‘করোনাভাইরাসের মতো আরও মহামারী দেখা দেবে’

প্রকাশিত: ২:২০ অপরাহ্ণ, জুন ১০, ২০২০

‘করোনাভাইরাসের মতো আরও মহামারী দেখা দেবে’

সিল-নিউজ-বিডি ডেস্ক :: বন ও প্রকৃতি ধ্বংসের কারণে মানবজাতির জন্য সামনে আরও খারাপ সময় অপেক্ষা করছে বলে দাবি করছেন বিজ্ঞানীরা।

করোনাভাইরাসের মতো এমন আরও অনেক মহামারী দেখা দিতে পারে বলে হুশিয়ার করেছেন বিশেষজ্ঞরা। খবর বিবিসির।

যুক্তরাজ্যের লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা এই গবেষণার নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বিজ্ঞানীরা বলছেন, বন ধ্বংস এবং বন্যপ্রাণীর আবাসভূমিতে মানুষের ঢুকে পড়ার ফলে এখন ঘন ঘন এবং সহজেই প্রাণী থেকে মানুষে রোগ ছড়িয়ে পড়ছে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানুষ যে সভ্যতা গড়ে তুলেছে, তাতে বন্যপ্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে রোগ সংক্রমণ এবং তার পর তা সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ার ‘নিখুঁত ব্যবস্থা’ করে রাখা আছে।

প্রাকৃতিক জগতে মানুষের অনুপ্রবেশ সেই প্রক্রিয়াকে দ্রুততর করছে। এ কথা বলছেন সারা বিশ্বের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা- যারা কোথায় ও কীভাবে নতুন রোগের বিস্তার ঘটে তা নিয়ে গবেষণা করেন।

তাদের এই প্রয়াসের অংশ হিসেবে তারা একটি পদ্ধতি তৈরি করেছেন, যাতে এসব রোগ বিস্তারে প্রক্রিয়ায় কী কী সাদৃশ্য দেখা যায় তা চিহ্নিত করা সম্ভব, যাকে বলে প্যাটার্ন রিকগনিশন।

কোনো বন্যপ্রাণী মানুষের জন্য সবচেযে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ তা এ পদ্ধতিতে পূর্বাভাস দেয়া সম্ভব।

যুক্তরাজ্যের লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ম্যাথিউ বেলিস বলছেন, গত ২০ বছরে আমরা- সার্স, মার্স, ইবোলা, এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং সোয়াইন ফ্লুর মতো ছয়টি বড় বড় হুমকির সম্মুখীন হয়েছি।

তিনি বলেন, আমরা পাঁচটি বুলেট এড়াতে পেরেছি, কিন্তু ছয় নম্বরটার হাত থেকে বাঁচতে পারিনি।

সবচেয়ে বড় কথা– এটিই যে আমাদের সম্মুখীন হওয়া শেষ মহামারী, তা মোটেও নয়। বন্যপ্রাণী থেকে মানবদেহে আসা রোগগুলোর দিকে আরও গভীরভাবে নজর দিতে হবে আমাদের।

এ পরীক্ষারই অংশ হিসেবে তিনি এবং তার সহযোগীরা এমন একটি প্যাটার্ন-রিকগনিশন পদ্ধতি তৈরি করেছেন, যার সাহায্যে আমরা বন্যপ্রাণী থেকে আসা যত রোগের কথা জানি তার সবগুলোর উপাত্ত অনুসন্ধান করে দেখা যাবে।

এ পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা হাজার হাজার ব্যাকটেরিয়া, প্যারাসাইট বা পরজীবী এবং ভাইরাস সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

অধ্যাপক বেলিসের পদ্ধতি দিয়ে এই অণুজীবগুলো যেসব প্রজাতির প্রাণীকে সংক্রমিত করতে পারে, তার মধ্যে লুকিয়ে থাকা সূত্রগুলো চিহ্নিত করা যাবে।

এই সূত্রগুলো দিয়ে আবার এটাও বোঝা যাবে যে কোন কোন অণুজীব মানুষের জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে।

যদি এভাবে কোনো প্যাথোজেন, অর্থাৎ রোগ সৃষ্টিকারী অণুজীব চিহ্নিত হয়, তা হলে বিজ্ঞানীরা কোনো রোগের প্রাদুর্ভাব হওয়ার আগেই তা ঠেকানোর উপায় উদ্ভাবনের গবেষণা চালাতে পারবেন।

অধ্যাপক বেলিস বলছেন, ঠিক কোন রোগ মহামারীর চেহারা নিতে পারে তার গবেষণা সম্পূর্ণ অন্য ব্যাপার, কিন্তু আমরা এই প্রথম পদক্ষেপটির ব্যাপারে অগ্রগতি ঘটাতে পেরেছি।

বিজ্ঞানীরা একমত যে, বন ধ্বংস এবং বন্যপ্রাণীর আবাসভূমিতে মানুষের ঢুকে পড়ার ফলে এখন ঘন ঘন এবং সহজেই প্রাণী থেকে মানুষে রোগ ছড়িয়ে পড়ছে।

ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক কেট জোনস বলছেন, মানুষ যেভাবে ইকোসিস্টেমকে বদলে দিয়ে কৃষির জন্য বা বৃক্ষনিধন করছে, তাতে জীববৈচিত্র্য কমে যাচ্ছে এবং মানুষের নানা সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
  12345
2728293031  
       
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ