রসুল (সা.)-কে অনুসরণ মুমিনদের কর্তব্য

প্রকাশিত: ১২:৩১ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২০

রসুল (সা.)-কে অনুসরণ মুমিনদের কর্তব্য

মুহম্মাদ জিয়াউদ্দিন

রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আনীত বিধান ইসলাম। আর ইসলামের মূলভিত্তি আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ আল্লাহর রসুল। আল্লাহকে চিনতে হলে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশিত পথ চিনতে হবে। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ভালোবাসতে হবে। তাঁর প্রতি ভালোবাসা মুমিন হওয়ার পূর্বশর্ত। ইমাম গাজ্জালি (রহ.) বলেন, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা কিছু নিয়ে এসেছেন, সবকিছুর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করাকে ইমান বলে।’ সোজা কথায় রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-অভিমুখী হওয়া ইমানের পূর্বশর্ত। হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত মুমিন হতে পারবে না যতক্ষণ না আমি তার কাছে তার পিতা, সন্তান ও অন্যসব লোকের তুলনায় অধিক প্রিয় হব।’ বুখারি, মুসলিম, মিশকাত।

আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের কেউই ততক্ষণ পর্যন্ত ইমানদার হতে পারবে না যতক্ষণ না তার কামনা-বাসনা আমার আনীত বিধানের অনুবর্তী হবে।’ শারহুস সুন্নাহ, মিশকাত।
মুহাদ্দিসরা ইমানের পূর্বশর্ত হিসেবে শর্তারোপের সূক্ষ্ম কারণ উদ্ঘাটন করে বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হলেন আল্লাহ ও বান্দার মধ্যে সেতুবন্ধ। আল্লাহর সঙ্গে বান্দার সম্পর্ক তাঁর অনুসরণের ওপরই নির্ভরশীল। একজন মানুষ অন্য একজন মানুষের পরিপূর্ণ আনুগত্য তখনই করে যখন সে ওই ব্যক্তির প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধাবোধ, প্রাণঢালা ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা পোষণ করে। তার মধ্যে এগুলো বিদ্যমান না থাকলে স্বভাবতই সে আনুগত্যবিমুখ হয়ে পড়ে। এ পরিপ্রেক্ষিতেই উক্ত হাদিসে ইমানের জন্য রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ভালোবাসাকে পূর্বশর্ত করা হয়েছে। সাধারণ ইমান মৌখিক স্বীকারোক্তির দ্বারাই অর্জিত হয়। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ভালোবাসা, আনুগত্য ও অনুসরণ করা ইমানের পূর্ণতার বহিঃপ্রকাশ। অতএব এ কথা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলা যায় যে, এখানে ইমান বলতে পরিপূর্ণ ইমানই উদ্দেশ করা হয়েছে। আল্লাহ ও বান্দার মাঝে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেহেতু সেতুবন্ধ, সেহেতু আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে জীবনের সব ক্ষেত্রে তাঁর (রসুলুল্লাহ) আদর্শ অনুসরণ করতে হবে। একে ইমানি দায়িত্ব হিসেবে দেখতে হবে। যাপিত জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁকে অনুসরণের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টির বিধান নিশ্চিত হবে। ইবাদতের ক্ষেত্রে তাঁর দেওয়া পথ যেমন অনুসরণীয়, তেমন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁর দেখানো পথে চলতে হবে। আল্লাহ আমাদের রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি অনুগত থাকার ও মহব্বত পোষণ করার তৌফিক দান করুন।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।
সুত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন।

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ