“নিউইয়র্কে শাহ আহমদ শফী (রহঃ) মাগফেরাত কামনায় দোয়া ও আলোচনা সভা”

প্রকাশিত: ৩:২৪ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২০

“নিউইয়র্কে শাহ আহমদ শফী (রহঃ) মাগফেরাত কামনায় দোয়া ও আলোচনা সভা”

 

গোয়াইনঘাট প্রতিনিধিঃ
নিউইয়র্কে দুআ মাহফিলে টেলিকনফারেন্সে আল্লামা আরশাদ মাদানী ও আল্লামা মুফতী ত্বকী উসমানী: শায়খুল ইসলাম শাহ আহমদ শফী (রহ:) ছিলেন সর্বজন শ্রদ্ধয় ও উলামায়ে কেরামের সিপাহসালার এবং আধ্যাত্মিক রাহবার।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর আমীর, দারুল উলূম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক,শায়খুল ইসলাম সাইয়্যিদ হোসাইন আহমদ মাদানী রহ,এর অন্যতম খলিফা, প্রবীণ আলেম আল্লামা শাহ আহমদ শফী রহ: এর জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা,খতমে কুরআন এবং দুআ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।গত ২০শে সেপ্টেম্বর শনিবার বাদ মাগরিব মাদানী একাডেমী অফ নিউইয়র্ক আয়োজিত উক্ত মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক মাওলানা মুহিব্বুর রহমান।দারুল উলূম নিউইয়র্কের মুহাদ্দিস মাওলানা আজিজুর রহমান ঘোগারকুলীর সাবলীল উপস্থাপনায় সংগঠনের অস্থায়ী অফিসে অনুষ্ঠিত মাহফিলের শুরুতে কালামে হাকীম থেকে তেলাওয়াত করেন হাফেজ আবু তাহের।আল্লামা শাহ আহমদ শফী রহ: এর জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা সভায় টেলিকনফারেন্স প্রধান মেহমানের আলোচনা রাখেন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের প্রেসিডেন্ট আল্লামা শায়খ আরশাদ মাদানী হাফিজাহুল্লাহ।বাংলাদেশের সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেম, আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ এর চেয়ারম্যান, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর আমীর আল্লামা আহমদ শফীর ইন্তেকালে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে বলেন,তার হৃদয়বিদারক ইন্তেকালের সংবাদে আমরা বিমর্ষিত ও আহত হয়েছি। তিনি হযরত শায়খুল ইসলাম মাদানী রহ. যোগ্য শাগরেদ, খলিফা, মুজায ও আমাদের সকলের প্রিয় ছিলেন। মাদানী পরিবারের সাথে তাঁর সম্পর্ক, হৃদ্যতা ও ভালোবাসা ছিল পঞ্চাশ বছরেরও অধিক সময়ের। আল্লাহ তাআলা তাঁর দ্বারা দ্বীনের অনেক বড় বড় কাজ নিয়েছেন।
মাওলানা আরশাদ মাদানী আরো বলেন, বাংলাদেশে তাঁর ছাত্র, ভক্ত অনুরক্তের সংখ্যা অগণিত। ১৯৪৬ সনে দারুল উলূম দেওবন্দ থেকে ফারেগ হয়ে তিনি তাঁর গোটা জীবন ইসলামের প্রচার -প্রসার, দরস-তাদরিস, হাদিস, ফিকহ, বাইয়াত, সুলুক, ইসলাহ ও তাজকিয়ার জন্য ওয়াকফ করে দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড’ বেফাক ও ‘হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ’ এর চেয়ারম্যান হওয়ার সুবাধে তিনি বাংলাদেশের রাজনীতি, শিক্ষা ও সমাজ গঠনে যোগ্য নেতৃত্বের আসন অলংকৃত করেছেন। বার্ধক্য ও অসুস্থতার কারণে কখনো তিনি তাঁর আদর্শ ও মিশন থেকে পশ্চাদপসরণ করেননি। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণেও তিনি মসনদে হাদিসে বুখারী শরীফের দরস দিয়েছেন।
জমিয়তে উলামা হিন্দের প্রেসিডেন্ট বলেন, বাংলা ও উর্দুতে একাধিক গ্রন্থ রচনা করেছেন। তিনি ছিলেন দেশ ও জাতির কল্যান ও মঙ্গলে সদা নিবেদিত একজন আলেমে দ্বীন। ইখলাস, লিল্লাহিয়্যাত ও সাদাসিধে জীবন যাপন ছিল তাঁর অনন্য বৈশিষ্ট্য। বাবার মৃত্যু নিঃসন্দেহে সন্তানদের জন্য বিরাট বেদনাদায়ক ও শোকের। তবে আল্লাহ পাকের ইচ্ছা আমাদের সবার থেকে উর্ধ্বে। তাঁর ফায়সালার উপর সকলের ধৈর্য্য ধারণ করা আবশ্যক। এ জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে পুরষ্কারের অঙ্গীকার রয়েছে।অনুরূপ ভাবে পাকিস্তানের সাবেক চীফ জাস্টিস আল্লামা ত্বকী উসমানী হাফিজাহুল্লাহর একটি বক্তব্য রেকর্ডিং করে শুনান মাওলানা ইয়ামীন হোসাইন।
দুআ মাহফিলে মেহমান হিসেবে অংশগ্রহণ করেন দারুল উলূম নিউইয়র্কের শায়খুল হাদীস মাওলানা আবদুর রহীম, আল মনসুরের মুফতী মুহাম্মদ আবদুল্লাহ,নিউইয়র্কের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বদরুল হক ও মসজিদ আল আমানের সাবেক সভাপতি শামছুদ্দীন সুনাই।
অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন দারুল উলূম নিউইয়র্কের সাবেক প্রিন্সিপাল মাওলানা ইয়ামীন হোসাইন,জামেয়া ইসলামিয়া মসজিদ অফ উডহ্যাভেনের ইমাম ও খতীব মাওলানা শায়খ আসআ’দ আহমদ, জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের জামেয়া কুরআনিয়া মাদরাসার প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা মোজাহিদুল ইসলাম,ম্যানহাটনের আস সাফা ইসলামিক সেন্টারের ইমাম ও খতীব মাওলানা রফিক আহমদ রেফাহী, আমেরিকান মুসলিম সেন্টারের সভাপতি হাফেজ রফিকুল ইসলাম, দারুস সালাম মসজিদ ইমাম ও খতীব মাওলানা আবদুল মুকিত, আস সাফা ইসলামিক সেন্টারের জেনারেল সেক্রেটারী মুফতী লুৎফুর রহমান ক্বাসিমী,দারুল কুরআন ও সুন্নাহ’র মুহাদ্দিস মাওলানা হাম্মাদ আহমদ গাজীনগরী, জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের জামেয়া কুরআনিয়া মাদরাসার উস্তাদ হাফেজ মাওলানা আহমদ আবু সুফিয়ান, লেখক -গবেষক রশীদ জামীল, আল ফুরকান জামে মসজিদের ইমাম ও খতীব মাওলানা আবদুল হালিম ও মাওলানা শাহেদ আহমদ প্রমুখ।
এছাড়াও দুআ মাহফিলে আরো অনেক উলামায়ে কেরাম ও সাধারণ মুসল্লিয়ান উপস্থিত ছিলেন।আল্লামা শাহ আহমদ রাহিমাহুল্লাহ এর মাগফিরাত কামনা করে দুআ পরিচালনা শায়খুল হাদীস মাওলানা আবদুর রহীম।