জগন্নাথপুরের পত্রিকার হকারদের দুর্বিষহ জীবন

প্রকাশিত: ১১:১৯ অপরাহ্ণ, মে ২৭, ২০২২

জগন্নাথপুরের পত্রিকার হকারদের দুর্বিষহ জীবন

জগন্নাথপুর প্রতিনিধি :: অনলাইন সংবাদ মাধ্যমের জয়জয়কার মুহূর্তেও পাঠকপ্রিয়তা রয়েছে প্রিন্ট মিডিয়ার। এখনো মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে দেওয়া হয় পত্রিকা। আর এই পৌঁছানোর কাজগুলো যারা করেন, তারা হলেন অবহেলিত হকার। এর মধ্যে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার পৌর সদরের শেরপুর গ্রামের মৃত যুগেশ বৈদ্যের ছেলে নিকেশ বৈদ্য। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস সহ বর্তমান বন্যার সময়ে সংবাদপত্রের পাঠক কমে যাওয়ায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন।

জানা যায়, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিতে সৃষ্টি হওয়া বন্যায় প্রতিদিন যে পরিমান পত্রিকা বিলি করতেন। এখন আর আগের মত হয় না। অনেক কষ্টে পত্রিকার সরবরাহ চালিয়ে যাচ্ছেন। যদিও সুদিনের অপেক্ষায় আছেন তিনি। আগের মত সরকারি অফিসে পত্রিকা রাখেনা। অনেক ব্যাংক ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে এখন পত্রিকা রাখে না। ব্যবসায়ীরাও দোকানপাটে পত্রিকা রাখে না। বর্তমানে পত্রিকা কম চলে। পত্রিকা কম চলায় হকার নিকেশ বৈদ্য খুবই দুর্বিষহ জীবন যাপন করেছেন। রাজধানীসহ সিলেট থেকে পত্রিকা আসার পর জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকা বিলি করে মাস শেষে আয় হয় ওই টাকায় বর্তমান বাজারে স্ত্রী সন্তান নিয়ে সংসার চালাতে গিয়ে ঘর মেরামতের টাকা জোগার করতে পারেননি তিনি। তাই জীর্ণশীর্ণ পুরনো টিনের চালায় রোদে পুড়ে আর বৃষ্টিতে ভিজে মানবেতর দিনযাপন করছেন তিনি। তার পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপনের চিত্র তার ঘর দেখলেই ফুটে ওঠে। তবে সমাজের বিত্তশালীদের নজর কাড়েনি বলে এখনো মানবেতর জীবন তার।

পারিবারিক সূত্র জানা যায়, উপজেলার সর্ব প্রথম পত্রিকা বিক্রেতা ছিলেন প্রয়াত আবদুল মনাফ ওরফে ঘড়ি বাবু। তাঁর হাত ধরে ১৯৯৯ সালে পৌর এলাকার শেরপুর গ্রামের মৃত যুগেশ বৈদ্যের ছেলে নিকেশ বৈদ্য বাল্যকাল থেকে পত্রিকা বিক্রি শুরু করেন। এখন পর্যন্ত হাল ধরে রেখেছেন নিকেশ।

পত্রিকার হকার নিকেশ বৈদ্য বলেন, মহামারি শুরুর পর থেকে অফিসগুলো প্রথম পর্যায়ে একেবারে পত্রিকা নেওয়া কমিয়ে দিয়েছিল। পরে কিছু অংশে বৃদ্ধি করলেও এখন বন্যার পত্রিকা বিক্রয় কমে গেছে। পত্রিকা বিক্রি করে যে আয় হয়, তা দিয়ে সংসারের খরচ, ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। সরকারি ও বেসকারিভাবে সে রকম কোনো সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থা চলতে থাকলে পেশা পরিবর্তন করতে হবে। আমি সকলের সহযোগিতা চাই।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ