মৌসুম চলছে। ঈদের আগে থেকে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। এখন প্রায় শেষের পথে।
এবার জেলার ছয়টি উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য মতে, কুষ্টিয়া জেলার ছয়টি উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ৩৫ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। যেখানে আবাদ হয়েছে ৩৫ হাজার ২১৫ হেক্টর জমিতে। এ ছাড়া উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৫৪ হাজার ৪৭৮ মেট্রিক টন। এ বছর ফলন বেশ ভালো হওয়ার আশা রয়েছে কৃষি বিভাগের।

সূত্র : বিডি-প্রতিদিন