‘৬ দফা ছিলো স্বাধীনতা আন্দোলনের রিহার্সাল’

প্রকাশিত: ১১:৩৩ অপরাহ্ণ, জুন ৭, ২০২২

‘৬ দফা ছিলো স্বাধীনতা আন্দোলনের রিহার্সাল’

সিলনিউজ বিডি ডেস্ক :: ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস উপলক্ষে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রবীণ পার্লামেন্টারিয়ানরা বলেছেন, ৬ দফা ছিল স্বাধীনতা আন্দোলনের যুগান্তকারি পরিবর্তন এবং স্বাধীনতার রিহার্সল। বঙ্গবন্ধু ৬ দফার সিঁড়ি বেয়েই ধাপে ধাপে সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন। পাক-ভারত যুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধু ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্ধকে বলেছিলেন, যুদ্ধের পর এমন কর্মসূচি দেবো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসহ দেশবাসী তোদের ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নিবে। আর সেটা ছিল এই ৬ দফা।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে একাদশ সংসদের ১৮তম (বাজেট) অধিবেশনের মঙ্গলবারের বৈঠকে ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস উপলক্ষে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে এ অভিমত ব্যক্ত করেন আওয়ামী লীগের বয়োজেষ্ঠ্য নেতারা।
আলোচনায় অংশ নেন, আমির হোসেন আমু, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, তোফায়েল আহমেদ, জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশিদ। আলোচনার সূত্রপাত করেন আওয়ামী লীগের আবুল কালাম আজাদ।

আমির হোসেন আমু বলেন, বাংলাদেশের মুক্তির সংগ্রামে ৭ জুন ছিলো একটি ঐতিহাসিক দিন। পাকিস্তানী শাসকরা এই ৬ দফাকে বিচ্ছিন্নতাবাদী বলে দাবি করেছিলো। কিন্তু বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন এটা বিচ্ছিন্নতাবাদী নয় এটা বাঙালির স্বাধিকার ও স্বায়ত্বশাসনের দাবি। বঙ্গবন্ধু সারা দেশে গণআন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। তিনি আরো বলেন, পাক-ভারত যুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধু ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্ধকে বলেছিলেন, যুদ্ধের পর এমন কর্মসূচি দেবো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসহ দেশবাসী তোদের ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নিবে। আর সেটা ছিল এই ৬ দফা। তিনি আরো বলেন, ঐ সময় পাট শ্রমিকদের দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের সাথে গণ আন্দোলন গড়ে তুলে শ্রমিক সংগঠনগুলিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। শ্রমিকরা ৬ দফা আন্দোলনে এগিয়ে আসে। ৭ জুনের হরতাল ছিলো বঙ্গবন্ধুসহ রাজবন্দিদের মুক্তি ও ৬ দফা দাবি মেনে নেওয়া। সকল জুলম নির্যাতনের মধ্য দিয়েই হরতাল সফল করা হয়। হরতাল সফল হওয়ার পর এদেশের মানুষ ৬ দফাকে মেঘনা কার্টার হিসেবে গ্রহণ করেন।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, ৬ দফা ছিলো বঙ্গবন্ধুর একটি ঐতিহাসিক ও সময়োপোযোগি সিদ্ধান্ত। ৬ দফা ঘোষণা করার পর বঙ্গবন্ধু আমাদের বলেছিলেন, সাকো দিলাম, ওপারে যাবো। বঙ্গবন্ধু তখনই বিশ্বাস করতেন বাংলাদেশ স্বাধীন হবে। এই লক্ষ্যেই তিনি ৬ দফা ঘোষণা করেছিলেন। এই ৬ দফার আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই আন্দোলনের অগ্রভাগে ছিলেন। ৬ দফা আমাদের স্বাধীনতার অনুপ্রেরণা ছিলো, সেই ৬ দফা থেকে ১১ দফা। ৬ দফার সিঁড়ি বেয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রামকে বঙ্গবন্ধু এগিয়ে নিয়েছিলেন ধাপে ধাপে। এর মাধ্যমে তিনি বাঙালি জাতিকে মুক্ত কওে দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা ছিলো বাংলাদেশের স্বাধীনতার রিহার্সল।

শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, ৬ দফা দেওয়ার পর বঙ্গবন্ধু আন্দোলন করতে গিয়ে সেখানেই যান সেখানেই গ্রেফতার করা হয়। তখন বঙ্গবন্ধুসহ ৩২ হাজার আওয়ামী লীগ ও ছাত্র নেতাদেও গ্রেফতার করা হয়। ৬ দফার দাবিতে প্রথম ৭ জুন হরতাল পালন করা হলো, মানুষ স্বত:স্ফুর্তভাবে সেই হরতালে অংশ নিলো। এরপর বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়, কোথায় নিয়ে যাওয়া হয় কেই জানতো না, ৬ মাস বঙ্গবন্ধুর কোনো খোঁজ ছিলো। ১৯৬৯ সালে আগোরতলা ষড়যন্ত্র মালার বিরুদ্ধে সারা দেশে আন্লদোন ছড়িয়ে পড়ে। আইউব খান উপায় না দেখে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করে ২২ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধুকে ছেড়ে দিলো।

আওয়ামী লীগের আবুল কালাম আজাদ বলেন, ৬ দফা বাংলাদেশের স্বাধীনতার অন্যতম ভিত্তি। ৬ দফার মধ্য নিহিত ছিলো বাঙালির স্বাধীকার ও স্বাধীনতার কথা।

কাজী ফিরোজ রশিদ ১৯৬৬ সালের ৭ জুনের হরতাল সফল করে তুলতে জগন্নাথ হলের ছাত্রদের ঐতিহাসিক ভূমিকার কথা তুলে ধরেন।

সূত্র : বিডি প্রতিদিন