চলতি বছর ডেঙ্গু প্রতিরোধে বাড়তি সতর্কতা জরুরি : বিএসএমএমইউ উপাচার্য

প্রকাশিত: ১১:০০ অপরাহ্ণ, জুন ৩, ২০২৩

চলতি বছর ডেঙ্গু প্রতিরোধে বাড়তি সতর্কতা জরুরি : বিএসএমএমইউ উপাচার্য

‘সাদা দাগযুক্ত এডিস মশা ডেঙ্গুর জন্য দায়ী, এই মশাকে চিনতে হবে’
চলতি বছর ডেঙ্গু প্রতিরোধে বাড়তি সতর্কতা জরুরি : বিএসএমএমইউ উপাচার্য

অনলাইন ডেস্ক

 

আজ শনিবার বিএসএমএমইউয়ের শহীদ ডা. মিলন হলে ডেঙ্গুর পরিবর্তনশীল প্যাটার্ন, উপসর্গ নিয়ে (চ্যাঞ্জিং প্যাটার্ন অফ ডেঙ্গু সিনড্রোম) নিয়ে ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগ আয়োজিত বিশেষ সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতা দেন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘চলতি বছরে ডেঙ্গু প্রতিরোধে বাড়তি সতর্কতা গ্রহণ করতে হবে। সাদা দাগযুক্ত এডিস মশা ডেঙ্গুর জন্য দায়ী। এই মশাকে চিনতে হবে।’

তিনি বলেন, দেশে জুন মাস থেকেই ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়। কিন্তু এবার মে মাসেই সর্বাধিক ডেঙ্গু রোগী সারাদেশ শনাক্ত হয়েছে। জ্বর হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। প্রথম দিনেই ডেঙ্গু পরীক্ষা এনএস ওয়ান পরীক্ষা করাতে হবে। শনাক্ত হলে এন্টিবায়োটিক সেবন থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি পর্যাপ্ত তরল জাতীয় খাবার এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করতে হবে।’
আজ শনিবার বিএসএমএমইউয়ের শহীদ ডা. মিলন হলে ডেঙ্গুর পরিবর্তনশীল প্যাটার্ন, উপসর্গ নিয়ে (চ্যাঞ্জিং প্যাটার্ন অফ ডেঙ্গু সিনড্রোম) নিয়ে ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগ আয়োজিত বিশেষ সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

উপাচার্য জানান, ডেঙ্গু প্রথমবার হলে মৃত্যু হার কম কিন্তু দ্বিতীয় ও তৃতীয়বার হলে মৃত্যুহার বেশি। সেক্ষেত্রে প্রতিরোধই উত্তম। ডেঙ্গু হলে অ্যাসপিরিন জাতীয় ও ব্যাথার ওষুধ বন্ধ রাখতে হবে। বমি, পাতলা পায়খানা, পেট ব্যাথা, শাসকষ্ট, শরীরে কোথাও রক্তপাত হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্লাটিলেট অথবা রক্ত দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। মশারি ব্যবহার, বাচ্চাদের ফুল হাতা জামা পরানো, বাড়ির আশপাশে জমে থাকা পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

উল্লেখ্য, গত বছর ২০২২ সালে প্রায় ৬২ হাজার লোক আক্রান্ত হয়েছিল, মারা গেছেন ২৮১ জন। এ বছর জুন-জুলাই আসার আগেই আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ২ হাজার কিন্তু এরই মধ্যে ১৩ জন মারা গেছেন। যারা ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন ধরনের রোগে ভুগছেন তাদের ডেঙ্গু সম্পর্কে আরো বেশি সতর্ক হতে হবে। সেমিনারে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা রোগ প্রতিরোধে এডিস মশার নিধন, ডেঙ্গুজ্বরের চিকিৎসার ক্ষেত্রে গাইডলাইন অনুসরণের পাশাপাশি রোগ ও রোগীর অবস্থাভেদে চিকিৎসার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশের ডেঙ্গু চিকিৎসার জাতীয় নীতিমালার প্রধান সম্পাদক অধ্যাপক ডা. কাজী তারিকুল ইসলাম। সেমিনার শেষে কেবিন ব্লকের সাধারণ জরুরি বিভাগে ডেঙ্গু কর্নারের উদ্বোধন করা হয়।

সেমিনারে বলা হয়, বাংলাদেশে ডেঙ্গুর প্রথম প্রাদুর্ভাব শুরু হয় ২০০০ সালে। ২০১৯ সাল পর্যন্ত ডেঙ্গুর সাধারণ উপসর্গ ছিল জ্বর, কাশি, র‌্যাশ হওয়া, মাথা ব্যাথা হওয়া। কিন্তু ২০২১ সালের পর ডেঙ্গুর উপসর্গ পরিবর্তন হয়। তখন ডেঙ্গুতে নতুন উপসর্গ পেটে ব্যথা, পাতলা পায়খানায় পরিবর্তন হয়। এটি এখনো চলমান রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন ইমিরেটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশররফ হোসেন। সেমিনারে প্যানেলিস্ট হিসেবে বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. টিটু মিয়া, অধ্যাপক ডা. এমএ জলিল চৌধুরী, বিএসএমএমইউর ইন্টারন্যাশনাল মেডিসিন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ আরাফাত, ভাইরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আফজালুন নেছা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ও ডেঙ্গু গবেষক অধ্যাপক ড. কবিরুল বাসার।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. আবুল কালাজ আজাদ বলেন, ‘ডেঙ্গু ও কোভিডে একই ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়। উভয় রোগেই জ্বর, সর্দি, কাশির লক্ষণ দেখা যায়। এজন্য জ্বর হলেই ডেঙ্গু ও কোভিড পরীক্ষা করাতে হবে।’

বিডি প্রতিদিন