ইরান-যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধের আশঙ্কা আরব নেতাদের

প্রকাশিত: ১২:০১ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২০

ইরান-যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধের আশঙ্কা আরব নেতাদের

অনলাইন ডেস্ক
ইরান-যুক্তরাষ্ট্র মারমুখী অবস্থানে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে সংঘাতের আশঙ্কা করছেন আরব লীগের অন্তর্ভুক্ত বেশ কয়েকটি দেশের নেতারা। জাতিসংঘে সাধারণ পরিষদের ৭৫তম অধিবেশনে দেয়া বক্তব্যে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেন তারা।

মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার বক্তব্যে ইরানের ওপর নতুন করে চাপের পরদিনই এ বক্তব্য দেয় সৌদি আরব ও ইরাক। এএফপি, ওয়াফা, আলজাজিরা।

ইরাকের প্রেসিডেন্ট বারহাম সালেহ তার বক্তব্য বলেন, ‘আমরা চাই না ইরাক অন্য কারও জন্য যুদ্ধক্ষেত্রে হয়ে পড়ুক, যেখানে আমাদের ভূখণ্ডে তারা একে-অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। ইরাক যথেষ্ট যুদ্ধ দেখেছে এবং আমাদের সার্বভৌমত্বেরা ওপর অনেক হামলা হয়েছে।’

সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান তার বক্তব্যে ইরানের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং গত বছর সৌদি আরবের একটি তেলক্ষেত্রে ড্রোন হামলার বিষয়টি উল্লেখ করেন। যুক্তরাষ্ট্র ওই সময় বলেছিল ইরান ওই ড্রোন হামলা করেছে এবং সেটি ছিল ইরানের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার লঙ্ঘন।

সালমান বলেন, ‘গত কয়েক দশকের আচরণকে পেছনে ফেলে সৌদি রাজতন্ত্র ইরানের দিকে শান্তির হাত প্রসারিত করেছে খোলা মনে; কিন্তু সে হাত ধরা হয়নি এবং সুযোগ কাজে লাগানো হয়নি। তারপর ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে বিশ্বশক্তিগুলোর পরমাণু সমঝোতাকে স্বাগত জানিয়েছে সৌদি আরব। কিন্তু এবারও বিশ্ব দেখেছে কীভাবে তেহরান সবকিছু প্রত্যাখ্যান করে তার সম্প্রসারণ নীতি অব্যাহত রেখেছে।’

এর আগে মঙ্গলবার নিজের বক্তব্যে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি ইরানের ওপর নতুন করে মার্কিন অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার নিন্দা করার সময় সৌদি আরবের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘তারা শত কোটি ডলারের অস্ত্র তাদের গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করেছে আমাদের এ অঞ্চলে তাদের পাওয়ারফুল করার জন্য। এরপরও তারা ইরানকে তার সর্বনিম্ম প্রতিরক্ষা প্রয়োজন থেকে বিরত রাখার জন্য বৃথা চেষ্টা করে যাচ্ছে।’

অধিবেশনের প্রথম দিন নিজের বক্তব্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইরান জাতিসংঘের একটি অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করার সেটি পুনরায় আরোপ করার চেষ্টা করছেন তিনি।

ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহী গ্রুপ দাবি করেছে যে, মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইলের হয়ে যুদ্ধ করছে সৌদি আরব ও আরব আমিরাত। হুতিদের মুখপাত্র আবদুস সালাম লন্ডনে একটি বেসরকারি টিভিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এ অভিযোগ করেন।

মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি আর আগের মতো নেই। অনেক কিছু বদলে গেছে। দীর্ঘদিনের শত্রু ইসরাইলের সঙ্গে দুটি আরব দেশ আরব আমিরাত ও বাহরাইন সম্পর্ক স্থাপন করেছে এবং সৌদি আরবসহ আর কিছু দেশ একই পথে অগ্রসর হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় মধ্যপ্রাচ্যে
আরব-ইসরাইল-যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্ক-ইরান-কাতার-চীন-রাশিয়া মেরুকরণ হচ্ছে।

ফিলিস্তিন থেকে আরবরা ইসরাইলের দিকে ঝুঁকে পড়ায় নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় তুরস্কের দ্বারস্থ হয়ে ফিলিস্তিন। সোমবার ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ফোন করে ফিলিস্তিনের অভ্যন্তরীণ সংহতি ও নির্বাচন সংক্রান্ত ইস্যুতে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগানের সহায়তা কামনা করেন।

এদিকে, নয়া মেরুকরণকে সামনে রেখে সৌদি আরবের প্রবাসী ভিন্নমতাবলম্বীরা ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি পার্টি নামে একটি দল গঠন করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী ভিন্নমতাবলম্বী সৌদি নাগরিকদের নিয়ে বিরোধী দলটির যাত্রা শুরু হয় ২৩ সেপ্টেম্বর।

সৌদি আরবের দীর্ঘ রাজতন্ত্রের ইতিহাসে এটিই প্রথম কোনো বিরোধী রাজনৈতিক দল। প্রবাসী হলেও পর্যায়ক্রমে এটি রাজতন্ত্রকে হুমকির মুখে ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ এর আগে একাধিকবার দল গঠনের চেষ্টা করা হলেও গ্রেফতার ও দমন-পীড়নের কারণে সেটা সম্ভব হয়নি।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ