জুমার দিনের অন্যতম আমল সুরা কাহাফ তিলাওয়াত

প্রকাশিত: ১২:২৯ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২০

জুমার দিনের অন্যতম আমল সুরা কাহাফ তিলাওয়াত

নূর মুহাম্মদ রাহমানী

 

মহান আল্লাহ আপন কুদরতে এ নিখিল ধারা সৃষ্টি করেছেন। এর মধ্যে কিছু জিনিসকে কিছু জিনিসের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। সাতটি দিবস সৃষ্টি করেছেন, এর মধ্যে জুমার দিনকে অন্যান্য দিনের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। জুমার ফজিলত ও গুরুত্বের তালিকায় উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, সপ্তাহের দিনগুলোর মধ্যে শুধু জুমার নামেই কোরআনে একটি সুরা নাজিল হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনগণ! জুমার দিনে যখন নামাজের জন্য আহ্বান করা হয় তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং কেনাবেচা ত্যাগ কর, এ-ই তোমাদের জন্য শ্রেয় যদি তোমরা উপলব্ধি কর।’ সুরা জুমা, আয়াত ৯। সুরা কাহাফ জুমার দিনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আমল। কোরআনের অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ সুরা এটি। হাদিসে সুরাটিকে আল্লাহর সাকিনা তথা প্রশান্তি বলা হয়েছে। জনৈক ব্যক্তি সুরা কাহাফ পড়ছিল। তখন লোকটি তাকিয়ে দেখতে পেল একখ- মেঘ তাকে পরিবেষ্টন করে নিয়েছে। বারা ইবনে আজেব বর্ণনা করেছেন, লোকটি বিষয়টি রসুল (সা.)-এর কাছে বলল। তিনি তাকে উদ্দেশ করে বললেন, ‘হে অমুক! তুমি সুরাটি পড়তে থাকো। কারণ এটি ছিল আল্লাহর রহমত বা প্রশান্তি যা কোরআন তিলাওয়াতের কারণে বা কোরআন তিলাওয়াতের জন্য অবতীর্ণ হয়েছিল।’ মুসলিম। অর্থাৎ এ হলো আল্লাহর পক্ষ থেকে সাকিনা বা প্রশান্তি, যা কোরআন পাঠের সময় অবতীর্ণ হয়। হজরত আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহাফ পড়বে, তার (ইমানের) নুর এ জুমা থেকে আগামী জুমা পর্যন্ত চমকাতে থাকবে।’ মিশকাত। হাদিসটি দ্বারা বোঝা গেল সুরা কাহাফ জুমার দিনের সঙ্গে বিশেষ সম্পর্ক রাখে। যার কারণে এদিনে এ সুরার তিলাওয়াতের জন্য বিশেষভাবে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলে করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিনে সুরা কাহাফ পাঠ করবে কিয়ামতের দিন তার পায়ের নিচ থেকে আকাশের মেঘমালা পর্যন্ত নুর আলোকিত হবে এবং দুই জুমার মধ্যবর্তী গুনাহ মাফ হবে।’ আততারগিব ওয়াত তারহিব। অন্য আরেকটি হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি জুমার রাতে সুরা কাহাফ পাঠ করবে, তার জন্য স্বীয় অবস্থানের জায়গা থেকে পবিত্র মক্কা পর্যন্ত একটি নুর হবে।’ আততারগিব ওয়াত তারহিব।

সুরাটির প্রথম ১০ আয়াত মুখস্থ করে এর প্রতি আমল করার অনেক ফজিলত রয়েছে। রসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সুরা কাহাফের প্রথম ১০টি আয়াত মুখস্থ করবে তাকে দাজ্জালের অনিষ্ট থেকে নিরাপদ রাখা হবে।’ মুসলিম। কোনো কোনো বর্ণনায় শেষ ১০টি আয়াতের ব্যাপারেও এ ধরনের ফজিলতের কথা বলা হয়েছে। রসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সুরা কাহাফ পাঠ করবে, কিয়ামতের দিন তার জন্য এমন একটি নুর হবে, যা তার অবস্থানের জায়গা থেকে মক্কা পর্যন্ত আলোকিত করে দেবে। আর যে ব্যক্তি এর শেষ ১০টি আয়াত পাঠ করবে, তার জীবদ্দশায় দাজ্জাল বের হলেও তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।’ সিলসিলায়ে সহিহা।
পড়ার সময় : বৃহস্পতিবার দিন শেষে সূর্য ডোবার পর থেকে শুরু করে শুক্রবার সূর্যাস্ত পর্যন্ত একাধিক বৈঠকে সুরা পড়া জরুরি নয়। বরং বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে শুরু করে শুক্রবার সূর্যাস্ত পর্যন্ত একাধিক বৈঠকে ভাগ ভাগ করে এ সুরা পড়ে শেষ করলেও একই সওয়াব পাওয়া যাবে।

লেখক : শিক্ষক, জামিয়া আরাবিয়া দারুল উলুম বাগে জান্নাত, চাষাঢ়া, নারায়ণগঞ্জ।

সুত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
    123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
       
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ