জগন্নাথপুরে ঋণ আতঙ্কে ঘুম হারাম মৎস্য খামারীদের

প্রকাশিত: ৯:৫০ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১, ২০২২

জগন্নাথপুরে ঋণ আতঙ্কে ঘুম হারাম মৎস্য খামারীদের

জগন্নাথপুর প্রতিনিধি :: সিলেটের ইতিহাসের ভয়াবহ বন্যায় সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে কোটি কোটি টাকার ফিসারির মাছ ভেসে গেছে। ফলে আর্থিকভাবে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন খামারিরা। মাছ চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, যা অপূরণীয়। তারা বিভিন্ন ব্যাংক, এনজিও ও ব্যক্তির কাছ থেকে ঋণ নিয়ে মাছ চাষ করায় এখন কিভাবে সেই টাকা শোধ করবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। ঋণ আতঙ্কে অনেকের চোখের ঘুম হারাম হয়ে গেছে।

জানা যায়, একটি পৌরসভা ও উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে ৩ হাজার ৫১০টি মাছের খামার রয়েছে। তালিকাভুক্ত সবকটি খামারের প্রায় ৪ কোটি টাকার মাছ পানিতে ভেসে গেছে।
তবে স্থানীয়রা জানান, ৬ থেকে ৭ কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানা যায়, গত ১৭ জুন স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় তলিয়ে যায় জগন্নাথপুর পৌরসভা সহ উপজেলার ৮ ইউনিয়নের গ্রামের পর গ্রাম। পানিতে ভেসে যায় ছোট বড় প্রায় ৪ হাজার পুকুরের মাছ। প্রথমদিকে পানি বাড়ছে দেখে ফিসারির চাষিরা জাল ও বাঁশ দিয়ে উঁচু করার চেষ্টা করলেও বন্যার ঢলে ভেসে গেছে কয়েক কোটি টাকার মাছ।

এদিকে, মৎস্যচাষিরা মাছ ভেসে যাওয়ায় পড়েছেন বিপাকে। খামারিরা ব্যাংক ও এনজিও সহ বিভিন্ন পর্যায়ে ঋণ নিয়ে মাছ চাষ করেছিলেন। স্বপ্ন বুনেছিলেন তাদের উৎপাদিত মাছ বিক্রি করে নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাবেন এবং তাদের ঋণ শোধ হবে। কিন্তু আকস্মিক বন্যায় ভেসে গেছে তাদের স্বপ্নও। বর্তমানে বন্যার পানি নেমে গেলেও এর ক্ষতচিহ্ন নিয়ে অতিকষ্টে দিনাতিপাত করছেন মৎস্য চাষিরা। এর মধ্যেই মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে ঝুলে আছে ঋণের বোঝা। তারা এখন বুঝে উঠতে পারছেন না কিভাবে এই ঋণ শোধ করবেন।

বাগময়না গ্রামের খামারি নাসিম মিয়া জানান, ছোট বড় ৬টি পুকুরে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করেছিলাম গত বছর। এবারের বন্যায় ভেসে গেছে ফিসারির সব মাছ। এতে ৬০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে আমার। ইসলামপুর গ্রামের বারিক মিয়া জানান, গত ৩বছর ধরে মাছ গুলো বড় করেছিলাম কিন্তু ভয়াবহ বন্যায় সব মাছ নিয়ে গেছে। ঋণ নিয়ে পুকুরে মাছ চাষ করি, সব কিছু শেষ হয়ে গেছে।

জগন্নাথপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান জানান, বন্যায় জগন্নাথপুর উপজেলায় ৩ হাজার ৫১০টি খামারের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এতে ৪ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিষয়টি লিখিতভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।